ছাত্রীর ওড়না ধরে ‘টানাটানি’ করা সেই শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা

ছাত্রীর ওড়না ধরে ‘টানাটানি’ করে কান ধরে ওঠবস এবং ছাত্রীর পা ধরে ক্ষমা চাইতে বাধ্য হওয়া সেই শিক্ষক মিজানুর রহমান সজলের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির মামলা করা হয়েছে।

গতকাল বুধবার বরিশাল মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলাটি দায়ের করেন ওই ছাত্রীর স্বামী ইমতিয়াজ ইমন। এর আগে শিক্ষক মিজানুর কান ধরে ওঠবস করানোর ঘটনায় এই ছাত্রী ও তার স্বামীর বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেছিলেন।

পরে আদালতের বিচারক আনিছুর রহমান মামলাটি আমলে নিয়ে তদন্তের জন্য বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত (ওসি) কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছেন। যৌন হয়রানি করার অভিযোগ ওঠা শিক্ষক মিজানুর রহমান সজল পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার বাসিন্দা ও বরিশালের জমজম ইনস্টিটিউটের সাবেক শিক্ষক।

মামলায় বাদী উল্লেখ করেন, পটুয়াখালী ডিডব্লিউএফ ও বরিশাল জমজম ইনস্টিটিউটে কর্মরত থাকা অবস্থায় মিজানুর রহমান সজল বিভিন্ন ছাত্রীদের পরীক্ষায় অকৃতকার্য করিয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে যৌন হয়রানি করে আসছিলেন।

এই ধরনের নানা অভিযোগের ভিত্তিতে বরিশাল জমজম ইনস্টিটিউট কর্তৃপক্ষ তাকে ওই প্রতিষ্ঠান থেকে চাকরিচ্যুত করে। গত ২৫ আগস্ট শিক্ষক মিজানুর রহমান সজল নগরীর গোরস্থান রোড এলাকায় বাদীর স্ত্রী জমজম নাসিং ইনস্টিটিউটের ছাত্রীকে একা পেয়ে আপত্তিকর কথা বলেন এবং তার ওড়না ধরে টানাটানি করেন।

এ ছাড়া বিষয়টি কাউকে জানালে ওই ছাত্রীকে পরীক্ষায় ফেল করানো হবে এবং তার ছবি এডিট করে অশ্লীল ছবির সঙ্গে সংযুক্ত করে ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ারও হুমকি দেন অভিযুক্ত শিক্ষক। শুধু তাই নয়, ভুক্তভোগী ছাত্রীকে ধর্ষণেরও হুমকি দেন তিনি।

প্রসঙ্গত, ওই ছাত্রীকে যৌন হয়রানি করার দায়ে মিজানুর রহমান সজলকে সেদিন ঘটনাস্থলেই কান ধরিয়ে ওঠবস ও ছাত্রীর পা ধরে ক্ষমা চাওয়ানো হয়। আর এ ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে দেশব্যাপী আলোচনা শুরু হয়।

এ নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে তখন সংবাদ প্রকাশিত হয় এবং ওই ঘটনায় শিক্ষক মিজানুর রহমান বরিশাল কোতোয়ালি থানায় মামলা করেন। গত ১৫ সেপ্টেম্বর শিক্ষক সজলের দায়ের করা মামলায় মোট সাত-আটজনকে আসামি করা হয়। মামলার প্রধান ও দ্বিতীয় অভিযুক্তরা হলেন শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগে আদালতে দায়ের করা মামলার বাদী ইমতিয়াজ ইমন ও তার স্ত্রী।

এ বিষয়ে আদালতে দায়েরকৃত মামলার আসামি এবং কোতোয়ালি থানায় দায়ের করা মামলার বাদী মিজানুর রহমান সজল বলেন, ‘আমার দায়ের করা মামলা থেকে নিজেদেরকে রক্ষা করার কৌশল হিসেবে উল্টো আমার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে। ওই ছাত্রী কেন, অন্যান্য ছাত্রীদের আমি কখনই যৌন হয়রানি করিনি।’

এ বিষয়ে কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি নুরুল ইসলাম বলেন, ‘শিক্ষককে কান ধরে ওঠবস করানো এবং তা ভিডিও করে ছড়িয়ে দেওয়ার মামলা তদন্ত চলছে। আবার কেউ যদি তার (মিজানুর) বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করে তাহলে বিচারকের নির্দেশ অনুযায়ী আমরা ব্যবস্থা নেব।’

আপনি আরও পড়তে পারেন