চাঁপাইনবাবগঞ্জের মহারাজপুরে যৌতুকের টাকা না পেয়ে গৃহবধূকে নির্যাতন ও চুল কেটে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে স্বামীর বিরুদ্ধে। গত বুধবার বিকালে মহারাজুপুর ইউনিয়নের পিয়নপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর মডেল থানায় স্বামী রবিউল ইসলাম, শ্বশুর ইসরাফিল শেখ ও শাশুড়ি জাইলি বেগমকে আসামি করে বৃহস্পতিবার সদর মডেল থানায় একটি মামলা করেছেন নির্যাতিত ওই গৃহবধূ। পুলিশ শাশুড়ি জাইলি বেগমকে গ্রেপ্তার করলেও স্বামী রবিউল ও শশুর ইসরাফিল শেখ পলাতক রয়েছেন।
মামলার নথি, নির্যাতিত গৃহবধূ ও তার পরিবার সূত্রে জানা গেছে, পরিবারের সম্মতিতে পাঁচ বছর আগে একই গ্রামের রবিউলের সঙ্গে বিয়ে হয় ওই গৃহবধূর। বিয়ের কিছুদিন যেতে না যেতেই দুই লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন রবিউল ও তার পরিবার এবং নানা সময়ে চাপ দিতে থাকে। মেয়ের সুখের কথা চিন্তা করে ৫০ হাজার টাকা দেয় ওই নির্যাতিত গৃহবধূর পরিবার। কিন্তু বাকি টাকার জন্য বিভিন্ন সময়ে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতে থাকেন রবিউল।
নির্যাতিত গৃহবধূর অভিযোগ, বিভিন্ন সময়ে নানা অযুহাতে টাকার দাবিতে রাতে বাসায় ফিরে মাদকাসক্ত হয়ে তাকে মারধর করতেন তার স্বামী। নির্যাতনের কারণে দীর্ঘদিন ধরেই বাবার বাড়িতে অবস্থান করেন। গত বুধবার শ্বশুর বাড়িতে গেলে সারাদিন কথা শোনায় শ্বশুর-শাশুড়ি ও স্বামী।
গৃহবধূ বলেন, আমার দিনমজুর বাবার পক্ষে বাকি দেড় লাখ টাকা দেয়া সম্ভব নয় জানালে ওই দিন বিকালে শ্বশুর-শাশুড়ির যোগসাজসে আমাকে মারধর করে এবং এক পর্যায়ে কাঁচি দিয়ে চুল কেটে দেয় আমার স্বামী। এমন অমানবিক নির্যাতনের পর আমি বাবার বাড়ি চলে আসি এবং বৃহস্পতিবার থানায় মামলা করি। আমি অমানবিক এ ঘটনার বিচার চাই।
নির্যাতিত ওই গৃহবধূর বাবা এমরাজ শেখ বলেন, বিয়ের পর থেকেই আমার মেয়েকে যৌতুকের টাকার জন্য মারধর করতেন জামাই রবিউল। কয়েকবার মেয়েকে নিয়ে চলেও এসেছি। কিন্তু বারবার অনেক অনুরোধের পর এবং নির্যাতন না করার প্রতিশ্রুতি দিলে মেয়েকে আবার শ্বশুর বাড়ি পাঠাই। মেয়ের সুখের কথা ভেবে ধারদেনা করে ৫০ হাজার টাকাও ব্যবস্থা করে দিয়েছি। কিন্তু মেয়ের শশুর বাড়ির লোকজন আরও দেড় লাখ টাকা চায়। সেই টাকা না দিতে পারায় আমার মেয়ের সঙ্গে এমন অমানবিক আচরণ করে তার শশুর বাড়ির লোকজন ও জামাই রবিউল। এ ঘটনার বিচার চাই আমি।
পলাতক থাকায় রবিউল ও তার পরিবারের কারো সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
তবে সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোজাফফর হোসেন জানান, বৃহস্পতিবার বিকালে নির্যাতিত ওই গৃহবধূ তার স্বামী, শ্বশুর-শাশুড়িকে আসামি করে মামলা করেন। পরে রবিউলের মা জাইলী বেগমকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ঘটনার তদন্তকাজ ও বাকি আসামিদের আটকের চেষ্টা চলছে।