অধিনায়ক মাশরাফির বিদায়ী ম্যাচ শুক্রবার

সময়টা আর আগের মতো নেই মাশরাফি বিন মুর্তজার। স্রোতের প্রতিকুলেই যেন নাও ভাসিয়েছেন। ক’দিন আগে বিসিবির কেন্দ্রীয় চুক্তি থেকে স্বেচ্ছায় সরে গেছেন মাশরাফি। এবার ওয়ানডে অধিনায়ক হিসেবে শুক্রবার (৬ মার্চ) শেষ ম্যাচ খেলবেন ম্যাশ। সিলেটে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজের শেষ ওয়ানডেটিই হতে যাচ্ছে অধিনায়ক হিসেবে তার শেষ ম্যাচ।

জিম্বাবুয়ে বিপক্ষে সিরিজের শেষ ম্যাচে মাঠে নামার আগে বৃহস্পতিবার (৫ মার্চ) দুপুরে মাশরাফী একথা জানান।

তিনি বলেন, সবাইকে ধন্যবাদ জানাই। বিসিবি ও টিম ম্যানেজমেন্টকে ধন্যবাদ জানাই। হাথুরুসিংহে, খালেদ মাহমুদ সুজন, রোডস ও ডমিঙ্গোকে ধন্যবাদ। সবার সহযোগিতা ছাড়া কোনো কিছুই সম্ভব হতো না।

সাধারণ খেলোয়াড় হিসেবে পরবর্তী অধিনায়ককে সাহায্য করবেন বলেও জানান ম্যাশ।

সাতবার পায়ে অপারেশানের জন্য ক্রিকেট ক্যারিয়ার থেকে অনেকগুলো বছর হারিয়ে গেছে মাশরাফির। তবে এতোকিছুর পরেও তিনি এখন পর্যন্ত ৩৬টি টেস্ট, ২১৯টি ওয়ানডে এবং ৫৪টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছেন। ক্যারিয়ারে এতো উত্থান-পতনের পরেও ইনজুরি যেন বোলিংয়ে কোনো প্রভাবই ফেলতে পারেনি এই পেস অলরাউন্ডারকে। এখন পর্যন্ত ৩৬ টেস্টে মাশরাফি পেয়েছেন ৭৮টি উইকেট।

ওয়ানডেতে এক ম্যাচে মাত্র ২৬ রান দিয়ে পেয়েছেন ৬টি উইকেট যা তার ওয়ানডে ক্যারিয়ারের সেরা বোলিং ফিগার। অন্যদিকে টি-টোয়েন্টিতে পাঁচ উইকেটের দেখা না পেলেও ১৯ রান দিয়ে পেয়েছেন সর্বোচ্চ ৪ উইকেট।

বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসে সবথেকে সফলতম অধিনায়কের মুকুটটি এখন পর্যন্ত মাশরাফির মাথাতেই শোভা পাচ্ছে। টেস্টে মাত্র একটি ম্যাচে অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেছেন। সেই ম্যাচটিও জিতেছে বাংলাদেশ। তবে অধিনায়ক হিসেবে তিনি কতোটা দক্ষ তা ওয়ানডে পরিসংখ্যান না দেখলে যেন সবকিছু ঘোলাটেই থেকে যাবে। ৮৫টি ওয়ানডের ৪৭টিতেই জয় ধরা দিয়েছে টাইগার ক্যাপ্টেনের হাতে। অন্যদিকে ২৮ টি-টোয়েন্টি ম্যাচে ১৭টিতে পরাজয়ের মুখ দেখতে হয়েছে তাকে।

ক্রিকেট মাঠে বিচরণের পাশাপাশি মাশরাফির নামের পাশে যুক্ত হয়েছে মেম্বার অব পার্লামেন্ট পদবী। যেই ঘাস মাড়িয়ে মাশরাফি বড় হয়েছেন, যেই মাটিতে কেটেছে তার শৈশব; আজ সেই মাটিতে সোনা ফলানোর দায়িত্ব তার। নড়াইল-২ আসনের সংসাদ এখন নড়াইলের গর্ব। মাঠের ২২ গজের মতো রাজনৈতিক মঞ্চেও চলছে তার দাপট। নড়াইলে চোখ মেললেই দেখা যায় মাশরাফিকে নিয়ে গণমানুষের উল্লাস, উদ্দীপনা আর আনন্দ।

বাংলাদেশের ক্রিকেটকে অনন্য এক উচ্চতায় পৌঁছে দেওয়ার পেছনের কারিগর যেন এই মাশরাফি। তাই তো পেয়েছেন কোটি কোটি মানুষের ভালোবাসাও। শতবছর বেঁচে থাকুক মাশরাফি। হাজারো তরুণ ক্রিকেটারের অনুপ্রেরণা হয়ে। হাজারো ক্রিকেট ভক্তের ভালোবাসা নিয়ে।

আপনি আরও পড়তে পারেন