দোহারে বন্যাকবলিত এলাকা পরিদর্শন ও ত্রাণ বিতরণ করেন জেলা প্রশাসক

দোহার(ঢাকা)প্রতিনিধি:

ঢাকার দোহারে বন্যকবলিত ৩০টি গ্রাম পরিদর্শন ও ত্রাণ বিতরণ করলেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শহীদুল ইসলাম। এসময়ে বানের পানিতে প্লাবিত সাড়ে সাতশত পরিবারের মাঝে শুকনো খাবার ও এমপি মহোদয়ের দেওয়া ত্রান সামগ্রী বিতরণ করা হয়।

মঙ্গলবার (২৮ জুলাই) সকাল সাড়ে ৮টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত ঢাকা জেলা প্রশাসক উপজেলার মুকসুদপুর, নারিশা, বিলাশপুর, মাহমুদপুর ও নয়াবাড়ি ইউনিয়নের বন্যাদুর্গত প্রায় ত্রিশটিরও বেশী গ্রাম ঘুরে দেখেন। বড় ট্রলারযোগে ও স্থলপথে এসব এলাকা পরিদর্শন করেন এবং জি আর ফান্ডের চাউল ও ঢাকা-১ আসনের সংসদ সদস্য সালমান এফ রহমানের ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করেন।
ত্রান সামগ্রী বিতরণকালে জেলা প্রশাসক শহীদুল ইসলাম বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঈদ উপহার হিসাবে খাদ্য সহায়তা ও স্থানীয় এমপি’র খাদ্য সহায়তা বিতরণ করা হবে বানভাসিদের মাঝে।

এসময়ে উপস্থিত ছিলেন, দোহার উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো.আলমগীর হোসেন, উপজেলা নির্বাহী অফিসার এ এফ এম ফিরোজ মাহমুদ, উপজেলা সহকারি কমিশনার(ভুমি)জ্যোতি বিকাশ চন্দ্র, উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান শামীমা ইসলাম বিথী, ভাইস চেয়ারম্যান মো.সুজাহার বেপারী, নারিশা ইউপি চেয়ারম্যান সালাউদ্দিন দরানী, কুসুমহাটি ইউপি চেয়ারম্যান আমজাদ হোসেন আজাদ, মুকসুদপুর ইউপি চেয়ারম্যান এম এ হান্নান, নয়াবাড়ি ইউপি চেয়ারম্যান শামীম আহম্মেদ হান্নান প্রমুখ।

উল্লেখ্য সৃষ্ট বন্যা পরিস্থিতিতে আরও অবনতি হয়েছে ঢাকার দোহারে।পদ্মার পানি ক্রমেই বৃদ্ধি পেয়ে প্লাবিত হয়েছে উপজেলার ত্রিশটিরও বেশী গ্রাম। এসব এলাকার পঞ্চাশ হাজারেরও বেশি মানুষ এখন পানিবন্দী। সড়কে পানি ওঠায় বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে যোগাযোগব্যবস্থা। সামনে ঈদ,কিন্তু উৎসবের কোনো আমেজ নেই এসব এলাকায়। বানের পানিতে ভেসে গেছে মানুষের ঈদের আনন্দ।বাড়িঘর, ফসলি জমি, রাস্তাঘাট সবই ডুবে গেছে। পানি বৃদ্ধির সাথে পদ্মার তীরবর্তী এলাকা মুকসুদপুর, নারিশা, মেঘুলা, বিলাশপুর, মধুরচর, মাহমুদপুর, মৈনটঘাট, প্রানকুন্ড,  হরিচন্ডি এলাকার নদীর তীরে ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে।এসব এলাকার মানুষ আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাচ্ছে। বিলাশপুর ইউনিয়নের পুরাটাই বানের পানিতে প্লাবিত হয়েছে। কাজিরচর সড়কের একটি বড় কালভার্ট দেবে গেছে। সব স্থানে বাঁধের ওপর দিয়ে পানি ঢুকছে। নৌকা ছাড়া চলাচলের আর কোনো ব্যবস্থা নেই। ৭০ শতাংশ নলকূপ পানির নিচে। এলাকায় বিশুদ্ধ পানীয় জলের সংকট সৃষ্টি হয়েছে।

এ বিষয়ে দোহার উপজেলা নির্বাহী অফিসার এ এফ এম ফিরোজ মাহমুদ জানান,পানির প্রবল স্রোতে উপজেলার শতাধিক কাঁচা বাড়িঘর বিধ্বস্ত হয়ে গেছে বলে জানা যায়। বেরী বাধেঁর বামতীর এলাকার রাস্তা-ঘাট পানিতে তলিয়ে গেছে।বিলাশপুর ইউনিয়নে সরকারি ত্রান নিয়ে যাওয়ার সব রাস্তাই ডুবে গেছে। ৭০ শতাংশ নলকূপ পানির নিচে। এলাকায় বিশুদ্ধ পানীয় জলের সংকট সৃষ্টি হয়েছে। ঈদুল আযহা মুহূর্তে এ বিপর্যয়ের কারণে মানুষ চরম কষ্টে পড়েছেন। বন্যার্তদের জন্য জেলা প্রশাসন থেকে ১০ মেট্রিক টন চাল পাওয়া গেছে। এসব চাল বণ্টন করা হচ্ছে। স্থানীয় সংসদ সদস্য সালমান এফ রহমান সাহেবের কাছ থেকে বানভাসীদের জন্য চাল, ডাল, তেল, লবন, আটা, মুড়ি ও চিড়া সহায়তা হিসাবে পাওয়া গিয়াছে। এ ছাড়া উপজেলা পরিষদের তহবিল থেকে ৫০০০ প্যাকেট শুকনো খাবার, ৫০ বস্তা চিড়া- মুড়ি পাওয়া গেছে। বন্যাদূর্গত মানুষকে উদ্ধারের জন্য কিছু নৌকারও ব্যবস্থা করা হয়েছে। বানভাসিদের মাঝে ঈদ উপহার হিসাবে খাদ্য সহায়তা বিতরণ অব্যাহত থাকবে।

আপনি আরও পড়তে পারেন