শুধু নামেই ফেডারেশন, কাজে নেই

ফেডারেশনের কক্ষ থাকলেও তালা খোলা হয় না কখনো। নেই বড় কোনো পদক। স্থাপনের পর থেকে কখনো হয়নি নির্বাচন। বাংলাদেশ স্কোয়াশ র‌্যাকেটস ফেডারেশনের বর্তমান অবস্থা এটাই। আর এ সব অভিযোগের তীর সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর হামিদের নামে। খেলোয়াড়দের অনুশীলনের অর্থ আত্মসাৎসহ দুর্নীতির নানা অভিযোগ থাকায় আসন্ন বাংলাদেশ গেমস থেকে বাদ দেয়া হয়েছে ডিসিপ্লিনটিকে।

একটা চিঠি এসেছে জাহাঙ্গীর হামিদের নামে। কিন্তু প্রাপকের হাতে এ ধরনের চিঠি কখনো পৌঁছায় না। কারণ গত ৫ বছর ধরে তিনি ফেডারেশনেই আসেন না। কখনো খোলা হয় না স্কোয়াশ ফেডারেশনের তালা। একটু খোঁজ খবর নিতেই বেরিয়ে এলো থলের বিড়াল।

স্বাধীনতার পর গঠিত স্কোয়াশ র‌্যাকেটস ফেডারেশন যেন দুর্নীতির পাহাড়। ১৭ বছরেরও বেশি সময় ধরে সাধারণ সম্পাদক পদ দখল করে রাখা জাহাঙ্গীর হামিদ আনতে পারেননি কোনো বড় পদক। প্রতি বছর ১২ লাখ টাকা করে অনুশীলন খরচ বাবদ ক্রীড়া পরিষদ থেকে টাকা ওঠায় ফেডারেশন। কিন্তু অনুশীলনই যেখানে হয় না, টাকা যায় কোথায়?

স্কোয়াশ র‌্যাকেটস খেলোয়ার রাশেদুল ইসলাম বলেন, দুই বছর ফেডারেশন আমাদের সঙ্গে কোনো যোগাযোগ করেনি। শুধু বলে, টুর্নামেন্ট হবে। কিন্ত আজ পর্যন্ত আমাদের কোনো টুর্নামেন্ট হয়নি। টুর্নামেন্টের সব টাকা তারা খেয়ে পেলে। আমাদের যে টাকা দেয়ার কথা ছিলা, তা আজ পর্যন্ত আমাদের দেয়নি।

স্কোয়াশ র‌্যাকেটস খেলোয়াড় সিয়াম ইসলাম বলেন, নিজেদের দায়িত্বে আমাদের প্যাকটিস করতে হয়। এখানে কোনো কোচ নেই তাই আমাদের প্যাকটিস করতে সমস্যা হয়।

বাংলাদেশ স্কোয়াশ র‌্যাকেটস ফেডারেশনের কার্যকরী সদস্য হেদায়াত উল্লাহ তুর্কী বলেন, খেলোয়াড়, কর্মকর্তা, কোচসহ সবাই তার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন, যে তিনি সেনাবাহিনীকে ব্যবহার করেছেন তাদের বিরুদ্ধে। এটা অবশ্যই তিনি করতে পারেন না।

এতো সব অভিযোগের পরও ফেডারেশনের দুর্নীতির বিপক্ষে তদন্ত কমিটি গঠনের পাঁচ মাস পেরোলেও এখনো কোনো তদন্ত রিপোর্ট জমা দেয়নি ক্রীড়া পরিষদ। বরং যারা অভিযোগ করেছে তাদেরই উঠতে হয়েছে কাঠগড়ায়। আসন্ন বাংলাদেশ গেমস থেকে নাম কাটা গেছে ফেডারেশনের। বঞ্চিত হচ্ছে খেলোয়াড়রা। সব কিছু শুনে দ্রুতই ব্যবস্থা নেবার আশ্বাস ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রীর।

ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল বলেন, ফেডারেশ কীভাবে চলছে, এটা আপনাদের কাছ থেকে জেনেছি। অবশ্যই আমি বিষয়টি খতিয়ে দেখব। যদি এ ধরনের কোনো অন্যায় কাজে কেউ জড়িত থাকে, সে ফেডারেশরেন সাধারণ সম্পাদক হোক কিংবা বড় কোনো কর্মকর্তা হোক না কেনো। অবশ্যই তাদের বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নেব।

দেশের ভঙ্গুর ক্রীড়াঙ্গণে যদি ছোট ছোট ফেডারেশনগুলো ভালো করতো, তবে হয়তো সাফল্য আরও বড় করে ধরা দিত।

 

 

আপনি আরও পড়তে পারেন