বিশেষ মর্যাদা ফেরানোর ‘পবিত্র লক্ষ্যে’ অবিচল কাশ্মীরীরা

কাশ্মীরের বিশেষ স্বায়ত্তশাসনের মর্যাদা প্রত্যাহারে মোদি সরকারের অসাংবিধানিক পদক্ষেপের বিরুদ্ধে লড়াই অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু ও কাশ্মীরের রাজনীতিবিদরা।

শনিবার ন্যাশনাল কনফারেন্স, কংগ্রেস এবং পিপলস ডেমোক্র্যাটিকসহ আঞ্চলিক প্রধান দলগুলোর নেতারা এক যৌথ বিবৃতিতে জানিয়েছেন, ভারতের অগ্রহণযোগ্য পদক্ষেপ কাশ্মীরিদেরই ঐতিহ্য এবং আত্মপরিচয় হুমকিতে ফেলেছে।

বিবৃতিতে বলা হয়, কাশ্মীরে বিশেষ মর্যাদা ফিরিয়ে আনার পবিত্র লক্ষ্য অর্জনে আমাদের রাজনৈতিক কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। যেমনটি ছিল ৪ আগস্ট ২০১৯ সালের আগে।

গেলো বছরের ৫ আগস্ট কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদার সাংবিধানিক অধিকার বাতিল করে ভারত। জম্মু এবং কাশ্মীরকে ভাগ করে কেন্দ্র শাসিত দুটি অঞ্চলে বিভক্ত করা হয়। মোদি সরকার অসাংবিধানিক আচরণের তীব্র বিরোধিতা করেছে সাধারণ কাশ্মীরী এবং আঞ্চলিক দলগুলোর নেতারা।

বিবৃতিতে ফারুক আবদুল্লাহ এবং মেহবুবা মুফতির মতো কাশ্মীরের সাবেক মুখ্যমন্ত্রীরা স্বাক্ষর করেছেন। বলেন, আর্টিকেল ৩৭০ এবং ৩৫-এ ধারা ফেরাতে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। কাশ্মীর রাজ্যকে আলাদা অঞ্চলে দ্বিখণ্ডিত করার সিদ্ধান্ত আমরা কখনোই মেনে নেবো না। আমরা সর্বসম্মতভাবে আবারো বলছি, আমাদের অধিকার আদায়ের জন্য আমারা ছাড়া, আমাদের সঙ্গে আর কেউ নেই।

কাশ্মীরীদের উপর জবরদস্তি চালানো, তাদের চুপ রাখতে মোদি সরকারের নেয়া নীতির তীব্র নিন্দা জানান তারা। ভারত কাশ্মীরীদের নতুন পরিচয়ে সংজ্ঞায়িত করতে চায়। কেউ যাতে প্রতিবাদ করতে না পারে সেজন্য সবাইকে চুপ রাখতে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। নিরবচ্ছিন্নভাবে নির্যাতন চালানো হচ্ছে কাশ্মীরীদের উপর। বিবৃতিতে বলা হয়।

বিবৃতিতে আরো বলা হয়, আমাদের বিরুদ্ধে চালানো অত্যাচার নিপীড়ন বন্ধে, বিশেষ মর্যাদা, স্বায়ত্তশাসন অখণ্ড রাজ্য পুনরুদ্ধারে ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টার কোনো বিকল্প নেই।

জম্মু এবং কাশ্মীর পাকিস্তান-ভারত উভয় দখল করে আছে। দু’পক্ষ পুরো জম্মু-কাশ্মীরকে নিজেদের বলে দাবি করে। পাকিস্তানের দখল করা অংশ আজাদ কাশ্মীর। ভারতের অংশ জম্মু ও কাশ্মীর। একটি অংশ চীনের দখলে। যা আকসাই চীন নামে পরিচিত।

১৯৪৭ সালে ভারত ভাগের পর ইসলামাবাদ-নয়াদিল্লি তিনবার- ১৯৪৮, ১৯৬৫ এবং ১৯৭১ সালে যুদ্ধে জড়িয়েছে। দু’বার জড়িয়েছে কাশ্মীর নিয়ে।

কাশ্মীরের কয়েকটি গোষ্ঠী ভারতের বিরুদ্ধে জম্মু-কাশ্মীরের স্বাধীনতার জন্য যুদ্ধ করছে। তাদের কেউ কেউ পাকিস্তানের সঙ্গে অন্তর্ভুক্ত হতে চায়।

বেশ কয়েকটি মানবাধিকার সংস্থার তথ্য অনুযায়ী ১৯৮৯ সালে ওই দ্বন্দ্ব শুরুর পর বিভিন্ন সময়ে নির্যাতন, নিপীড়নে এক লাখের মতো মানুষ প্রাণ হারিয়েছে।

গেলো আগস্টে ভারত সরকার তাদের সংবিধান থেকে ৩৭০ ধারা বাতিল করে। যার মাধ্যমে জম্মু-কাশ্মীর স্বায়ত্তশাসন ভোগ করতো। একই সময় বাতিল করা হয় সংবিধানের ৩৫-এর এ ধারা। ওই ধারায় বিশেষ মর্যাদা পেতো কাশ্মীরের বাসিন্দারা। পাশাপাশি জম্মু এবং কাশ্মীরকে কেন্দ্র নিয়ন্ত্রিত অঞ্চল হিসেবে দু’টি অংশে ভাগ করে মোদি সরকার।

তারপর সেখানে কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়। অবরুদ্ধ করা হয় বাসিন্দাদের। বন্ধ করে দেয়া হয় যোগাযোগের সব ব্যবস্থা।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

আপনি আরও পড়তে পারেন