করোনায় উদ্যোক্তাদের জ্যাক মার পরামর্শ

স্টার্টআপ বিজনেসের রোল মডেল বা অনুকরণীয় ব্যক্তি জ্যাক মা। বিশ্বের শীর্ষ ধনীদের কাতারে যার নাম সবসময় থাকছে। কখনো উঠে আসছেন শীর্ষ ৩ নম্বরেও। শুধু বিজনেস জায়ান্ট নয়, একজন নেতা হিসেবেও তার জুড়ি নেই। ফরচুন ম্যাগাজিন তাকে এ সময়ে ৫০ জন মহান নেতার একজন হিসেবে আখ্যা দিয়েছে। ফোর্বসের দৃষ্টিতে তো বিশ্বের শক্তিশালী মানুষজনের একজন তিনি। হবু উদ্যোক্তাদের বিষয়ে বেশকিছু পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। তার কোনো না কোনো পরামর্শ তরুণ উদ্যোক্তাদের কাজে লেগে যেতে পারে।

১। সমস্যাকে সুযোগে রূপান্তরিত করা
জ্যাক মা একবার ইন্টারনেটে পানীয় খোঁজ করে দেখতে পান, চীনা কোম্পানির পানীয় সেখানে নেই। কেন ইন্টারনেটে চীনা পানীয় থাকবে না, সেটাই ছিল তার উদ্বেগের কারণ। সেখান থেকে জ্যাক মা বুঝতে পারেন, বাজারে এ জিনিসের ঘাটতি আছে। আর সেই সমস্যা সমাধান করতে গিয়েই তিনি শুরু করেন ‘আলিবাবা’। তার পরামর্শ, আশপাশের পৃথিবীর দিকে চোখ রাখতে হবে। কোথায় অসুবিধা হচ্ছে, মানুষ কী নিয়ে অভিযোগ করছেন, তা অনুধাবন করতে হবে। সমস্যা থেকে বের হয়ে আসতে পারে নতুন উদ্যোগের বিশাল সুযোগ।

২। ভবিষ্যতের দিকে দৃষ্টি দিন 
প্রযুক্তির যুগে মানুষের কাজের প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে উঠছে যন্ত্র। জ্যাক মার পরামর্শ, এমন একটা কিছু খুঁজে বের করতে, যা এসব মেশিনের সমন্বয়ে কাজ করবে। তার ভাষায়, ভবিষ্যৎটা আগেই আন্দাজ করে নিতে হবে।

৩। পণ্য ও সেবা উন্নত করতে হবে
পণ্য ও সেবা উন্নত করার বিষয়ে জ্যাক মা বিশেষ শক্তি বিনিয়োগ করেন। ক্রেতা ও কর্মী—দুপক্ষের প্রতিক্রিয়াকে গুরুত্ব দেয় আলিবাবা। জ্যাক মার মতে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের লাইকও অনেক জরুরি। এই ক্ষুদ্র উপাত্ত থেকে তথ্য নিয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া যায়।

৪। প্রতিযোগিতায় ভয় পেতে নেই
প্রতিযোগিতাকে ভয় পেয়ে পিছিয়ে যাওয়ার পক্ষে নন জ্যাক মা। তার মতে, সামনে এগিয়ে যাওয়ার মনোভাব ধরে রাখতে হবে। কখনোই নিজের চেয়ে শক্তিশালী প্রতিযোগীকে ভয় পাওয়া যাবে না।

৫। বন্ধুর সঙ্গে ব্যবসা নয়
বন্ধুর সঙ্গে ব্যবসা করার চেয়ে যাদের সঙ্গে ব্যবসা শুরু করা হয়েছে, তাদের সঙ্গে ভালো বন্ধুত্ব করতে হবে। জ্যাক মা মনে করেন, ব্যবসা করতে সমমনা মানুষের প্রয়োজন, যে গুণ কাছের মানুষদের মধ্যে না–ও থাকতে পারে।

৬। একগুঁয়ে হওয়া জরুরি
২৪ জন মানুষের মধ্যে হয়তো একজন মানুষ বিশ্বাস করবে, তা-ও লেগে থাকতে হবে। জ্যাক মা যখন ইন্টারনেটে ব্যবসা করতে চেয়েছিলেন, তখন তার একজন মাত্র বন্ধু পরিকল্পনাটা সম্ভব মনে করেছিলেন। মা যদি সংখ্যাগরিষ্ঠের কথা বিশ্বাস করে থেমে যেতেন, তাহলে ব্যাপারটা কেমন হতো।

৭। কৌতূহল ভালো
১৯৯৪ সালে জ্যাক মার বয়স ৩০ বছর, তখন তিনি কলেজশিক্ষক। সে সময় তিনি যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার সুযোগ পান এবং ইন্টারনেটে ব্যবসার বিষয়টি তখনই তার মাথায় আসে। তিনি বন্ধু ও সহকর্মীদের এটি বোঝানোর চেষ্টা করেন। কেউই তখন বুঝতে না পারায় মা একাই চেষ্টা চালিয়ে যান। চেষ্টায় সফলতা এসেছে, দুবার বিফল হওয়ার পর ঠিকঠাক দাঁড়িয়ে যায় আলিবাবা।

আপনি আরও পড়তে পারেন