মৃত্যু ভয়ে’ অতিথি পাখি কমছে ডিঙ্গাপোতা হাওরে

শীত আসলেই প্রতি বছর নেত্রকোনার ডিঙ্গাপোতা হাওর, হাজার হাজার পরিযায়ী পাখির আগমনে মুখর হয়ে উঠে। তবে নির্বিচারে অতিথি পাখি শিকার করায় গত কয়েক বছর ধরে পাখির আনাগোনা কিছুটা কমে গেছে। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় পাখি শিকার বন্ধের দাবি জানিয়েছেন, পরিবেশবিদ ও স্থানীয়রা। আর বন বিভাগ, শুধু ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়ে দায়িত্ব পালন করছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, নেত্রকোনা জেলার হাওরাঞ্চলের অন্যতম উপজেলা মোহনগঞ্জ। এখানকার বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে ডিঙ্গাপোতা হাওর। প্রতিবছর শীত আসলেই ঝাঁকে ঝাঁকে এ হাওরে অবাধে বিচরণ করে অতিথি পাখি। হাওরের প্রকৃতির সঙ্গে যেনো তাদের মিতালী। দিনভর উড়াউড়ি শেষে সন্ধ্যায় আশ্রয় নেয় হাওরের মধ্যবর্তী গ্রাম মল্লিকপুরে।

তবে দিনের পর দিন গ্রামের কিছু অসৎ মানুষের সহায়তায় এসব পাখি নির্বাচারে গুলি করে এবং ফাঁদ পেতে মেরে ফেলছেন শিকারীরা।
অবাধে শিকার ও মানুষের অত্যাচারে দু’বছর ধরে এ গ্রামটিতে কমে গেছে পরিযায়ী পাখির আগমন। এ অবস্থায় কঠোর আইন প্রয়োগের পাশাপাশি এলাকাটিকে পাখির অভয়ারণ্য ঘোষণার দাবি জানিয়েছেন পরিবেশবিদ ও স্থানীয়রা।

মুক্তিযোদ্ধা খন্দকার আনিসুর রহমান জানান, শুধুমাত্র শীতে নয়, এইখানে বর্ষাকালেও পানকৌড়ি আসে ঝাঁকে ঝাঁকে। কিন্তু শিকারীরা সেই পাখিদেরকে রাতের অন্ধকারে নির্বিচারে মেরে ফেলে। যে কারণে যেগুলো এখনো আসে সেগুলো এই গ্রামের উপর দিয়ে উড়ে চলে যায়। আমাদের পরিবেশ রক্ষার্থেই এসকল পাখিকে বাঁচতে দিতে হবে।

সম্প্রতি নেত্রকোনার পুলিশ সুপার আকবর আলী মুনসীকে বিষয়টি অবহিত করলে তিনি পুলিশ পাঠিয়েছিলেন। মোহনগঞ্জ থানার পুলিশ ইয়ারগানসহ দুজনকে আটক করে নিয়েও আসেন। কিন্তু তাদের বিরুদ্ধে কোন আইনি ব্যবস্থা না নেয়ায় পাখি শিকারিদের হাত থেকে পাখি নিধন বন্ধ করা যাচ্ছে না।

প্রকৃতি বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি তানভীর জাহান চৌধুরী বলেন, আমরা মাসব্যাপী পাখি নিধন বন্ধে নানা কর্মসূচি পালন করে আসছি।
তারই ধারাবাহিকতায় মল্লিকপুর গ্রামে ইতিমধ্যেই সচেতনতা র‍্যালি ও আলোচনা করেছি।

নেত্রকোনার আটপাড়া বারসিকের সমন্বয়কারী মো. অহিদুর রহমান বলেন, ইকোসিস্টেম রক্ষায় পাখির বিচরণ অত্যন্ত জরুরি। আর এই সব পাখিগুলোর রক্ষার্থে প্রয়োজনে আন্দোলনের হুঁশিয়ারি প্রদান করেন তিনি।

পরিবেশবিদ মো. অহিদুর রহমান আরো জানান, জেলার ১০ উপজেলার ছোট বড় প্রায় ৮১ টি হাওরের মধ্যে ৮ হাজার ৩শ’ ১০ হেক্টর আয়তনের ডিঙ্গাপোতা হাওর। এই হাওরের ৯৫টি বিলে প্রতি বছর শীত মৌসুমে বিভিন্ন প্রজাতির ৬০ থেকে ৭০ হাজার পরিযায়ী পাখির আগমন ঘটে।

তবে অতিথি পাখি রক্ষায় বিভিন্ন পদক্ষেপের আশ্বাস দিলেন ময়মনসিংহ অঞ্চলের ভারপ্রাপ্ত বন কর্মকর্তা মো. দীন ইসলাম।

 

 

 

 

আপনি আরও পড়তে পারেন