আ’লীগকে ‘চিরতরে বিদায়’ করেই ঘরে ফিরবো, এটাই প্রতিজ্ঞা: আলাল

 

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ রাষ্ট্রের জন্য ‘মাদকের মতো ক্ষতিকর’ মন্তব্য করে দলটিকে চিরজীবনের জন্য ক্ষমতা থেকে বিদায় করে তবেই ঘরে ফেরার দৃঢ় প্রতিজ্ঞা ব্যক্ত করেছেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও যুবদলের সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল।

তিনি বলেছেন, ‘মাদক যেমন মানুষের শরীরের জন্য ক্ষতিকর বাংলাদেশ আওয়ামী লীগও তেমনই স্বাধীন বাংলাদেশ রাষ্ট্রের জন্য ক্ষতিকর। আর একবার এই লড়াইটা করতে হবে, মাদকের মতো ক্ষতিকর আওয়ামী লীগকে দেশ থেকে দীর্ঘ সময়ের জন্য প্রয়োজনে চিরজীবনের জন্য বিদায় নেয়াতে হবে। সেই ব্যবস্থা করেই আমরা ঘরে ফিরবো, এটাই আমাদের প্রতিজ্ঞা।’

বৃহস্পতিবার (৮ অক্টোবর) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে নারী শিশু অধিকার ফোরাম আয়োজিত অবস্থান কর্মসূচিতে তিনি এসব কথা বলেন।

মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, ‘কথা অত্যন্ত পরিষ্কার, যে প্রত্যাশা নিয়ে যে আকাঙ্ক্ষা নিয়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছিল সেই প্রত্যাশা ও আকাঙ্ক্ষা প্রথমেই চূর্ণ-বিচূর্ণ করেছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। যতবার তারা দেশ পরিচালনার দায়িত্ব পেয়েছে প্রতিবারই মানুষের আকাঙ্ক্ষা পদদলিত করেছে।’

তিনি বলেন, ‘১৯৭২, ১৯৭৫ সালে শহীদ মিনারে বোনদেরকে লাঞ্ছিত করেছিল কারা? রাতের আধারে বোনেরা শহীদ মিনারে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছিল। দিনের আলোর জন্য অপেক্ষা করতো তারা, এই ছাত্রলীগ যুবলীগের অত্যাচারে কারণে।

এমনকি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েও এমন কাণ্ড ঘটেছিল। একজন অভিভাবকের স্ত্রীকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। আওয়ামী লীগের সর্বোচ্চ পর্যায়ের চাপে পরে তাকে মুক্ত করা হয়। আজকেও সেই একই ধারাবাহিকতায় আওয়ামী লীগ এগিয়ে চলছে।’

যুদ্ধাপরাধীদের বিচার দাবিতে গণজাগরণ মঞ্চের প্রসঙ্গ টেনে যুবদলের সাবেক এই সভাপতি বলেন, ‘আমরা দেখেছি, শাহবাগে রাতের পর রাত হোটেল কন্টিনেন্টাল ও সোনারগাঁও থেকে খাবার সাপ্লাই করে ও অর্থ সহায়তা দিয়ে তাদেরকে লালন-পালন করা হয়েছিলো।

সেখানে মিছিল হয়েছিল। স্লোগান হয়েছিলো- ‘যুদ্ধাপরাধীর ফাঁসি চাই ফাঁসি চাই’। মাসব্যাপী এ শ্লোগান দিয়ে এমন একটা পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছিল তাতে দেশের আইন ব্যবস্থার কতটা কী হয়েছিল জানিনা, তবে কিছু মানুষের জান চলে গিয়েছিল।

আর সামাজিক যে প্রভাবটি হয়েছিল আজকে সেটাই বড় দুশ্চিন্তার বিষয় বাংলাদেশের সমাজে। মনে করে দেখেন, রশি দিয়ে ফাঁসির প্রতীকী বানানো হয়েছিল। তখন কথিত রাজাকারদের ফাঁসির নামে সেই রশি দিয়ে খেলতে খেলতে আমার যতদূর মনে পড়ে সেই নাটক করতে গিয়ে চার শিশু মারা গিয়েছিল।’

তিনি বলেন, ‘ঘরের মধ্যে যখন শিশুরা ‘ধর্ষণ কী’ প্রশ্ন করে, তার কোনও উত্তর আমরা দিতে পারি না। অর্থাৎ পুরো সমাজ আজ কলুষিত। এজন্য আমি বলি, মাদক যেমন জীবনকে ধ্বংস করে দেয় আওয়ামী লীগ তেমনই মানুষের জীবনকে, মানুষের সম্ভ্রমকে ধ্বংসাত্মক পরিণতি দিয়েছে।

মাদক যেমন ধীরে ধীরে একটি মানুষের জীবনশক্তি এবং সমাজে তার কর্মক্ষমতা সব কেড়ে নেয় আওয়ামী লীগও তেমনই এই স্বাধীন বাংলাদেশের স্বাভাবিক সকল প্রক্রিয়াকে কেড়ে নিয়েছে।
এদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে হবে। আওয়ামী লীগের সভানেত্রী যিনি (শেখ হাসিনা), তাঁকে ওই জায়গা (ক্ষমতার মসনদ) থেকে না সরানো পর্যন্ত এ লড়াই অব্যাহত রাখতে হবে।’

‘নারী ও শিশু অধিকার ফোরাম প্রমাণ করেছে প্রেসক্লাবের সামনে অবস্থান কর্মসূচি করা যায়। প্রেসক্লাবের সামনে জাতীয়তাবাদী শক্তির নেতাকর্মীরা দীর্ঘ সময় বসে থাকতে পারে’- যোগ করেন আলাল।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য, নারী ও শিশু অধিকার ফোরামের আহ্বায়ক বেগম সেলিমা রহমানের সভাপতিত্বে ও সংগঠনের সদস্য সচিব নিপুন রায় চৌধুরীর সঞ্চালনায় অবস্থান কর্মসূচিতে আরও উপস্থিত ছিলেন, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব-উন-নবী খান সোহেল ও ছাত্রদলের সভাপতি ফজল‌ুল রহমান খোকন প্রমুখ।

 

আপনি আরও পড়তে পারেন