নওগাঁয় থেমে নেই পুকুর খনন ॥ টপ সয়েল যাচ্ছে ইটভাটায়

স্টাফ রিপোর্টা, নওগাঁঃ
করোনা ভাইরাসের কারণে যখন সবকিছু থমকে রয়েছে ঠিক তখনই নওগাঁর রাণীনগরে কৃষি জমিতে খনন করা হচ্ছে একের পর এক পুকুর। প্রশাসন যখন করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে সচেতনতামূলক কার্যক্রমে ব্যস্ত তখন উপজেলার কিছু অসাধু মানুষ এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে শ্রেণি পরিবর্তন না করেই কৃষি জমিতে পুকুর খনন করার মহাউৎসবে মেতেছেন। আর এই সব কৃষি জমির টপ সয়েল যাচ্ছে ইটভাটাগুলোতে।
জানা যায়,  উপজেলার মিরাট ইউনিয়নে পুকুর খননের প্রবণতা সবচেয়ে বেশি। এই ইউনিয়নের অধিকাংশ কৃষি জমিই বর্তমানে পুকুরে পরিণত হয়েছে। কৃষকদের অধিক টাকার লোভ দেখিয়ে এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ীরা দীর্ঘ মেয়াদে কৃষি জমি লিজ নিয়ে খনন করছেন পুকুর। আর এতে করে স্থায়ী ভাবে নষ্ট হচ্ছে কৃষি জমিগুলো। করোনা ভাইরাসের এই সংকট আসার আগে উপজেলা প্রশাসন মাঠ পর্যায়ে অভিযান চালিয়ে কিছু কিছু এলাকার পুকুর খনন কাজ বন্ধ করে দিয়েছে। কিন্তু করোনা ভাইরাসের কারণে প্রশাসনসহ অন্যান্য সকল সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তারা ব্যস্ত থাকার সুযোগে মিরাট ইউনিয়নের ৩নং স্লুইস গেটের দক্ষিণ দিকে মেড়িয়া রাস্তা সংলগ্ন ধনপাড়া মাঠ নামক স্থানে সরকারি খালের পাড় দখল করে শ্রেণি পরিবর্তন না করে প্রায় ২৫বিঘা কৃষি জমিতে পুকুর খনন করছেন স্থানীয় প্রভাবশালী শ্রী খোকন কুমার। আর এই জমিরগুলোর টপ সয়েল যাচ্ছে ইট ভাটাগুলোতে। প্রকাশ্যে এই পুকুর খননের বিষয়ে জনমনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। অপরদিকে উপজেলায় আশঙ্কাজনক হারে কমতে শুরু করেছে কৃষি জমি। এমনটি চলতে থাকলে আর কয়েক বছর পর উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে কৃষি আবাদ করার জন্য জমিই পাওয়া যাবে না বলে আশঙ্কা করছেন সচেতনমহল।
নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক স্থানীয় বাসিন্দাদের অনেকেই জানান বর্তমানে মিরাট ইউনিয়নে কৃষি জমি নেই বললেই চলে। হাজার হাজার বিঘা কৃষি জমি পুকুর হয়ে গেছে। আর প্রভাবশালী ব্যক্তিরা প্রশাসনকে ম্যানেজ করে সবকিছুই করতে পারেন। তাদের জন্য অন্যায় বলে কিছু নেই। খোকন সরকারি খালের পাড়ের জমি দখল করে এই সংকটময় সময়কে কাজে লাগিয়ে কৃষি জমিতে পুকুর খনন করছে অথচ প্রশাসন নীরব ভ’মিকা পালন করছে।
পুকুর খননকারী শ্রী খোকন কুমার জানান সারা দেশেই পুকুর খনন করা হচ্ছে। তাই তিনিও পুকুর খনন করছেন। এতে অন্যায়ের কিছু নেই। তিনি নিজস্ব ও লিজ নেওয়া প্রায় ২৫বিঘা জমিতে পুকুর খনন করছেন। জমির পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া সরকারি খালের পাড় তার জমিতে রয়েছে বলে তিনি পাড়কে তার পুকুরের পাড় হিসেবে ব্যবহার করছেন বলেও তিনি জানান।
নির্বাহী কর্মকর্তা আল মামুন জানান, যে কোন পুকুর খনন করাকে নিষিদ্ধ ঘোষনা করা হয়েছে। তারপরও যদি কেউ এই সংকটময় সময়ে শ্রেণি পরিবর্তন না করে এবং সংশ্লিষ্ট দপ্তরের অনুমতি না নিয়ে পুকুর খনন করেন তাহলে তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

আপনি আরও পড়তে পারেন