আদমদীঘিতে বিদ্যুতের সংযোগের অভাবে বসবাস অনুপযোগী হয়ে পড়েছে আশ্রয়ন প্রকল্প

আদমদীঘিতে বিদ্যুতের সংযোগের অভাবে বসবাস অনুপযোগী হয়ে পড়েছে আশ্রয়ন প্রকল্প

মোঃ আহসান হাবিব শিমুল(আদমদীঘি প্রতিনিধি)

বগুড়ার আদমদীঘিতে আশ্রয়ন পল্লীতে প্রায় ২ বছর পূর্বে বিদ্যুতের খাম্বা বসানো হয়েছে এবং ৬ মাস পূর্বে প্রতিটি বাড়ি পর্যন্ত তার টানা হয়েছে। কিন্তু বিদ্যুত সংযোগ দেওয়া হয় নি। বিদ্যুৎ না থাকায় বাড়ি বরাদ্দ পাওয়াদের অধিকাংশই প্রচন্ড গরমে সেখানে বসবাস করেন না। ফলে বাড়ি গুলো ছেয়ে গেছে আগাছায়।

জানা গেছে, বঙ্গবন্ধু কন্যা, মানবতার মা উপাধী অর্জন করা প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৬ সালে প্রথমবার প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হবার পর ভূমিহীন, গৃহহীন, দুর্দশাগ্রস্থ এবং ছিন্নমূল মানুষদের জন্য দেশজুড়ে আশ্রয়ন প্রকল্প গ্রহন করেন। এরই ধারাবাহিকতায় বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলাতেও একাধিক আশ্রয়ন পল্লী করা হয়েছে। এর মধ্যে উপজেলার চাঁপাপুর ইউনিয়নের বন্তইর আশ্রয়ন প্রকল্প একটি। বন্তইর গ্রামে অবস্থিত উপজেলার সব চেয়ে বড় খাসপুকুর শাঁসকারদীঘি বা বড়পুকুর এর উত্তর পাড়ে গড়ে তোলা হয়েছে এ আশ্রয়ন পল্লী। বাড়ি দেওয়া হয়েছে ৫০ জন গৃহহীন পরিবারকে।

সরেজমিন দেখা হয় ২৩ নং বাড়ির সাইদুর রহমান, ১৯ নম্বরের ওসমান আলী, ২০ নম্বরের শহিদুল ইসলাম, ২৪ নম্বরের রেজাউল ইসলাম, ১৭ নম্বরের শাপলা বেগম, ২৭ নম্বরের মানিক হোসেন, ১১ নম্বরের সেজাদুল ইসলাম, ১২ নম্বরের আমজাদ হোসেন এবং ৭ নম্বরের রওশন আরা বেগমের সাথে। এদের কেউ বাঁশের কুঠির শিল্প, কেউ কৃষি শ্রমিক, কেউবা ভ্যান চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন। তারা জানান, এই পল্লীর বাড়ির সংখ্যা ৫০ টি। কিন্ত ঘুরে ঘুরে দেখা গেল অধিকাংশ বাড়ি রয়েছে তালাবদ্ধ। এর কারন হিসাবে তারা জানান বিদ্যুৎ না থাকার কথা। তাদের মতে মাথা গোঁজার বিকল্প কোন ব্যবস্থা না থাকা ১৫/১৬ টি পরিবার কঠিন গরম সহ্য করে বসবাস করছেন।

২৩ নম্বর বাড়ির গভীর মেঝে মাটি কেটে ভরাট করছেন সাইদুর রহমান। তিনিসহ সেখানে উপস্থিত সকলে দাবী করেন প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি সিমেন্টের খুঁটি পুতে মাটি থেকে প্রায় ৭/৮ ফুট উঁচুতে টিনের বেড়া ও টিনের ছাউনি দিয়ে ঘর নির্মান করে। কিন্তু ঘরের মেঝে ও আঙ্গিনা ভরাট না করেই আমাদের নিকট হস্তান্তর করে। ফলে বাড়ি পেলেও বসবাস করার উপায় ছিল না। পরে আমরা প্রায় ২০ হাজার টাকা ব্যয় করে মাটি ভরাট করেছি। বড় অংকের টাকা খরচের বিপরীতে প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি থেকে আমাদের দেওয়া হয়েছে মাত্র ২ হাজার টাকা করে। এদিকে, এখনো বরাদ্দ বাড়ির জমির মালিকানা সত্ত্বের দলিল, কবুলিয়ত সম্পাদন, রেজিস্ট্রি এবং নামজারী করে দেওয়া হয় নি। ফলে যে কোন সময় যে কোন কারনে তাদের বরাদ্দ বাতিল হবার আশঙ্কা করছেন।

বিদ্যুতের সব কাজ করার পরও সংযোগ না দেওয়ার কারন জানতে চাইলে পল্লী বিদ্যুৎ দুপচাঁচিয়া এরিয়ার ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার মোঃ মনোয়ারুল ইসলাম ফিরোজী বলেন, আদমদীঘি উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে ওই বাড়িগুলোকে বিদ্যুৎ ব্যবহার উপযোগী করা তথা বিদ্যুতের ওয়ারিং করার জন্য প্রায় ৬ মাস পূর্বে চিঠি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কাজটি সম্পন্ন করা হয় নি। ফলে সংযোগ দেওয়া যাচ্ছে না।

এ ব্যাপারে আদমদীঘি উপজেলা নির্বাহী অফিসার সীমা শারমিনের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি অল্প কিছু দিন হল এই উপজেলায় যোগদান করেছি, খোঁজ নিয়ে দ্রুত সমস্যা সমাধানের ব্যবস্থা গ্রহন করব। অপর দিকে উপজেলার কুন্দুগ্রাম ইউনিয়নের তিলছ (শিববাটি) আশ্রয়ন পল্লীর বাড়িগুলো বসবাস অনুপযোগী হয়ে গেছে এবং বাড়ি ও রাস্তা ভেঙ্গে জলাশয়ের মধ্যে মিশে যাচ্ছে বলেন জানিয়েছেন ওই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এস,এম, বেলাল হোসেন।

আপনি আরও পড়তে পারেন