এক পরীক্ষায় ইউএনও করোনা পজিটিভ, আরেকটিতে নেগেটিভ

করোনাভাইরাস সংক্রমণের উপসর্গ না থাকলেও সতর্কতার অংশ হিসেবে চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) নমুনা পরীক্ষা করা হয়। গত ২৯ এপ্রিল পাওয়া রিপোর্ট তিনি করোনা পজিটিভ বলে জানা যায়। তবে সে রিপোর্টের ওপর আস্থা রাখতে পারেননি বৈশাখী বড়ুয়া। তিনি দাবি করেন, তার কোনো ধরনের শারীরিক অসুস্থতা বোধ হচ্ছে না। সাত দিনের মাথায় বুধবার (৬ মে) দ্বিতীয়বার নমুনা পরীক্ষায় তার রিপোর্ট এলো নেগেটিভ।

উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. এইচ এম শোয়েব আহমেদ চিস্তি বলেন, গত ২৭ এপ্রিল তার নমুনা সংগ্রহ করা হয়। ঢাকা শিশু হাসপাতালে পরীক্ষার রিপোর্ট ২৯ এপ্রিল আমাদের হাতে আসে। তাতে দেখা যায় বৈশাখী বড়ুয়া করোনাভাইরাসে আক্রান্ত। ওই দিনই আবার তার নমুনা সংগ্রহ করে রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানে (আইইডিসিআর) পাঠানো হয়। সেখান থেকে ইনস্টিটিউট অব পাবলিক হেলথে পাঠানো হয়। বুধবার সেই রিপোর্ট আমাদের হাতে এসেছে। তাতে দেখা যাচ্ছে, তিনি করোনায় আক্রান্ত নন।

তিনি বলেন, প্রথম রিপোর্ট আসার পরেই বৈশাখী বড়ুয়া হোম আইসোলেশনে আছেন। আবারও নমুনা দেওয়া হয়েছে। পরবর্তী রিপোর্ট নেগেটিভ না আসা পর্যন্ত তিনি হোম আইসোলেশনে থাকবেন। তৃতীয় রিপোর্টেও যদি করোনা নেগেটিভ আসে তাহলে তিনি কাজে যোগ দিতে পারবেন।

বৈশাখী বড়ুয়ার পরিবর্তে সহকারী কমিশনার (ভূমি) কানিজ ফাতেমা দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি জানান, জানান, যেহেতু ইউএনও ম্যাডামের রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে তাই তিনি হোম আইসোলেশনে আছেন। তবে তিনি সম্পূর্ণ সুস্থ আছেন। তার মধ্যে কোনও ধরনের সমস্যা দেখা যায়নি। এ কারণে তিনি রিপোর্ট পাওয়ার দিনই আবারও নমুনা দিয়েছেন পরীক্ষার জন্য। তিনি সবার কাছে দোয়া চেয়েছেন। বুধবার ম্যাডামের রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে। মঙ্গলবার তিনি আবারও নমুনা দিয়েছেন। এই নমুনার রিপোর্ট এলে বিষয়টি চূড়ান্ত হবে।

হাজীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার বৈশাখী বড়ুয়া বলেন, আমার করোনা সংক্রমণের কোনো উপসর্গ ছিল না। যেহেতু আমি আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার কাজে প্রতিনিয়ত লোকজনের সঙ্গে যোগাযোগ করি, তাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কর্তৃপক্ষ আমার নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠায়। প্রথমবার রিপোর্ট পজিটিভ আসায় আমি অবাক হয়েছি। তখন আমি সবাইকে বলেছি আমার কোনো সমস্যা নেই। পরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কর্তৃপক্ষ আরও নিশ্চিত হওয়া জন্য দ্বিতীয়বার নমুনা সংগ্রহ করে। আজ রিপোর্ট পেয়ে স্বস্তি পেলাম। সম্পূর্ণ নিশ্চিত হওয়ার জন্য গতকাল আবারো নমুনা নিয়েছে তারা।

চাঁদপুর ২৫০ শয্যা সরকারি জেনালের হাসপাতালের মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. সালেহ আহমেদ বলেন, আক্রান্ত ব্যক্তির উপসর্গ না থাকলে দ্রুততম সময়ে সুস্থ হয়ে যাওয়ার ঘটনা স্বাভাবিক। আবার স্যাম্পল কালেকশনের সময় ত্রুটি থাকলে রিপোর্ট ভুল হতে পারে।

এ প্রসঙ্গে সিভিল সার্জন ডা. মো. সাখাওয়াত উল্লাহ বলেন, পজিটিভ আসার তিন-চারদিন পরও নেগেটিভ আসতে পারে। তাছাড়া উনার এমনিতেও নেগেটিভ হওয়ার সময় হয়ে গেছে। রেজাল্ট কেন বদলে গেল সেটা যারা রিপোর্ট করেছেন তারাই জানেন।

চাঁদপুর জেলা লকডাউন ঘোষণার পর হাজীগঞ্জ উপজেলাকে করোনামুক্ত রাখতে জনসচেতনতা ও লকডাউন কার্যকর করতে দিন-রাত মাঠে কাজ করেছেন ইউএনও।

 

আপনি আরও পড়তে পারেন