করোনা: চীনের পর বেসামাল দ. কোরিয়া

দক্ষিণ কোরিয়ায় প্রকট আকার ধারণ করেছে নভেল করোনাভাইরাস আতঙ্ক। শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) নতুন করে ২২৯ জনের শরীরে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি নিশ্চিত করে দেশটির স্বাস্থ্য বিভাগ।

স্বাস্থ্য বিভাগের মন্ত্রী কিম গ্যাং-লিপ বলেন, পরিস্থিতি ‘গুরুতর পর্যায়ে মোড় নিয়েছে’।চীনে যেমন উহান শহরকে করোনাভাইরাসের উৎপত্তিস্থল হিসাবে দেখা হচ্ছে, দক্ষিণ কোরিয়ার ক্ষেত্রেও তেমনি দক্ষিণাঞ্চলীয় পাশাপাশি দু’টো শহরকে- দেগু এবং চোংডো ভাইরাস ছড়ানোর সূত্র হিসাবে দেখা হচ্ছে এবং সন্দেহের তীর গিয়ে পড়েছে ঐ অঞ্চলের শিনচিওঞ্জি নামে ক্ষুদ্র একটি খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের দিকে।

বলা হচ্ছে, দেগু এবং চোংডোতে এই ধর্মীয় গোষ্ঠীর কয়েকশ’ সদস্য ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার উপসর্গের কথা জানানোর পরই তাদের অনেকের শরীরেই প্রথম করোনাভাইরাস পাওয়া যায়।

তারপর থেকে নতুন করে ভাইরাস আক্রান্তের যেসব রোগী মিলছে তাদের সিংহভাগই চোংডো শহরের দেনাম নামের একটি হাসপাতালে। এই একটি হাসপাতালেই এখন পর্যন্ত ১১৪ জনের শরীরে করোনাভাইরাস পাওয়া গেছে।

একইসাথে দক্ষিণ কোরিয়ার কোরিয়ার কর্মকর্তারা বলছেন, আক্রান্তদের অধিকাংশই শিনচিওঞ্জি ধর্মীয় সম্প্রদায়ের অনুসারী।

নয় হাজার শিনচিওঞ্জি ঘরের ভেতর

শনিবার পর্যন্ত নিশ্চিতভাবে যে ৪৩৩ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন, তাদের ২৩১ জন অর্থাৎ অর্ধেকেরও বেশি রোগী শিনচিওঞ্জি সম্প্রদায়ের সদস্য। শুক্রবার সরকার শিনচিওঞ্জি ধর্মীয় গোষ্ঠীর নয় হাজারেরও বেশি সদস্যকে পারবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত ঘরের মধ্যে থাকার নির্দেশ দিয়েছে।

তাদের প্রত্যেককে জিজ্ঞাসাবাদ করে বোঝার চেষ্টা করা হচ্ছে কীভাবে, কার সূত্রে তাদের এই সম্প্রদায়ের এতজন সদস্য করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হলেন।

তবে জানা গেছে, চোংডোতে দিন পনের আগে শিনচিওঞ্জি সম্প্রদায়ের প্রতিষ্ঠাতার ভাইয়ের মৃত্যুর শেষকৃত্যে কয়েক হাজার মানুষ অংশ নেন। তারপরই ঐ সম্প্রদায়ের ৫শ’রও বেশি অনুসারী ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার নানা উপসর্গের কথা জানায়।

দেগু এবং চোংডো এবং আশপাশের এলাকাগুলোতে বিশেষ ব্যবস্থা জারি করা হয়েছে।

কর্তৃপক্ষ এই দুই শহরের লোকজনকে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে না বের হওয়ার পরামর্শ দিয়েছে।

দেগু দক্ষিণ কোরিয়ার চতুর্থ বৃহত্তম শহর। ২৫ লাখ জনসংখ্যার এই শহরে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। গত দু’দিন ধরে রাস্তায় মানুষজন বলতে গেলে চোখেই পড়ছে না।

দেগুর একজন বাসিন্দা বলেন, তার ভয় হচ্ছে যে দেগুর পরিণতি যেন চীনের উহান শহরের মতো না হয়।

ওদিকে, শুক্রবার আরও একজন সৈন্য করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর দক্ষিণ কোরিয়ার সরকার সৈন্যদের সেনা ছাউনির বাইরে আসা আপাতত নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

এখন পর্যন্ত দক্ষিণ কোরিয়ায় দু’জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করা হলেও, মৃতের সংখ্যার বাড়বে বলে আশঙ্কা প্রবল।

আপনি আরও পড়তে পারেন