নবাবগঞ্জে অবাধে চলে পাখি শিকার

বিপ্লব ঘোষ, ঢাকা জেলা প্রতিনিধি.
ঢাকার নবাবগঞ্জে অবাধে শিকার হচ্ছে পাখি। দেশের প্রচলিত বন্যপ্রাণী আইন না মেনে চলছে এসব পাখি শিকার। পাখি নিধনে বাঁধা দেয়ায় সাংবাদিকদের উপর চড়াও শিকারীরা।
স্থানীয়রা জানান, “নবাবগঞ্জের কৈলাইলের ভাঙাভিটায় বিস্তীর্ণ কৃষিজমি ও বড় বড় জলাশয়ে মাছসহ বিভিন্ন খাবার খেতে আসেন পাখিরা। এর মধ্যে অতিথি পাখিও রয়েছে। এসব পাখি দেখতেও বেশ সুন্দর। দীর্ঘদিন ধরেই এখানকার পাখি শিকার হচ্ছে। কেরানীগঞ্জসহ আশপাশের উপজেলা থেকে নদী পথে ট্রলার যোগে এখানে আসেন শিকারীরা। তারা বন্দুক দিয়ে গুলি করে পাখি আহত করে জবাই করেন। পরে এসব পাখি বিক্রি অথবা রান্না করে খান শিকারীরা। শিকারীদের অন্যতম সহযোগী হচ্ছেন কৈলাইল এলাকার মিলনের ছেলে ওয়াদুদ।”
এমন সংবাদ পেয়ে শুক্রবার ঐ এলাকায় যান স্থানীয় কয়েকজন সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মী। দুপুরে ভাঙাভিটা এলাকায় বহিরাগতদের সাথে কয়েকটি পাখি হাতে ওয়াদুদকে দেখা যায়। এসময় বহিরাগতরা ইছামতী নদীতে একটি ইঞ্জিন চালিত ট্রলারে অবস্থান করছিল। বহিরাগতদের পাখি শিকারের জন্য এ এলাকায় নিয়ে আসেন ওয়াদুদ। ঐসময় ওয়াদুদের হাতে ছিল ছাতা এবং পড়নে ছিল লুঙ্গি ও শার্ট।
আইন না মেনে কেন পাখি হত্যা করছেন জিজ্ঞেস করা হলে ট্রলারে থাকা বহিরাগতরা বলেন, আমরা অন্য এলাকা থেকে এসেছি। এখানে আর আসবো না। এখনই চলে যাব।
তবে তাদের অন্যতম সহযোগী মূলহোতা ওয়াদুদ সাংবাদিকদের সাথে খারাপ আচরণ করে বলেন, ‘এখানে সাংবাদিকদের কি কাজ। বৈধ বন্দুক দিয়ে পাখি মারলে সমস্যা কি। নিউজ করলে কি হবে। প্রশাসনই বা আমাকে কি করবে। যা পারেন করেন আপনারা।
এসব সাংবাদিকদের মারধর করতে আসেন এবং অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। তাৎক্ষণিক স্থানীয় লোকজন এগিয়ে এলে ওয়াদুদ দৌড়ে পালায়।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন ঢাকা জেলা দক্ষিণের সহ-সভাপতি আমিনুর রহমান রশিদ এবিষয়ে বলেন, বন্যপ্রাণী আইনে পাখি নিধন অপরাধ। স্থানীয় প্রশাসনের নিকট দাবি ওয়াদুদকে আইনের আওতায় আনা হোক।
উল্লেখ্য যে, বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা-২০১২ সালের ৩০নং আইনে রয়েছে কোন এলাকা যেখানে বন্যপ্রাণী ধরা, মারা, গুলি ছোড়া বা ফাঁদ পাতা নিষিদ্ধ এবং মুখ্যত বন্যপ্রাণীর নিরাপদ বংশ বিস্তারের লক্ষ্যে সকল প্রাকৃতিক সম্পদ যেমন-উদ্ভিদ, মাটি ও পানি সংরক্ষণের নিমিত্তে ব্যবস্থাপনা করা হয় এবং যাহা এই আইনের ধারা ১৩ অনুসারে সরকারি প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে ঘোষিত।
এবিষয়ে নবাবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এইচ এম সালাউদ্দীন মনজু বলেন, বন্যপ্রাণী আইনে গুলি করে পাখি মারা অপরাধ। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখে তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আপনি আরও পড়তে পারেন