বরাবরই হলিউডের চক্ষুশূল ট্রাম্প

‘ইউ রেকলেস মোরন’। ঠিক এ ভাষায় ছিল টুইট। কাছাকাছি বাংলা ‘বেপরোয়া নির্বোধ তুমি’। টুইটটি করেছিলেন ‘ক্যাপ্টেন আমেরিকা’ ক্রিস ইভান্স। ‘প্রেসিডেন্ট অফ দ্য ইউনাইটেড স্টেটস অফ আমেরিকা’ ডোনাল্ড ট্রাম্পকে।

সেটা ২০১৭ সালের অগস্টের ঘটনা। তবে এই চার বছরে মেজাজটা তেমন বদলায়নি। অন্তত হলিউডের তো বটেই। ট্রাম্প সম্পর্কে হলি-সেলেবদের অ্যালার্জি ছিল, আছে, যেটা আরো স্পষ্ট হয়ে গেলো এবারের ‘ঐতিহাসিক’ ভোটে।

অভিনেতা-অভিনেত্রীরা তো বটেই, ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে সরাসরি মুখ খুলেছিলেন জনপ্রিয় গায়ক-গায়িকারাও। কেউ প্রচারে বেরোন প্রতিদ্বন্দ্বী ডেমোক্র্যাট জো বাইডেনের সঙ্গে। কেউ আবার সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, ট্রাম্প জিতলে চলে যাবেন আমেরিকা ছেড়ে।

সেলেবদের ট্রাম্প বিরোধিতায় সম্ভবত সবচেয়ে বেশি আলোচনায় ছিলেন লেডি গাগা। পেনসিলভ্যানিয়ায় লেডি গাগা প্রচারে নামেন ডেমোক্র্যাটদের হয়ে। ট্রাম্পের সোশ্যাল মিডিয়া টিম এরপরই তুলোধোনা করতে থাকে গ্র্যামি জয়ী গায়িকাকে।

অবশ্য ট্রাম্প নিজেও কম যাননি। পেনসিলভ্যানিয়ার আভোকাতে ‘মেক আমেরিকা গ্রেট এগেন’ শীর্ষক প্রচার সভায় সরাসরি নাম নিয়ে লেডি গাগার সমালোচনা শুরু করেন। বলেন, লেডি গাগা ভালো নন। তার অনেক কথা জানি। সে সব গল্পও আপনাদের বলতে পারি।

একই ভাষণে ট্রাম্প টেনে আনেন রক গায়ক জন বন জোভিকে। এমনিকে বিয়ন্সেকেও। বিয়ন্সেও ঘোষিত ট্রাম্প বিরোধী।

গায়ক-গায়িকাদের তরফে ট্রাম্পের সরাসরি সমালোচনা করেন রিকি মার্টিন আর ব্রুস স্প্রিংস্টেন। দু’জনেই বলেন, ট্রাম্প জিতলে আমেরিকা ছেড়ে চলে যাবেন। ব্রুস গন্তব্য স্থির করে নিয়েছেন-অস্ট্রেলিয়া। আর রিকি মার্টিন বলেছিলেন, লাতিন আমেরিকানদের একটা অংশ ট্রাম্পকে ভোট দিচ্ছেন এটা বেশ ‘ভয়ের’। তিনি চেয়েছিলেন, লাতিন আমেরিকানরা নিজেদের স্বার্থেই ভোট দিন বাইডেনকে।

হলিউডের গায়ক-গায়িকাদের বড় অংশকেই পাশে পাননি ডোনাল্ড ট্রাম্প। প্রথম থেকেই। গত নির্বাচনে রিপাবলিকানদের সভায় ব্যবহার হয়েছিল আডেলের গান। গ্র্যামি জয়ী গায়িকা, সঙ্গে সঙ্গে সোশ্যাল মিডিয়ায় তীব্র বিরোধিতা করেন। হুমকি দেন মামলা করারও।

জেনিফার লরেন্সের মতো প্রথম সারির হলিউড নায়িকা গতবার ট্রাম্পের জেতার খবরে বলেছিলেন, আমি আমাদের গণতন্ত্রকে সমর্থন করতে চাই। কিন্তু নির্বাচনের ফল আমায় হতাশ করেছে।

শরণার্থী প্রসঙ্গে জর্জ ক্লুনির মতো সিনিয়র অভিনেতা প্রকাশ্যেই ট্রাম্পের বিরোধিতা করেছিলেন। ক্লুনির অভিযোগ ছিল, সন্ত্রাসবাদী আর শরণার্থীর গুলিয়ে দিতে চাইছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। তাকে সমর্থন করা যায় না।

ক্লুনির মতো ট্রাম্পের খোলাখুলি সমালোচনা করেন শাকিরাও।

এবার প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হয়েছিলেন কাইনে ওয়েস্ট। রিয়েলিটি টিভি স্টার, মডেল কিম কার্দাশিয়ানের বর। কিম বরের জন্য তেমন উঠেপড়ে প্রচারে না নামলেও, ট্রাম্পকে বিঁধেছেন বেশ কয়েকবার। এক পত্রিকায় সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে বলেই দিয়েছিলেন, এই লোকটার চেয়ে যে কেউ ভালো আমেরিকা চালাতে পারবে। মনে হয়, আমার মেয়েও বেশি উপযুক্ত।

গোল্ডেন গ্লোবের মঞ্চে জীবনকৃতি পুরস্কার নেওয়ার সময় মেরিল স্ট্রিপের বক্তৃতা হয়তো এখনো অনেকের মনে থাকবে। ‘ওই একটা লোক জেতায়, আমরা সকলেই হেরেছি’, বলেছিলেন হলিউডের অসংখ্য মাইলফলক ছবির নায়িকা।

আপনি আরও পড়তে পারেন