হিন্দি সিনেমা দেখে নাটকীয়ভাবে ডা. সারওয়ারের বাড়িতে ডাকাতি

মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি ডা. সারওয়ার আলী হত্যাচেষ্টা মামলা নতুন মোড় পেয়েছে পিবিআই ঢাকা মেট্রোর বিশেষ টিম। ভুক্তভোগী ঘটনাটিকে জঙ্গি হামলা বলে দাবি করলেও পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) প্রাথমিকভাবে এটিকে ডাকাতির ঘটনা বলে মনে করছেন।

বুধবার (২২ জানুয়ারি) বিকেলে গাজীপুর থেকে ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী নাজমুলকে গ্রেফতার করা হয়। একই সময় শেখ রনিকেও উত্তরা থেকে গ্রেফতার করা হয়।

ঘটনার সঙ্গে সাত জন জড়িত ছিলেন। এর মধ্যে মূল পরিকল্পনাকারী নাজমুল ছিলেন ডা. সারওয়ার আলীর স্ত্রীর সাবেক গাড়িচালক। ইতোমধ্যে ৫ জনকে গ্রেফতার করা গেলেও বাকি দু’জন এখনও পলাতক। গ্রেফতার ৫ জন হলেন- নাজমুল, ফরহাদ, শেখ রনি, মনির ও ফয়সাল।

ঘটনার বর্ণনায় ডিইআইজি পিবিআই বনজ কুমার বলেন, নাজমুল হিন্দি সিনেমার পাগল। সে নিজেকে একজন প্রতিবাদী নায়ক হিসেবে মনে করতেন। তাই দারোয়ারের স্ত্রী তার সঙ্গে দুর্ব্যবহার করায় নাজমুল সেটার প্রতিবাদ স্বরূপ এ ডাকাতির পরিকল্পনা করেন।

তিনি বলেন, গত ৩ জানুয়ারি ফরহাদসহ আরেকজনকে দৈনিক ৫০০ টাকা চুক্তিতে কাজে নেন নাজমুল। পরে এ চক্রে আরও চারজন যোগ হয়ে আশকোনার একটি রেস্টুরেন্টে ডাকাতির পরিকল্পনা করেন। ঘটনার দিন বিকেলেও আশকোনার রোজ ভ্যালি হোটেলের ৩০৩ নম্বর কক্ষে সাত জন পরিকল্পনা করে এবং সন্ধ্যার পর ঘটনাস্থলে যান।

ওই দিনের ঘটনা বর্ণনা দিয়ে তিনি জানান, উত্তরার ৭ নম্বরের সেক্টরের ওই বাসার চতুর্থ তলায় সারোয়ার আলী এবং তৃতীয় তলায় তার মেয়ে থাকেন। দুর্বৃত্তদের দুজন প্রথমে তৃতীয় তলায় গিয়ে মেয়ে, মেয়ের স্বামী ও সন্তানকে জিম্মি করে। তাদের আঘাত করে সারোয়ার আলীর অবস্থান জানতে চায়। চতুর্থ তলার ফ্ল্যাটের কথা বললে একজন ওপরে যায় এবং দরজা নক করে। দরজা খোলা হলে প্রথমে সারোয়ার আলীর স্ত্রী ও পরে সারোয়ার আলীকে জিম্মি করে তারা। পরে তৃতীয় তলা থেকে আরও একজন আসে। এ সময় তারা চিৎকার করলে নাজমুল ভয় পেয়ে সঙ্গের লোক নিয়ে পালিয়ে যান।

এ সময় তাদের চিৎকার শুনে দ্বিতীয় তলায় থাকা এক ব্যক্তি এবং তার ছেলে গিয়ে তাদের বাঁচান।

নিজের এ কাজ সহজ করার জন্য নাজমুল একজন সাংবাদিক, একজন পুলিশ, ডাক্তার ও উকিল রেখেছেন। এছাড়া বাড়িতে ঢোকার আগে তারা একটি ব্যাগে করে ৭টি চাপাতি, ৫টি সুইচ গিয়ার ছুরি সঙ্গে রাখেন।

৫ জানুয়ারি রাত ১০টা ২০ মিনিটের দিকে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি ডা. সারওয়ার আলীকে হত্যার উদ্দেশ্যে দুই দুষ্কৃতকারী তার উত্তরার বাসভবনে ঢোকে। সারওয়ার আলীকে তারা আঘাত করতে না পারলেও এ ঘটনায় আহত হয়েছেন তার স্ত্রী মাখদুমা নার্গিস, তাদের মেয়ে সায়মা আলী, জামাতা হুমায়ুন কবির ও দুই প্রতিবেশী।

 

 

আপনি আরও পড়তে পারেন