করোনায় ত্রাণ সহায়তা দিতে বগুড়ায় ভূয়া কর্ণেল সেজে প্রতারণা

 

আবু বকর সিদ্দিক, শেরপুর(বগুড়া)প্রতিনিধি
করোনা ভাইরাসের প্রভাবে দেশে লকডাউন পরিস্থিতি চলছে। মানুষগুলো ঘরের ভেতরে প্রবেশ করেছে। কর্মহীন হয়ে পড়েছে মানুষ। গরীব ও নিম্ন আয়ের মানুষগুলোর মাঝে এখন ত্রাণের জন্য মানবিক আবেদন। সরকারিভাবে কর্মহীন মানুষগুলোর জন্য অপ্রতুল ত্রাণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। আর সেই সুযোগে কিছু প্রতারক চক্র ত্রাণ নিয়ে নানাভাবে প্রতারণা করে আসছে। এরপ্রেক্ষিতে কর্মহীন ও হতদরিদ্র মানুষের মাঝে সেনাবাহিনীর নাম ভাংগিয়ে ত্রাণ বিতরণ করতে ভূয়া কর্ণেল সেজে প্রতারণা করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। প্রতারিত হয়ে প্রায় ১৪ হাজার টাকা খুইয়েছেন বগুড়ার শেরপুরের ৪ ইউপি চেয়ারম্যান। পরবর্তীতে থানায় মামলা হলে ৯ এপ্রিল বৃহস্পতিবার ভোর রাতে রংপুরের বুড়ীতলা এলাকা থেকে বাবুল খান(৫৮) নামের ভূয়া কর্ণেল(প্রতারক)কে সংশ্লিষ্ট র‌্যাবের সহযোগীতায় গ্রেফতার করছে শেরপুর থানা পুলিশ।
গ্রেফতার ব্যাক্তি ভূয়া কর্ণেল প্রতারক বাবুল খান রংপুরের পিরগাছা উপজেলার পশ্চিম দেবু(আরাজীডেবু) গ্রামের মৃত আব্দুস সাত্তার খানে ছেলে। সে রংপুর মেট্টোপলিটন এলাকার পরশুরাম থানাধীন কোবারু কলেজপাড়া(বুড়িরহাট) গ্রামের জনৈক হাসানুর রহমানের ভাড়া বাড়ীতে বসবাস করে আসছিল এবং প্রতারক বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড এর একজন চাকুরীচ্যুত সদস্য বলে জানা গেছে। এ সময় প্রতারকের কাছ থেকে দুইটি মোবাইল ফোন, চারটি সিম কার্ড উদ্ধার করা হয়েছে বলে গত ৯ এপ্রিল বৃহস্পতিবার বেলা ১টার দিকে থানা পুলিশের দেয়া এক প্রেস ব্রিফিং সুত্রে জানা গেছে।
জানা যায়, শেরপুর উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের করোনা পরিস্থিতিতে কর্মহীন মানুষের জন্য বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে সরকারি ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করা হবে। এমন কাজের ত্রাণের গাড়ি সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া এলাকায় বিকল হয়েছে এবং পাবলিক গাড়িতে নিয়ে আসতে হবে এবং এক লাখ টাকা খরচ। এমন তথ্য দিয়ে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী কর্ণেল(মহসীন রেজা) নাম ভাংগিয়ে গত ৪এপ্রিল প্রতারণা করার জন্য তার ব্যবহৃত ০১৭১২-২২৮৭২৮ মোবাইল থেকে শেরপুরের কয়েকজন ইউপি চেয়ারম্যানকে মোবাইল করে গাড়ি ভাড়া বাবদ টাকা দাবী করে। এতে সাধারণ কর্মহীন মানুষের জন্য ত্রাণের কথা চিন্তা করে সরল বিশ^াসে ওই প্রতারকের দেয়া ০১৭৩৭-৮১৫৬৯৬ বিকাশ নাম্বারে উপজেলা খামারকান্দি ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল ওহাব ৩,৬০০টাকা, কুসুম্বী ইউপি চেয়ারম্যান শাহ আলম পান্না ২,৬০০ টাকা, বিশালপুর ইউপি চেয়ারম্যান জাকির হোসেন ২,৬০০ টাকা ও সুঘাট ইউপি চেয়ারম্যান আবু সাঈদ সরকার ৫,০০০ টাকা পাঠায়। পরবর্তীতে খামারকান্দি ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল ওহাবের সন্দেহ হলে সত্যতা যাচাইয়ের জন্য শাহজাহানপুরের মাঝিড়া ক্যান্টনমেন্টে কর্ণেল মহসিন রেজার সাথে সাক্ষাত করলে তা ভূয়া প্রমাণিত হয় এবং প্রতারনার স্বীকার হয়েছে বলে অবগত হয়। এহেন ঘটনায় গত ৪ এপ্রিল শেরপুর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী নং ১৮৪ লিপিবদ্ধ হয়। এর প্রেক্ষিতে থানা পুলিশ উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের আলোচনা সাপেক্ষে থানায় মামলা দায়ের করে ওই প্রতারককে গ্রেফতারে মরিয়া হয়ে ওঠে।
এর ফলে শেরপুর থানা পুলিশ সংশ্লিষ্ট জেলার র‌্যাপিট এ্যাকশন ব্যাটালিয়ান(র‌্যাব) এর সহযোগীতায় ৯ এপ্রিল বৃহস্পতিবার ভোর সাড়ে ৪টার দিকে রংপুরের শাপলা চত্ত্বর থেকে ওই প্রতারক বাবুল খান(ভূয়া কর্ণেল)কে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে আসে।
এ ব্যাপারে শেরপুর থানা অফিসার ইনচার্জ হুমায়ুন কবীর জানান, ভূয়া কর্ণেল সেজে প্রতারণার অভিযোগে বাবুল খান নামের প্রতারক গ্রেফতার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে প্রচলিত আইনে মামলার দিয়ে বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।

আপনি আরও পড়তে পারেন