স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকের পদে থাকার কোনো অধিকার নেই বলে মনে করেন নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না। আজ শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি।
নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক বলেন, ‘স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকের স্বাস্থ্যবিভাগ সম্পর্কে কোনো ধারণাই নেই। তিনি বলতেও পারেন না, দেশে কতগুলো আইসিইউ আছে, কতগুলো হাসপাতাল আছে, যেখানে করোনাভাইরাস চিকিৎসা হওয়া সম্ভব। একের পর চিকিৎসক, নার্স করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন। এমনকি মৃত্যুবরণ করেছেন।’
মান্না অভিযোগ করেন, ‘স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে প্রধান করে একটা জাতীয় কমিটি গঠন করা হয়েছে। তার কোনো বিভাগের সঙ্গে কোনো মন্ত্রণালয়ের সমন্বয় নেই। তার মানে হচ্ছে, যেখানে সমন্বিত কার্যক্রমের প্রয়োজন, সেখানে এই ব্যক্তির নেতৃত্বে সেটা হওয়া সম্ভব নয়। তার ওপর এত বড় সংকটের একটি বিষয় নিয়ে রীতিমতো ব্যবসা করেছে এই মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল ব্যক্তিবর্গ। এন-৯৫ মাস্ক নিয়ে যে কুৎসিত ব্যবসা করার খবর প্রকাশিত হয়েছে, তারপর কোনো অধিকার নেই স্বাস্থ্যমন্ত্রী, স্বাস্থ্য সচিব এবং ডিজি হেলথের স্বপদে বহাল থাকার।’
অবিলম্বে তাদের পদত্যাগ দাবি করে এবং স্বাস্থ্য বিভাগকে ঢেলে সাজিয়ে বর্তমান পরিস্থিতিকে মোকাবিলা করার উপযোগী করে গড়ে তোলার আহ্বান জানান মান্না।
মাহমুদুর রহমান বলেন, ‘আমি আগেই বলেছি এই বিষয়ে আমরা প্রাথমিকভাবে ব্যর্থ হয়েছি। চীনে এই ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ছড়িয়ে পড়ার পর বাংলাদেশের প্রস্তুতি নিতে দুই মাসের বেশি সময় থাকলেও সেটা যথাযথভাবে কাজে লাগানো হয়নি।’
ত্রাণ বিতরণ, টিসিবি’র কার্যক্রম তদারকি, রেশনিং এবং কৃষকের কাছ থেকে ধান কেনার দায়িত্ব সামরিক বাহিনীর হাতে দেওয়ার দাবি জানান মান্না।
মান্না বলেন, ‘দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থা এবং ত্রাণ কার্যক্রম দুটোর জন্য বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এবং সামাজিক সংগঠনকে যুক্ত করে আলাদা আলাদা মনিটরিং সেল গঠন করতে হবে।’
স্কুল-কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, মাদ্রাসা, কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার খরচ, বেতন ইত্যাদি আগামী ছয় মাসের জন্য মওকুফ করে দেওয়ার দাবি জানান মান্না। তিনি বলেন, ‘মাদ্রাসাভিত্তিক লিল্লাহ বোর্ডিং, বেসরকারি উদ্যোগে পরিচালিত এতিমখানা এবং বৃদ্ধাশ্রমগুলোতে তিন মাসের খাবারের ব্যবস্থা করতে হবে।’
করোনা পরবর্তী সময়ে দেশের অর্থনৈতিক সঙ্কট এবং সামগ্রিক পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য এখনই দেশের অর্থনীতিবিদ, ব্যবসায়ী, বিভিন্ন পেশাজীবী, এনজিও প্রতিনিধির সমন্বয়ে ৩-৫ বছর মেয়াদি একটি স্থায়ী ‘জাতীয় পুনর্গঠন কমিটি’ গঠন করারও প্রস্তাব করেন মান্না।