বিরামপুরে করোনা সংকটের দুঃসময়ে আশা’র ঋণ খেলাপীর মামলায় আটক অসহায় গৃহবধূ

বিরামপুরে করোনা সংকটের দুঃসময়ে আশা'র ঋণ খেলাপীর মামলায় আটক অসহায় গৃহবধূ
বিরামপুরে করোনা সংকটের দুঃসময়ে আশা’র ঋণ খেলাপীর মামলায় আটক অসহায় গৃহবধূ
মোঃ শাহ্ আলম মন্ডল, বিরামপুর (দিনাজপুর) প্রতিনিধিঃ
বৈশ্বিক মহামারি করোনা ভাইরাসের প্রকোপ দেশ থেকে এখনো বিদায় নেয়নি। আবিস্কৃত হয়নি কার্যকরি কোন ভ‍্যাকসিন বা প্রতিষেধক। এরই মধ‍্যে দেশের কিছু এলাকায় বন‍্যা ও অতিবৃষ্টির কারণে অনেক ফসল নষ্ট হয়েছে। করোনা দূর্যোগে দূর্বার গতিতে এগিয়ে চলা দেশের অর্থনৈতিক শক্তি বর্তমানে কিছুটা বিপর্যস্ত। সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষের আয়-রোজগার কমে গেছে। অথচ থেমে নেই ঋণ প্রদানকারী এনজিও তথা বেসরকারি সংস্থাগুলোর দৌরাত্ম্য। আর্থিক দূরাবস্থা ও সংকটের কারণে ঠিকমত গৃহীত ঋণের কিস্তি দিতে না পারায় প্রতিনিয়ত কিছু এনজিও কর্মকর্তা ও কর্মচারিদের দ্বারা হয়রানি সহ অপমান ও অপদস্ত হতে হচ্ছে অভাবগ্রস্ত ঋণ গ্রহিতাদের। এমনকি মামলার স্বীকার হতে হচ্ছে অনেককেই।

একদিকে বর্তমান সরকার নারীদের উন্নয়ন ও কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে বদ্ধপরিকর হয়ে কাজ করে যাচ্ছে। অপরদিকে ঋণ প্রদানকারী কিছু এনজিও’র কারণে তা কিছুটা হলেও বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
এমনই এক ঘটনা ঘটেছে দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলায়। জানা গেছে, বিরামপুর পৌর শহরের কৃষ্টচাঁদপুর মহল্লার মিস্টার রহমানের স্ত্রী মাছুরা বেগম ২০১৮ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর ‘আশা’ নামক এনজিও’র বিরামপুর শাখা হতে ১বছর মেয়াদে ৭০ হাজার টাকা ঋণ গ্রহণ করে সুদ সহ ঋণের কিস্তি দিতে থাকে। কিন্তু স্বামীর অসুস্থতা ও পরিবারের অভাব-অনটনের কারণে নির্ধারিত মেয়াদের মধ‍্যে পুরো টাকা পরিশোধ করতে পারেনি। গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে ঋণ পরিশোধের মেয়াদ শেষ হবার পরে সুদ সহ তার ৩৬ হাজার ৯শত ৭৩ টাকা জের থাকে। মেয়াদ শেষের মাত্র ৩ মাস পরেই চলতি বছরের ১৬ই জানুয়ারি এনজিও ‘আশা’ কর্তৃক ঋণ গ্রহিতার নামে আদালতে মামলা দায়ের করা হয়। মামলা নং- ১২৩সি/২০২০। এরই প্রেক্ষিতে বর্তমান করোনা ক্রান্তিলগ্নে আদালত থেকে ওয়ারেন্ট জারি হওয়ায় বিরামপুর থানা পুলিশ বৃহস্পতিবার (২২ অক্টোবর) মাছুরা বেগমকে গ্রেফতার করে আদালতে প্রেরণ করে।
এ বিষয়ে এনজিও আশা’র বিরামপুর শাখা ম‍্যানেজার মশফিকুর রহমান ও আঞ্চলিক ম‍্যানেজার আনিসুর রহমানের সাথে কথা বললে  দায়সারাভাবে তারা জানান, আমরা বুঝতেই পারিনি কখন মাছুরা বেগমের নামে ওয়ারেন্ট জারি হয়েছে। কর্মকর্তাদের এমন হেয়ালীপনা বক্তব্য জনমনে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করবে। কারণ করোনাকালীন এ দুঃসময়ে ক্ষুদ্র ঋণের নামে বেসরকারি সংস্থাগুলোর অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রচেষ্টা মড়ার উপর খরার ঘাঁ হয়ে দেখা দিচ্ছে কিনা?
মোঃ শাহ্ আলম মন্ডল
প্রতিনিধি
বিরামপুর, দিনাজপুর।

আপনি আরও পড়তে পারেন