শীতের আগমনে লেপ তোষকের করিগরদের ব্যস্ততা

শীতের আগমনে লেপ তোষকের করিগরদের ব্যস্ততা

বানাই লেপ তোষক
লেপ তোষকের করিগরদের ব্যস্ততা বেড়ে গেছে/ ধুম পড়েছে লেপ তোষক তৈরির/ লেপ তোষক তৈরিতে ব্যস্ত কারিগররা বেড়েছে লেপ-তোষক কারিগরদের ব্যস্ততা
ইমেইলে ছবি আছে
নজরুল ইসলাম লিখন, রূপগঞ্জ ঃ গ্রীস্মের বিদায়ে শীতের আগমনী ঠান্ডা হাওয়া বইতে শুরু করেছে রূপগঞ্জে। শীতের আগমনী বার্তা দিচ্ছে আবহাওয়া। দিনে কিংবা রাতের প্রথমাংশে বেশ গরম কিংবা শীত অনুভূত না হলেও মাঝ রাতে ঠিকই কাঁথা মুড়িয়ে শুইতে হয়। দিনে দিনে শীত আরো বৃদ্ধি পাবে। শীত নিবারনের জন্যে মানুষ নতুন পুরাতন কাপড় কেনার জন্য দোকানগুলোতে ভিড় করছে। তাছাড়া শীতের কবল থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্যে উষ্ণতা ছড়াতে প্রাচীন কাল থেকেই লেপ, তোষক ও কম্বলের জুড়ি নেই। তাই এ সময়ে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে রূপগঞ্জের লেপ তোষকের কারিগররা। উপজেলার বিভিন্ন হাটে-বাজারে গিয়ে দেখা যায়, কারিগররা আপন মনে কাজে ব্যস্ত। কাজের ফাঁকেই চলছে ক্রেতাদের সাথে দরদাম কষাকষি।
তাদের অভিযোগ মালিকরা তাদের(কারিগরদের) কম মজুরি দিয়ে কাজ করিয়ে নেন। আর মালিকরা বলেন, দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির সাথে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে তুলা ও কাপড়ের দাম। আর তাই ব্যবসায় তেমন একটা লাভ হচ্ছে না। উপজেলার প্রতিটি এলাকাতেই দেখা গেছে, লেপ তোষক তৈরির কারখানাগুলোতে কারিগরদের দম ফেলার ফুসরত নেই। কারিগররা তুলার স্তুপ করে তার উপর ধনুক দিয়ে আঘাত করে চলছেন। পুরো প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হলে সেই তুলা ঢোকানো হতে থাকে রঙ বে-রঙের কাপড়ের তৈরি লেপ তোষকের কভারে। এরপর শুরু হয় সুই সুতার কাজ। কভার ও তুলা ভেতরে ঢোকানো তুলা ভেদ করে খসখস শব্দ করে চলতে থাকে সুই। সুই সুতার গাঁথুনিতে বাঁধা পড়ে যায় সেই কভার আর তুলা। এতেই তৈরি হয়ে যায় এক একটি লেপ তোষক।
গোটা দেশের মতো রূপগঞ্জের প্রতিটি এলাকাতেই লেপ তোষকের কারখানা ও দোকানে শীতের শুরুতে শীত বরণের প্রস্তুতি চলছে। সময়ের পরিবর্তনের সাথে সাথে নিত্য-নতুন অনেক ধরনের শীত বস্ত্র বাজারে থাকলেও লেপ ও তোষক ব্যবহারে বাড়তি আগ্রহ রয়েছে সবার মাঝেই। কারণ প্রাচীন কাল থেকেই চলে আসছে লেপ তোষকের ব্যবহার। রূপগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় হাটে-বাজারে রয়েছে লেপ তোষকের শতাধিক কারখানা ও দোকান। এছাড়াও ফেরি করে গ্রামে গ্রামে তৈরি করা হচ্ছে লেপ তোষক। প্রতিদিন সকাল থেকে শুরু করে গভীর রাত পর্যন্ত কারখানা বা দোকানগুলোতে লেপ তোষক তৈরির কারিগররা কাজ করছেন। তাদের ধম ফালানোর ফোসরত নেই। লেপ তোষক তৈরির কারিগর আবুল হোসেন জানান, এখন হাতে বেশ কাজ আছে। আয়ও হচ্ছে ভাল। মুড়াপাড়া বাজারের দোকানদার কাশেম মিয়া জানান, এখন প্রতিদিন কারখানায় ১০ থেকে ১২ টি লেপ তৈরি হচ্ছে। সারা বছর তেমন একটা কাজ না হলেও এখন শীতের মৌসুম, তাই ভালই রোজগার হচ্ছে। তাছাড়া শীত জুরেই কাজ থাকে। তবে শীত আরো বাড়লে কাজ আরো বাড়বে বলে তিনি আশা করছেন। বিভিন্ন দোকান ঘুরে দেখা গেছে, বিভিন্ন তুলার দাম গার্মেন্ট তুলা ৭০/৮০ টাকা, ফোম তুলা ২০০ টাকা, শিমুল তুলা ৫০০/৬০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। শীত ঘনিয়ে এলে দাম আরো বাড়বে বলে দোকান মালিকরা জানান। বর্তমানে তুলার বাজার ধরে ৫ হাত বাই ৬হাত একটি তোষকের খরচ পড়ে ১২শ’ থেকে ১৫শ’ টাকা। ৫ হাত বাই ৬ হাত একটি লেপের দাম পড়ে দেড় হাজার থেকে দুই হাজার টাকা।  শিমুল তুলা হলে এ খরচ বেড়ে আরো তিন গুন হবে। এ কারণে স্বল্প আয়ের লোকেরা শিমুল তুলা এড়িয়ে চলেন। শীতকে সামনে রেখে বাজারের দোকানগুলোর সাথে পাল্লা দিয়ে পাড়ায় পাড়ায় ঘুরছে ফেরিওয়ালারাও।

তারিখ ঃ ১৭.১০.২০ ইং
নজরুল ইসলাম লিখন
রূপগঞ্জ প্রতিনিধি

আপনি আরও পড়তে পারেন