বাড়িতে পতাকা টাঙিয়ে হাসপাতালকর্মীকে ইটভাটায় থাকতে বললেন ইউপি চেয়ারম্যান!

করোনার সংক্রমণের ভয়ে ঢাকার ধামরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এক স্বাস্থ্যকর্মী ও তার পরিবারকে বাড়ি ছাড়তে বলে ইটভাটায় থাকার নির্দেশ দিয়েছেন স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ধামরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার নূর রিফফাত আরা।ঘটনাটি ঘটেছে ধামরাইয়ের বালিয়া ইউনিয়নের মাদারপুর এলাকায়।

ভুক্তভোগী স্বাস্থ্যকর্মী জানান, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কাজ করায় বালিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আহম্মদ হোসেন তাকে গত কয়েকদিন ধরে এলাকায় ঢুকতে দেন না। পরে গত সপ্তাহের রোববার বাড়ি ফেরার পর তাকে আর বের হতে দিচ্ছে না। চেয়ারম্যান তাকে বলেছেন, বাড়িতে থাকা যাবে না। তাহলে তার মাধ্যমে করোনা ছড়াতে পারে। পরিবারের সবাইকে নিয়ে তিনি যেন ইটভাটায় গিয়ে থাকেন।

কান্নাজড়িত কণ্ঠে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ওই কর্মী বলেন, আমার ঘরে বাবা ও মা দুইজনেই হার্টের রোগী। সব সময় তাদের ওষুধ লাগে। এ অবস্থায় কাউকে জরুরি প্রয়োজনে বাড়ি থেকে বের হতে দিচ্ছে না। আমি হাসপাতালে সেবা দেই বলে করোনার ভয়ে তিনি আমাকে ইটভাটায় থাকার জন্য চাপ দিচ্ছেন।

ধামরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার নূর রিফফাত আরা জানান, ধামরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মালি দীর্ঘদিন ধরে সেখানে কাজ করেন। হাসপাতালে কাজ করে বিধায় করোনার ভয়ে এলাকার চেয়ারম্যান তাকে বাড়ি ছাড়তে বলে তার পরিবারকে অবরুদ্ধ করে বাড়িতে লাল পতাকা দিয়ে রেখেছিলো কয়েকদিন ধরে। কিন্তু এখন চেয়ারম্যান বলছেন, সেই স্টাফকে এলাকায় থাকতে দেবে না। তার পরিবারকে ইটভাটায় থাকার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, এ খবর পেয়ে আমি আমার স্টাফকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসি। কিন্তু তার পরিবারকে এখনও অবরুদ্ধ করে রেখেছে ঐ জনপ্রতিনিধি।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্রধান এই কর্মকর্তা আরও বলেন, আমার সেই স্টাফের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে তার করোনা নেগেটিভ এসেছে। তবুও কিভাবে উপজেলার নির্দেশ ছাড়া চেয়ারম্যানরা এভাবে একজনের বাড়ি অবরুদ্ধ করে রাখে। বিষয়টি খুব দুঃখজনক।

বিষয়টি স্বীকার করে ধামরাই উপজেলার বালিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আহম্মদ হোসেন বলেন, আসলে ওর পরিবারসহ এলাকাবাসীর সুরক্ষার জন্য তাকে আলাদা ঘর অথবা অন্য কোথাও থাকার জন্য বলা হয়েছে।

আপনি আরও পড়তে পারেন