‘আর নয় অন্যায়’ কর্মসূচি বাংলায় চালু করলো বিজেপি

মমতা ব্যানার্জির সঙ্গে রাজনৈতিক লড়াইয়ে নামতে হলে যে দুয়ারে দুয়ারে জনসংযোগে জোর দিতে হবে, তা দেরিতে হলেও বুঝেছে বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্ব। আর তাই একুশের বিধানসভা লড়াইয়ের সুর বেঁধে দিতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে এনে ‘দিদিকে বলো’র পাল্টা কর্মসূচির পথে হাঁটতে হল বঙ্গ বিজেপির নেতাদের। শহিদ মিনারে নাগরিক আইন সংশোধনীর সমর্থনে অমিত শাহর সভা থেকে ‘দিদিকে বলো’র ধাঁচেই চালু হল জনসংযোগ কর্মসূচি – ‘আর নয় অন্যায়।’

রোববার (১মার্চ) দুপুর দুটো নাগাদ শহিদ মিনারে অমিত শাহর সভা শুরু হওয়ার কথা ছিল। শুরু হল প্রায় আধঘণ্টা দেরিতে। বক্তব্য রাখতে উঠে প্রথম থেকেই মমতা-বিরোধী সুর অমিত শাহের। তিনি বলেন, “সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে দ্বিতীয়বার ফিরে এসেছে মোদি সরকার, তাতে বাংলার মানুষজনের সমর্থন ছিল। এবার দেখুন, একুশের বিধানসভাতেও সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে বাংলার ক্ষমতা দখল করবে বিজেপি। আগে মমতাদিদি বলতেন যে ভোটে দাঁড়ালে জামানত বাজেয়াপ্ত হবে বিজেপি কর্মীদের, এখন তো ১৮ জন সাংসদ বাংলা থেকেই নির্বাচিত হয়ে গেছেন। একুশেও এর প্রভাব পড়বে।”

 

বিধানসভার লড়াই নিয়ে রাজ্যের শাসকদলকে কার্যত চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে তিনি বললেন, “আমাদের জয়রথ এভাবে আটকানো যাবে না। দুই তৃতীয়াংশ আসন আমরা পাবই।” আত্মবিশ্বাসের সুরে বললেন, সুযোগ পেলে মমতার বাংলাকে ৫ বছরে ফের ‘সোনার বাংলা’য় পরিণত করবেন। এ প্রসঙ্গে তাঁর আরও বার্তা, তৃণমূল স্তরে লড়াই করে উঠে আসা নেতাদের কেউই বাংলার মুখ্যমন্ত্রী হবেন।

যে লক্ষ্য সামনে রেখে অমিত শাহর আজকের সভা, সেই সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন নিয়ে তাঁর আশ্বাস, “এই সভা ভারতীয়দের নাগরিকত্ব প্রদানের জন্য। তা কেড়ে নেওয়ার জন্য নয়। পাকিস্তান, আফগানিস্তান, বাংলাদেশের শরণার্থীদের মোদিজি নাগরিকত্ব দিতে চান। মতুয়া, নমঃশূদ্রদের দেশের নাগরিকের অধিকার দিতে হবে। কিন্তু এসবের বিরোধিতা হচ্ছে। কোন স্বার্থে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এর বিরোধিতা করছেন?” পাশাপাশি রাজ্যে বিজেপি কর্মীদের উপর হিংসা চলছে বলে অভিযোগে সরব হন অমিত শাহ। অভিযোগ করেন, ইতিমধ্যে এরাজ্যে ৪০ জন বিজেপি কর্মী খুন হয়েছেন।

তবে এই সভা নিয়ে বঙ্গ বিজেপির যতটা প্রত্যাশা ছিল, শহিদ মিনারের সভা ততটা জমল না বলেই মত ওয়াকিবহাল মহলের একাংশের। ভিড়ের দিক থেকে কিংবা জনতার আবেগের বহিঃপ্রকাশের দিক থেকে, খুব উচ্চস্বর শোনা গেল না। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নিজে রাম মন্দিরের কথা তুলে জনতার আবেগ মেপে নিতে চাইলেন। নীরব থেকেই তথাকথিত মেরুকরণে রাজনৈতিক চাল চাললেন। কিন্তু সেসব কতটা দাগ কাটল, তা বোঝা যাবে একুশের ভোটবাক্সেই।-সংবাদ প্রতিদিন।

আপনি আরও পড়তে পারেন