সামাদ জীবিত হলেও ভোটার তালিকায় মৃত!

নাটোর জেলার বাগাতিপাড়া উপজেলার বাসিন্দা আব্দুস সামাদ। পেশায় সাধারণ একজন কৃষক। সদা হাস্যোজ্জল, নিজের কৃষি জমিতে, সংসারে কাজকর্মে সুস্থ স্বাভাবিক মানুষ। তিনি বাস্তবে জীবিত হলেও ভোটার তালিকায় মৃত! যদিও ন্যাশনাল আইডি কার্ডে তিনি জীবিতই রয়েছেন।

তবে ভোটার তালিকায় মৃত নাম সংশোধনের জন্য ৫ বছর ধরে বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত আবেদনের পাশাপাশি মৌখিক অনুরোধ আর জনপ্রতিনিধিদের জানানোর পরেও সরকারি খাতায় তিনি জীবিত হতে পারেননি!

দেশের নাগরিক হয়েও ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেননি গেল দুটি নির্বাচনে। উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা শর্ট টাইমে সংশোধনের আশ্বাস দিলেও আব্দুস সামাদ জানেন না শর্ট টাইম মানে কত বছর? শুক্রবার বিকেলে শত শত মানুষ স্মার্ট কার্ড পেলেও দীর্ঘক্ষণ লাইনে অপেক্ষা করে ফিরে যেতে হলো তাকে। এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন আবদুস সামাদ।

বাগাতিপাড়া পৌরসভার লক্ষণহাটী গ্রামের বাসিন্দা কৃষক আব্দুস সামাদ জানান, ২০০৮ সালে তিনি জাতীয় পরিচয়পত্র পান। গত উপজেলা নির্বাচনের আগের নির্বাচনে উপজেলা পরিষদে ভোট দিতে গিয়ে তিনি জানতে পারেন, সরকারি তালিকায় তাকে মৃত দেখানো হয়েছে। এ কারণে ভোট দিতে পারেননি তিনি। পরে উপজেলা প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হলেও সরকারি ওই তালিকায় তিনি নিজেকে জীবিত হিসেবে নাম তোলাতে পারেননি।

এ ব্যাপারে স্থানীয় কাউন্সিলর, উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা এবং উপজেলা চেয়ারম্যানদের দ্বারে দ্বারে ঘুরেছেন তিনি। সর্বশেষ উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয় আবেদন করেছেন। এ সময় তাকে বলা হয়েছে শর্ট টাইমেই তিনি সংশোধিত তালিকায় নাম দেখতে পারবেন। কিন্তু তা কত বছরে হবে, তিনি বুঝতে পারছেন না।

গত শুক্রবার বিতরণ হওয়া স্মার্ট কার্ড আনতে গিয়ে একই রকম ভোগান্তিতে পড়েন তিনি। আব্দুস সামাদের বড় ছেলে ও বাগাতিপাড়া প্রেস ক্লাবের প্রচার সম্পাদক ফজলুর রহমান দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, গেল দুই নির্বাচনে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেননি আমার বাবা।

সম্প্রতি বিতরণ করা স্মার্ট কার্ড থেকেও হয়েছেন বঞ্চিত। সরকারি খাতায় মৃত হিসাবে নাম থাকায় নানা অসুবিধা এবং অস্বস্তির দাবি করে তিনি এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্টদের দ্রুত পদক্ষেপ ও সুদৃষ্টি কামনা করেন।

বিষয়টি সম্পর্কে যোগাযোগ করা হলে বাগাতিপাড়া পৌরসভার প্যানেল মেয়র ইউসুফ বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, আব্দুস সামাদ তার ওয়ার্ডের ভোটার। প্রায় এক বছর আগে বিষয়টি জানার পর অনেকবার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু আজও আব্দুস সামাদের বিষয়টি সমাধান না হওয়ায় দুঃখ প্রকাশ করেন তিনি।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম জানান, প্রায় তিন মাস আগে আব্দুস সামাদ এর লিখিত আবেদন পাওয়ার পর তিনি ঢাকায় পাঠিয়েছেন।

ঢাকা থেকে সংশোধন আসলে তিনি সামাদকে নিশ্চিত করতে পারবেন বলেও জানান উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ।

আপনি আরও পড়তে পারেন