বিনীত অনুরোধ এই দুঃসময়ে কাউকে চাকরিচ্যুত করবেন না

গণমাধ্যমকর্মীদের চাকরিচ্যুতি বন্ধ ও তাদের বকেয়া বেতন-ভাতা পরিশোধ করতে প্রতিষ্ঠান কর্ণধারদের প্রতি আন্তরিক আহ্বান জানিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ ড. হাছান মাহমুদ। 

সোমবার (১১ মে) রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি -ডিআরইউ’তে ব্রাকের সহায়তায় ‘করোনাভাইরাস সংক্রমণের নমুনা সংগ্রহ বুথ’ উদ্বোধনকালে তিনি এ আহ্বান জানান।

‘করোনা দুর্যোগ পরিস্থিতির মধ্যেও আমরা দুঃখের সাথে লক্ষ্য করছি, কিছু মিডিয়া হাউজে চাকরিচ্যুতি ঘটেছে, অনেকের বেতন দেয়া হয়নি’ উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান যেমন সংবাদপত্র, টেলিভিশন, অনলাইন- এদের কর্ণধারদের প্রতি বিনীত অনুরোধ জানাই, মহামারীর এই দুঃসময়ে দয়া করে কাউকে চাকরিচ্যুত করবেন না এবং যাদের বেতন বাকি আছে, তা দিয়ে দিন। কারো অপরাধ থাকলেও, শাস্তি দেবার সময় এটি নয়। প্রতিষ্ঠান প্রধানরা হয়তো বলবেন- সমস্যা আছে, কিন্তু আমি বলবো, আগে সমস্যা ছিল না এবং কয়েক মাস পরেও সমস্যা থাকবে না।’

সাংবাদিকদের বেতন-ভাতা যাতে ঠিকমতো হয়, সেজন্য সরকারের পক্ষ থেকে অনেকগুলো পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে, জানান মন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘ক্রোড়পত্রের বিল দেয়ার ব্যবস্থা করছি আমরা, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে ৫৮টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগকে চিঠি দিয়ে বলা হয়েছে, তাদের সংস্থা থেকে গণমাধ্যমের যত বিল বাকি আছে, সেগুলো পরিশোধের জন্য। আমাদের মন্ত্রণালয় থেকেও একটি তাগিদপত্র দেয়া হচ্ছে। এসব বিলের পরিমাণ শত শত কোটি টাকা। মালিকপক্ষ নিশ্চয়ই যোগাযোগ রাখছেন ও তারা সহসাই বিল পাবেন। ইতিপূর্বে কখনো এধরনের ব্যবস্থা নেয়া হয়নি, এরূপ চিঠিও দেয়া হয়নি। এখন দেয়া হয়েছে, যাতে গণমাধ্যম, বিশেষত: সংবাদপত্রে কারো বেতন-ভাতা বকেয়া না থকে সেজন্য।’

ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আমি সব সময় মন্ত্রী ছিলাম না কিন্তু সাংবাদিকদের সাথে ছিলাম। এখন আমার দায়িত্ব আপনাদের সাথে থাকা, আমি আছি। যখন মন্ত্রী থাকবো না, তখনও আপনাদের সাথে থাকবো। সাংবাদিকদের বিপদে আপদে সাহায্য করা ও কল্যাণের জন্য প্রধানমন্ত্রী সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট প্রতিষ্ঠা করেছেন। আমিও সবসময় আপনাদের সাথে রয়েছি।’

মন্ত্রী এ সময় করোনাভাইরাস মোকাবিলায় সম্মুখযোদ্ধা হিসেবে চিকিৎসক-নার্স, পুলিশ, সেনাবাহিনী, গণমাধ্যমকর্মী ও দায়িত্বপালনরত সকলকে অভিনন্দন জানান। সম্প্রতি প্রয়াত তিন সাংবাদিকের আত্মার শান্তি কামনা ও করোনায় আক্রান্ত প্রায় একশ’ সাংবাদিকের দ্রুত আরোগ্য প্রার্থনা করেন তথ্যমন্ত্রী।

তিনি বলেন, গণমাধ্যমকর্মীরা জীবনটাকে হাতের মুঠোয় নিয়ে যেমন সম্মুখভাগে কাজ করছে, তেমনি গুজব নিরসনেও সোচ্চার ভূমিকা রাখছে, তাদের জন্য অভিনন্দন।

বাস্তব দৃষ্টিকোণ থেকে বিশ্ব করোনা পরিস্থিতি নিয়ে ড. হাছান বলেন, মানবজাতি আজ এক মহাচ্যালেঞ্জের মুখে। ভাইরাস থেকে সুরক্ষার জন্য যে প্রস্তুতি প্রয়োজন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বা ইউরোপীয়  উন্নত-সমৃদ্ধ দেশগুলোসহ কারোই তা ছিল না। আমরা লিপ্ত ছিলাম একে অপরের সাথে অস্ত্রের প্রতিযোগিতায়। অথচ, ১৮ বছর দীর্ঘ মার্কিন-ভিয়েতনাম যুদ্ধে যেখানে ৫৬ হাজারের মতো মার্কিন সেনা নিহত হয়েছিল, সেখানে দু’মাসেই করোনায় এ পর্যন্ত পৌনে এক লাখের বেশি মার্কিনি প্রাণ হারিয়েছে।

‘ভবিষ্যতেও যুদ্ধ-বিগ্রহ নয়, এধরনের মহামারীতেই লোকক্ষয়ের সম্ভাবনা বেশি বলে আমি মনে করি, আর তা মোকাবিলার জন্য গবেষণা ও সচেতনতার কোনো বিকল্প নেই” মন্তব্য করেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।

 

 

 

 

 

আপনি আরও পড়তে পারেন