ইফতারের পর কলেজ পড়ুয়া স্ত্রীকে কুপিয়ে হত্যা করলেন স্বামী

 

চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে কলেজ পড়ুয়া স্ত্রী স্বামীর ছুরিকাঘাতে প্রাণ হারিয়েছেন। এই ঘটনায় নিহতের মা-সহ আরো দুইজন মারাত্মক আহত হন। বুধবার (১৩ মে) রাতে উপজেলার গৃদকালিন্দিয়া এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। ঘটনার পরপরই ঘাতককে গণধোলাই দিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছে এলাকাবাসী। নিহত গৃহবধূ তানজিলা আক্তার রিতু এবারে গৃদকালিন্দিয়া হাজেরা হাসমত কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষার্থী ছিলেন।

স্বজন ও পুলিশ জানিয়েছে, বুধবার বিকেলে লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার শায়েস্তানগরের বাড়ি থেকে  স্বামী আল মামুন মোহন (২৮) শ্বশুরবাড়িতে যান। ইফতারের পর পারিবারিক বিষয় নিয়ে স্ত্রী তানজিলা আক্তার রিতু (১৯)র সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে উত্তেজিত স্বামী মোহন স্ত্রী রিতুকে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করতে থাকে। ঘটনা দেখে শ্বাশুড়ি পারভিন আক্তার এবং শ্যালক প্রান্ত এগিয়ে আসেন। এসময় ক্ষিপ্ত মোহন তাদেরকেও ছুরিকাঘাত করে। এতে তিনজন গুরুতর আহত হলে তাদের ফরিদগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে রিতু মারা যান। এদিকে, গুরুতর আহত শ্বাশুড়ি পারভিন আক্তার (৪০) ও শ্যালক প্রান্ত (১০) কে উন্নত চিকিৎসার জন্য চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

ঘটনার পরপর এলাকাবাসী ঘাতক জামাতা মোহনকে আটক করে গণধোলাই দিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছে জনতা। সংবাদ পেয়ে ফরিদগঞ্জ থানার ওসি আবদুর রকিব ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এসময় তার সঙ্গে থাকা উপপরিদর্শক কাজী জাকারিয়া নিহতের লাশ উদ্ধার করেন।

খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার শায়েস্তানগর গ্রামের মমতাজ উদ্দিন মাস্টারের ছেলে আল মামুন মানিক গত তিনবছর আগে পাশের উপজেলা ফরিদগঞ্জ উপজেলার গৃদকালিন্দিয়া এলাকার সেলিম খানের মেয়েকে বিয়ে করেন। পরে মোহন সৌদি আরব চলে যান। সেখানে দেড় বছর বেকার থেকে গত কয়েক মাস আগে দেশে ফিরেন। নিহত রিতুর বাবা সেলিম খান নিজেও সৌদি আরব থাকেন। সেখানে তিনি এখন করোনায় আক্রান্ত।

ফরিদগঞ্জ থানার ওসি আবদুর রকিব জানান, মূলত স্বামী এবং স্ত্রী পরস্পরকে সন্দেহের চোখে দেখতো। এই নিয়ে তাদের মধ্যে প্রায়ই কলহ লেগে ছিল। সে কারণে বুধবার রাতে কথা কাটাকাটির জের ধরে এই হত্যাকান্ড ঘটে। রাতেই পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলে জানান ওসি।

আপনি আরও পড়তে পারেন