ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়ের সেই ছাত্রী বহিষ্কার

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যার বিচার নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করায় কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের এম.এ. শ্রেণীর এক ছাত্রীকে সাময়িক বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। একই সাথে কেন স্থায়ী বহিষ্কার করা হবে না জানতে চেয়ে ৭ দিনের সময় দিয়ে ৩ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (৭ এপ্রিল) সন্ধ্যায় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্টার (ভারপ্রাপ্ত) এস. এম. আব্দুল লতিফ স্বাক্ষরিত অফিস আদেশে এই তথ্য নিশ্চিত করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

বহিষ্কার হওয়া ওই শিক্ষার্থীর নাম তানজিলা সুলতানা ছন্দ। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৮-২০১৯ শিক্ষাবর্ষের এম. এ. বাংলা বিভাগে অধ্যয়নরত। যশোর সদর উপজেলার নতুন উপশহর এলাকার মহসিন আলী সর্দারের মেয়ে তিনি।

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রোক্টর পরেশ চন্দ্র বর্মণ জানান, সাজ্জাদ হোসেন সাজু নামের একটি ফেসবুক আইডিতে দেওয়া স্ট্যাটাস ‘কেউ পারিনি যা, পেরেছে করেনা। করেনা ভয়ে ভারত থেকে পালিয়ে এসে ঢাকায় গ্রেফতার বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনী মাজেদ # স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী’ এই স্ট্যাটাসে তানজিলা সুলতানা ছন্দ তার নিজের ব্যবহৃত ফেসবুক আইডি ‘কোলম ছন্দ’ দিয়ে ওই স্ট্যাটাসে জাতির পিতাকে নিয়ে অবমাননাকর ও মর্যাদাহানিকর একটি মন্তব্য করেন।

পোস্টের কমেন্টে তিনি লেখেন, শেখ মুজিব যদি খুন না হত তাহলে কী সে এখনো পর্যন্ত বেঁচে থাকতো? মুজিবুর রহমান অনেক বয়স পরই মারা গেছেন। কিন্তু আমরা আদিখ্যেতা জাতি একজনের খুনের বিচার করতে করতে ভুলেই যাই প্রতিদিন কতশত মানুষ আমাদের আশপাশে খুন হচ্ছে, গুম হচ্ছে। আমরা পুরাতন কাসুন্দি নিয়ে খুব বেশি ঘাটাঘাটি করতে পছন্দ করি।

এমন মন্তব্যের পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছাত্রলীগের সাবেক ও বর্তমান নেতাকর্মীরা ওই ছাত্রীকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কারের দাবি জানান।

তার ওই মন্তব্য মূহুর্তে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ সাধারণ মানুষের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি করে। পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মো. হারুন-উর-রশিদ আসকারী তাৎক্ষনিক ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ প্রদান করেন।

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মো. হারুন-উর-রশিদ আসকারী জানান, ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক। বিষয়টি আমি শোনার সাথে সাথে ওই শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হয়েছে। পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকলেও প্রোক্টরকে প্রধান করে তিন সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটিকে আগামী ৭ দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন হাতে পেলে তাকে স্থায়ী বহিষ্কারসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

আপনি আরও পড়তে পারেন