স্বর্ণের লোভ দেখিয়ে ছাত্রীকে বিয়ের প্রস্তাব দিয়ে বিপাকে শিক্ষক

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগরের চম্পকনগর মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী (আইসিটি) শিক্ষক আশিকুর রহমান ভূঁইয়ার (৪০) বিরুদ্ধে একই বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার্থী এক ছাত্রীকে অর্থ ও স্বর্ণের লোভ দেখিয়ে প্রেম এবং বিয়ের প্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্ত শিক্ষক চম্পকনগরের ফতেহপুর গ্রামের মৃত মিজানুর রহমান ভূঁইয়ার ছেলে। চাঞ্চল্যকর এ ঘটনায় সর্বত্রই বইছে নিন্দার ঝড়। শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভবাবক মহলে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

আশিকুর রহমান ভূঁইয়ার দুই সন্তান থাকা সত্বেও শিক্ষার্থীর সঙ্গে এমন অসদাচরণ ও অনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের অপচেষ্টার ঘটনায় তার স্ত্রী শামীমা বিনতে সুলতান (শরমিন) স্বামীর বিচার চেয়েছেন। তিনি বিজয়নগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মেহের নিগার ও বিজয়নগর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মিলন কৃষ্ণ হালদার এবং চম্পকনগর মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) মো. মোস্তফা কামাল উদ্দিন চৌধুরীর কাছে স্বামীর বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ২৩ ফেব্রুয়ারি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।

 

এ ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষক আশিকুর রহমানের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্তে ২৬ ফেব্রুয়ারি থেকে বিদ্যালয়ে পাঠদান বিরত রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এদিকে বিষয়টি এলাকাবাসীর মধ্যে জানাজানি হলে উত্তেজনা শুরু হয়। তার এহেন হীনচরিতার্থের ঘটনায় ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী।

অবশ্য এ ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষক আশিকুর রহমান ভূঁইয়া তার অপকর্মের দায় স্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, ‘আমি মানুষ, আমার ভুল হয়েছে। তবে এখন আমি ষড়যন্ত্রের শিকার’।

শামীমা বিনতে সুলতান (শরমিন) স্বামীর বিরুদ্ধে অভিযোগ করে বলেন, সম্প্রতি সে আমাকে শারীরিক ও মানসীকভাবে নির্যাতন করে আসছে। আমার ৪ বছরের একটি ছেলে ও ১২ বছর বয়সের একটি মেয়ে সন্তান থাকা সত্বেও তার বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীর সঙ্গে এমন হীন মানসিকতা ও অসদাচরণের শাস্তি দাবি করছি।

ভুক্তভোগী ছাত্রীর বাবা বলেন, ৯ ফেব্রুয়ারি সকালে চম্পকনগর মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী (আইসিটি) শিক্ষক আশিকুর রহমান ভূঁইয়া তার বাড়িতে যান। এসময় সে তার মেয়েকে প্রেম ও বিয়ের প্রস্তাব দিয়ে নগদ দুই লাখ টাকা, স্বর্ণালংকার এবং ওই শিক্ষকের লেখা একাধিক আবেগঘন চিঠি ও ব্যাংক একাউন্টের ফরমসহ কাপড়ে মোড়ানো একটি বান্ডেল আমার মেয়ের হাতে জোর করে তুলে দিয়ে চলে যায়।

পরে বিষয়টি পরিবারকে জানায় ওই ছাত্রী। তার বাবা বিষয়টি শুনে ক্ষুদ্ধ হন। তিনি অভিযুক্ত শিক্ষকের বিচার দাবিতে লিখিত অভিযোগ দেন।

ওই ছাত্রীর বাবা বলেন, তার এমন আচরণে একজন মেধাবী ছাত্রীর মানসিক অবস্থা বিপন্ন হওয়ায় তার মেয়ের এসএসসি পরীক্ষার চরম ক্ষতি হয়েছে এবং পড়াশোনার মনোযোগে অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে। তার এ ধরণের লম্পট কর্মকান্ডের বিষয়টি কোনো ভাবেই মেনে নিতে পারছি না।

তিনি বলেন, শিক্ষার্থী ও শিক্ষাঙ্গনের পরিবেশ বিনষ্টকারী কুরুচি আর বিকৃত মস্তিষ্কের মানুষ আশিক। শিক্ষক হিসাবে মানুষ গড়ার কারিগড়ের কোন যোগ্যতা তার নেই।

ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন বিজয়নগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মেহের নিগার। তিনি বলেন, এ ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষক আশিকুর রহমানের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্বান্তে ২৬ ফেব্রুয়ারি থেকে বিদ্যালয়ে পাঠদান বিরত রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

আপনি আরও পড়তে পারেন