ত্রাণ দিয়ে ছবি তোলায় বিশ্বাসী নই, ছোটো লাগে: দেব

বরাবরই চিরাচরিত রাজনীতিবিদদের থেকে একটু আলাদা তিনি। রাজনৈতিক চিরায়িত ধারা থেকে দূরে রেখেছেন। এবারও সেই ধারা বজায় রাখলেন ঘাটালের তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ দেব।

করোনাভাইরাস পরিস্থিতির পর্যালোচনায় শনিবার (১৬ মে) মেদিনীপুরে আসেন দেব। জেলা পরিষদের সঙ্গে পঞ্চায়েত সমিতির ভিডিও কনফারেন্সে যোগ দেন।

 

কনফারেন্সে ছিলেন- জেলা সভাধিপতি উত্তরা সিংহ, তৃণমূলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতি, মানস ভুঁইয়া-সহ অন্যান্য নেতারা।

বৈঠক শেষে সাংবাদিক বৈঠকে পরিযায়ী শ্রমিক, স্বাস্থ্য পরিকাঠামোসহ একাধিক বিষয়ে কথা বলেন তৃণমূলের তারকা সাংসদ।

স্বাভাবিকভাবেই করোনা পরিস্থিতির সময় নিজের লোকসভায় না আসায় বিরোধীদের কটাক্ষের প্রসঙ্গও ওঠে। জবাবে দেব জানান, তিনি এলাকায় না এলেও জেলা প্রশাসন এবং তার প্রতিনিধিরা এলাকায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়েছে।

তৃণমূল সাংসদ বলেন, আমি ছবি তুলে পোস্ট করার মতো লোক নই যে আমি গিয়েছি, আমি ছবি তুলেছি। আমি সেই রাজনীতিতে বিশ্বাস করি না। আপনি জেলাশাসককে জিজ্ঞাসা করুন, আমি যতটা পেরেছি ত্রাণ দিয়েছি। আমার লোকেরা খাবার পৌঁছে দিচ্ছেন। আমি মাঝে আসার চেষ্টাও করেছিলাম। সেই তথ্যও দিয়ে দিতে পারি। তখন ডিএম (জেলাশাসক) ও এসপি (পুলিশ সুপার) বলেছেন, আপনাকে নিয়ে গেলে সোশ্যাল ডিসট্যান্সিং (সামাজিক দূরত্ব) মেনটেন করা যাবে না। আপনাকে যদি কোনও হাসপাতালে নিয়ে যাই ব্লকে ঢোকেন, প্রচুর ভিড় হয়ে যাবে। সেটা নিয়ে অন্য কিছু হবে। আপনি ফোনে কথা বলুন। আমরা দেখছি।

দেব জানান, ভিডিও কনফারেন্স হওয়ায় তিনি মেদিনীপুরে এসেছেন। মানুষের মধ্যে গিয়ে নিয়মবিধি ভাঙার রাস্তায় হাঁটেননি।

তার কথায়, আজ আমরা যেহেতু ভিডিও কনফারেন্স করছিলাম, আমি অজিত দাদাকে বললাম প্লিজ আমায় ডেকো। আমি দেখতে চাই, জানতে চাই কী হচ্ছে। আমি আবারও বলছি এটা ভিডিও কনফারেন্সে হয়েছে। আমি মাঠে ওরকমভাবে যাইনি যে কাউকে খাবার দিলাম। সেই ছবি তোলা হল এবং পোস্ট হল। এরকম রাজনীতি করতে আসিনি আমি। নিজেকে ছোটো লাগে নিজেকে যখন দেখি তার বাবার নাম, মায়ের নাম, বোনের নাম কী জিজ্ঞাসা করা হয়। খারাপ লাগে যে একটা জিনিস দেওয়ার আগে তুমি কতটা গুরুত্বপূর্ণ। তুমি তো একটা মানুষকে ছোটোও করছ। উনি তো নিজের ইচ্ছায় নিচ্ছেন না। এরকম একটা বিপদে, এরকম একটা সময়ে যখন কাজকর্ম নেই, তিনি বাধ্য হয়ে নিচ্ছেন, তুমি তাকেও ছোটো করছ। তুমি নিজেকেও তো করছ না।

পাশাপাশি দেব জানান, ভিন রাজ্যে আটকে পড়া পরিযায়ী শ্রমিকদের বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং মুখ্যসচিব রাজীব সিনহার সঙ্গে তার কথা হয়েছে। এখনও পর্যন্ত যে ট্রেনগুলি রাজ্যে এসেছে, তাতে কতজন ঘাটালের বাসিন্দা ছিলেন, সেই তালিকাও তুলে দিয়েছেন তিনি।

তবে দেবেব স্পষ্ট বার্তা, লোক দেখিয়ে কাজ করার পক্ষে একেবারেই নন তিনি।

আপনি আরও পড়তে পারেন