চিঠি নেই ডাকবাক্সে

‘চিঠি দিও প্রতিদিন, চিঠি দিও।’ চিঠি নিয়ে এক সময় এমন কত গান বাজতো বেতার-টিভিতে। এখন তা শুধুই স্মৃতির পাতার অংশ। আগে যখন ডাকেরই প্রচলন হয়নি, তখন পোষা পায়রার পায়ে বেঁধে প্রিয়জনের কাছে বার্তা পাঠাতো মানুষ। এরপর এলো ডাক যুগ। প্রিয়জনের চিঠি আদান প্রদানের আশায় ডাক পিয়নের পথ চেয়ে থাকার দিন হলো শুরু। সে যুগও আর নেই। ডিজিটাল যুগে সব যোগাযোগই হয় এখন এক নিমিষে।

মোবাইল ফোন থেকে শুরু করে ই-মেইল, ইন্টারনেট, ফেসবুক, ইমো, ভাইবার, মেসেঞ্জারসহ প্রযুক্তির কত রকমের সুবিধা এখন সবার জন্য। শহরের চেয়ে খুব একটা পিছিয়ে নেই গ্রাম অঞ্চলগুলোও। গ্রামের মানুষের অনেক কাছে এখন আধুনিক সুবিধা পৌঁছে গেছে। যখন ইচ্ছে প্রিয়জনের সঙ্গে যোগাযোগের সুযোগটা তারাও উপভোগ করছে।

বার্তা আদান-প্রদানে চিঠির বদলে সবার ভরসা এখন নতুন নতুন প্রযুক্তি। এখন শহর থেকে শুরু করে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে পৌঁছে গেছে ইন্টারনেট ও ই-মেইল সেবা। তাই ডাক ঘরের মাধ্যমে মান্ধাতা যুগের চিঠি, টেলিগ্রাম সেবার প্রয়োজন ফুরিয়েছে। ডাকবাক্স এখন থাকে ফাকা। চিঠির পরিবর্তে স্থান করে নিয়েছে ময়লা-আবর্জনা।

ঠাকুরগাঁও জেলা এবং তার উপজেলার ডাকঘর গুলোর সবকটিতেই নাজুক অবস্থা। এক সময় এ ডাকঘরগুলো সব সময় মুখরিত থাকতো রানার কিংবা ডাক পিয়নের পদচারণায়। মানুষ ডাকঘরের সামনে অপেক্ষা করতো ঘণ্টার পর ঘণ্টা। আসবে তাদের প্রিয়জনের চিঠি।

পীরগঞ্জ উপজেলায় ডাকঘর রয়েছে ২০টি। অধিকাংশ ডাকঘরের পাকা ভবন, সোলার প্যানেল স্থাপন ও আসবাবপত্র নত্রন করে তৈরি করা হলেও দাফতরিক কোনো কাজকর্ম নেই বললেই চলে। প্রতিটি ডাকঘরে একজন ডাক বিলিকারী রয়েছেন। তবে তারা যে বেতন পান তা দিয়ে চলতে পারেন না। তবে জেলা ও উপজেলা ডাকঘরগুলো চালিয়ে যাচ্ছে তাদের স্বাভাবিক কার্যক্রম। এখানে কিছুটা আধুনিকতার ছোঁয়া লেগেছে।

পীরগঞ্জ উপজেলা ডাকঘরের পোস্ট মাস্টার দবিরুল ইসলাম জানান, উপজেলার ডাকঘরগুলো বেশ ভালো চলছে। কাজের পরিধিও বেড়েছে। পীরগঞ্জ উপজেলার প্রধান ডাকঘর থেকে গড়ে প্রতিদিন ভালোই চিঠিপত্র এবং অনলাইনের মাধ্যমে টাকা-পয়সা আদান-প্রদান হয়। আগে ডাকবাক্সগুলোতে ৫০ থেকে ১০০টি চিঠি পাওয়া যেতো। আর এখন ৫-১০টি চিঠি পাওয়া যায়না। আবার কোনো কোনো সময় থাকে না। কারণ এখন সবকিছুই ডিজিটাল হয়েছে।

দেশ এখন এগিয়ে যাচ্ছে। মানুষ হাতের কাছে অনেক সুযোগ সুবিধা পাচ্ছে। সরকারি ডাক বিভাগের পাশাপাশি বেসরকারি কুরিয়ার সার্ভিসে চিঠিপত্র ও টাকা-পয়সা আদান-প্রদান জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে।

আপনি আরও পড়তে পারেন