বাসায় তৈরি হচ্ছে বিপদজনক প্রেগনেন্সি টেস্ট কিট

নওগাঁতে প্রেগনেন্সি টেস্ট কিট প্রস্তুত করে প্যাকেটজাত করা হচ্ছে। তা সরবরাহ করা হয় ঢাকায়। গত এক বছরের অধিক সময় ধরে স্থানীয়ভাবে এসব কিট প্রস্তুত করে প্যাকেটজাত করা হলেও জানে না ওষুধ প্রশাসন অফিস ও সিভিল সার্জন কর্তৃপক্ষ। কিট প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান বলছে বিভিন্ন অধিদফতর বিষয়টি অবগত রয়েছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, সদর উপজেলার খাস-নওগাঁ মহল্লার হাজী মনছুর সড়কের চকইলাম এলাকার একটি বাসায় প্রেগনেন্সি টেস্ট কিট প্রস্তুত করে প্যাকেটজাত করছেন শ্রমিকরা। কয়েকজন শ্রমিক মিলে প্রতিটি কিট প্লাস্টিকের বক্সে ভরে সেগুলো ছোট ছোট পলিব্যাগে প্যাকিং করছেন। এরপর সেগুলো বড় প্যাকেটে প্যাকেটজাত করে সরবরাহ করা হয়।

কিট প্লাস্টিকের বক্সে ভরার সময় শ্রমিকদের হাতে দেখা যায়নি কোনো গ্লাভস। চোখেও নেই চশমা। তারা খালি হাতেই কাজ করছেন।

সব থেকে অবাক করা বিষয় হলো প্যাকেটের গায়ে লেখা ‘মেড ইন চায়না’ ও ‘টেকনোলজি অব ইউএসএ’। এছাড়া কিট প্রস্তুতের সময় দেয়া হয়েছে ২০২০ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি এবং মেয়াদোত্তীর্ণের তারিখ দেয়া হয়েছে ২০২৫ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি। এসব কিট কতটুকু কার্যকর হবে তা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

স্থানীয়রা বলছেন, প্রতিদিন সকালে এ বাসায় লোকজন আসে। সন্ধ্যার দিকে বেরিয়ে যায়। ওই বাসায় কি হয় তা তারা সঠিক জানেন না। তারা অনেক দিন থেকে ওই বাসায় লোকজন আসা-যাওয়া দেখছেন।

মেসার্স রুবেল-নবীন করপোরেশনের ম্যানেজার গোমাল মোস্তফা বলেন, চায়না থেকে কিট আমদানি করে এখানে প্যাকেটজাত করে ঢাকায় একটি প্রতিষ্ঠানে সরবরাহ করা হয়। প্রতিদিন ১৮ জন শ্রমিক কাজ করেন এখানে। যেখানে প্রায় ৬-৭ হাজার কিট প্রস্তুত করা হয়।

মেসার্স রুবেল-নবীন করপোরেশনের প্রোপ্রাইটর মো. রুবেল আলী বলেন, গত এক বছরের অধিক সময় ধরে এখানে কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। দেশের বাইরে থেকে কিট নিয়ে এসে এখানে প্রস্তুত করে প্যাকেটজাত করে ঢাকার একটি প্রতিষ্ঠানে সরবরাহ করা হয় (হোল সেলার)। তারা দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করেন। আমাদের ডিভাইসটি শতভাগ কার্যকর। আমাদের সব কাগজপত্র সঠিক।

তিনি আরও বলেন, আগামী কয়েক দিনের মধ্যে ঢাকা ড্রাগ অধিদফতর থেকে পরিদর্শন করার জন্য আসবে প্রতিনিধি দল। এরপর অনুমতি দেয়া হলে প্যাকেটে আমাদের প্রতিষ্ঠানের নাম লিপিবদ্ধ থাকবে। স্থানীয় প্রশাসন থেকে শুরু করে সব অধিদফতর বিষয়টি অবগত আছে।

নওগাঁ সিভিল সার্জন ডা. এবিএম আবু হানিফ বলেন, স্থানীয়ভাবে প্যাকেটজাত করার কোনো সুযোগ আছে বলে আমি মনে করি না। এ ব্যাপারে আমি অবগত না।

নওগাঁ জেলা ওষুধ তত্ত্বাবধায়ক তাহমিদ জামিল বলেন, বিষয়টি আমি অবগত না। আপনার মাধ্যমে (সাংবাদিক) অবগত হলাম। শিগগিরই অভিযান পরিচালনা করা হবে।

 

 

 

 

আপনি আরও পড়তে পারেন