হার্ট সুস্থ রাখতে ‘নিরামিষ মাংস’

আমরা নানা রকম ক্ষতিকারক প্রোটিন খেয়ে থাকি যাতে আমাদের শরীরের ক্ষতি হয়। তবে এমন এক প্রোটিন রয়েছে যাকে পুষ্টিবিদ রেশমি রায় চৌধুরী ‘নিরামিষ মাংস’ বলে আখ্যা দিয়েছেন। আর সেটা হলো সয়াবিন। তবে প্রসেস করা নয়, খেতে হবে সবুজ বিনস বললেন পুষ্টিবিদ রেশমি রায়চৌধুরী। যে কোনও খাবার প্রসেস করা হলে তার পুষ্টিগুণ অনেকটাই কমে যায়। তবে সয়াবিনের দানা রান্না করে খেলে একই পুষ্টিগুণ মিলবে।

প্রোটিনের দিক থেকে বিচার করলে সয়াবিনকে মাংসের সঙ্গে তুলনা করা হয়। ‘নিরামিষ মাংস’ও বলা হয়। মাংস খাবার পরিমাণ কিছুটা কমিয়ে তার সঙ্গে সয়াবিন খেলে এর ফাইবার ও ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড একদিকে বিপাকের হার দ্রুত করার পাশাপাশি শরীরে কোলেস্টেরল জমতে বাধা দেয়।

সয়াবিনে আছে আইসোফ্ল্যাভেন ও লেসিথিন নামক দুটি অত্যন্ত পুষ্টিকর উপাদান থাকে যা আমাদের হার্ট ভালো রাখতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নেয়। আর আছে পর্যাপ্ত পরিমাণে ফাইবার। ১০০ গ্রাম সয়াবিনে প্রায় ৩০ মিলিগ্রাম আইসোফ্ল্যাভেন নামক ফ্ল্যাভোনয়েড থাকে। এই দুটি উপাদান হার্টের কার্যক্ষমতা ও সহনশীলতা বাড়াতে সাহায্যে করে। এর মধ্যে আবার আইসোফ্ল্যাভেন অত্যন্ত জোরালো ফাইটো-ইস্ট্রোজেন।

ত্বক চুল-সহ সামগ্রিকভাবে সৌন্দর্য বজায় রাখতেও এই উদ্ভিজ্জ ইস্ট্রোজেনের উৎস অত্যন্ত উপযোগী। ঋতুনিবৃত্তির পর মহিলাদের শরীরে ইস্ট্রোজেনের অভাবজনিত সমস্যার মোকাবিলা করতে নিয়ম করে সয়াবিন খাওয়া উচিত, পারমর্শ রেশমির। আবার লেসিথিন সরাসরি হার্টের সুস্বাস্থ্য রক্ষা করতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নেয়।

আমেরিকার ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব হেলথের গবেষণায় প্রকাশ, সয়াবিনের দানা বা বিনস প্রত্যক্ষ ভাবে মোটে ৩ শতাংশ এলডিএল ও ট্রাইগ্লিসারাইড কমাতে পারে। কিন্তু পরোক্ষভাবে সয়াবিন এইচডিএল ও এলডিএলের ভারসাম্য রক্ষা করতে পারে।

বিশেষ করে যারা ইতিমধ্যে উচ্চ রক্তচাপে ভুগছেন তাদের হার্টের রক্তবাহী ধমনির মধ্যে অ্যাথেরোস্ক্লেরোসিসের (অর্থাৎ ধমনির মধ্যে কোলেস্টেরলের পলি জমে রক্ত চলাচল কমে যাওয়া) মোকাবিলায় উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নেয়। তাই পুষ্টিবিজ্ঞানীরা ইতোমধ্যে লেসিথিনকে অত্যন্ত প্রয়োজনীয় ডায়েটারি সাপ্লিমেন্টের তকমা দিয়েছেন। তবে রেশমি জানালেন, সাপ্লিমেন্টের বদলে সরাসরি সয়াবিন থেকে এই নিউট্রিয়েন্টস শরীরে গেলে বেশি কার্যকর হয়। এই বিশেষ উপাদানটি ফ্যাট মেটাবলিজমেও উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নেয়।

আপনি আরও পড়তে পারেন