গোল্ডেন মনিরের ‘গডফাদার প্রতিমন্ত্রী’কে ধরা হবে কবে?

হাজার কোটি টাকা আর রাজউকের দুই শতাধিক প্লট বাগিয়ে নেয়া গোল্ডেন মনিরের গডফাদার কারা? সোনা চোরচালান, গাড়ির ব্যবসার আড়ালে অবৈধ ব্যবসা আর জালিয়াতি করে রাজউকের প্লট বাগানো কি তার একার ক্ষমতায় হয়েছে? এরইমধ্যে বর্তমান সরকারে একজন প্রতিমন্ত্রী এবং কয়েকজন সংসদ সদস্যের নাম এসেছে। তবে তার উত্থান পর্বে বিএনপি-জামায়াত জোট শাসনামলের মন্ত্রী এমপিদের নামও আসছে। সব আমলেই গোল্ডেন মনির ছিলো তাদের গোল্ডেন বয়। কিন্তু এই গোল্ডেন বয় কিভাবে সেলসম্যান থেকে হাজার কোটি টাকার সম্পদের মালিক হলো? সম্পর্কিত খবর গোল্ডেন মনির ও তার স্ত্রীর সম্পদের হিসাব চেয়ে নোটিশ কনক সারওয়ার গোল্ডেন মনিরসহ ৩৫ জনের ব্যাংক হিসাব তলব গোল্ডেন মনিরের সঙ্গে কোন‌ মন্ত্রী-এমপি’র যোগাযোগ, তদন্ত হচ্ছে গত শুক্রবার গোল্ডেন মনিরের বাড্ডার বাড়িতে রাতভর অভিযানের পর সকালে সংবাদ সম্মেলন করে তাকে গ্রেপ্তারের খবর জানায় র‌্যাব। র‌্যাবের অভিযানে ওই বাড়ি থেকে নগদ এক কোটি ৯ লাখ টাকা, ৯ লাখ টাকার বিদেশি মুদ্রা, আট কেজি স্বর্ণ, একটি বিদেশি পিস্তল, কয়েক রাউন্ড গুলি ও বিদেশি মদ উদ্ধার করা হয়। তবে এই অভিযানের অনেক আগেই ২০১২ সালে দুদক মনিরের বিরুদ্ধে এক কোটি ৬১ লাখ টাকা অবৈধ সম্পদের অভিযোগে মামলা করেছিল। দুদক বলছে, সেই মামলার তদন্ত এখনো চলছে। তাদের অনুসন্ধানে মনির ও তার স্ত্রীর তিন কোটি ৮৪ লাখ টাকার সম্পদের তথ্য পাওয়া গেছে। আর এপর্যন্ত র‌্যাবের অভিযানের নগদ টাকা, সম্পদ ও যে পাঁচটি গাড়ি জব্ধ হয়েছে তার মূল্য ৪৫ কোটি ১৭ লাখ টাকা। র‌্যাব-এর মুখপাত্র কর্নেল আশিক বিল্লাহ জানান, তারা প্রাথমিক অনুসন্ধানে গোল্ডেন মনিরের এক হাজার ৫০ কোটি টাকার সম্পদ এবং ২০২টি প্লট ও বাড়ির তথ্য পেয়েছেন। তিনি জানান, আমরা অবৈধ মাদকের তথ্যের ভিত্তিতে তার বাড়িতে অভিযান চালাই। এর পর কেঁচো খুড়তে সাপ বেরিয়ে আসে। তার ২৫টি ব্যাংক একাউন্টে আছে ৯৫০ কোটি টাকা। র‌্যাব জানিয়েছে সোনার দোকানের সেলস্যম্যান থেকে স্বর্ণ চোরাচালানে জড়িয়ে পড়ে মনির। ২০০১ সাল পর্যন্ত সোনা চোরাচালানই ছিল তার মূল কাজ। তখনই তার নাম হয় গোল্ডেন মনির। এরপর সে রাজউকের প্লট বাগানোর কাজ শুরু করে। সে রজউকের একটি সিন্ডিকেটের সদস্য হয়ে যায়। তারপর তার উত্থান শুরু হয়। রাজউকের প্লট বাগানো শুরু হয় ২০০৪ সাল থেকে। রাজউকের বাড্ডা প্রকল্প থেকেই সে দেড়শ'র মত প্লট বাগিয়ে নেয়। যারা ওই প্রকল্পে জমির ক্ষতিগ্রস্ত মালিক হিসেবে যাদের প্লট পাওয়ার কথা সেই প্লটগুলো নানা কৌশলে সে বাগিয়ে নেয়। আর এই কাজে রাজউকের একটি চক্রের পাশাপাশি তাকে সহযোগিতা করে সেসময়ের একজন মন্ত্রী, তার ভাই এবং একজন প্রভাবশালী ওয়ার্ড কাউন্সিলর। পরে তিনি রাজউকের আরো কয়েকটি প্রকল্পে বরাদ্দপ্রাপ্তদের ফাইল গায়েব করে আরো ৫০টির মত প্লট নেন। এই অবৈধ কাজ টিকিয়ে রাখতে একজন প্রতিমন্ত্রীর সাথেও সখ্য গড়ে তোলে। তাকে একটি দামী গাড়িও উপহার দেয় বলে অভিযোগ রয়েছে। আশঙ্কা করছি এরকম আরো অনেক গোল্ডেন মনির আছে: বদিউল আলম মজুমদার সে সংসদ সদস্যদের বিনা শুল্কের গাড়ি নির্ধারিত মেয়াদের আগে কিনত। আর সেই কারণে বেশ কয়েজন জন সংসদ সদস্যের সাথেও তার সখ্যের অভিযোগ আছে। তার বাসা ও শো রুম থেকে যে বিলাবহুল পাঁচটি গাড়ি উদ্ধার করা হয় তার মধ্যে শেরপুর এলাকার একজন সংসদ সদস্যের গাড়ি আছে। আশিক বিল্লাহ জানান, বিআরটিএ গাড়িগুলোর মালিকানা যাচাই করছে। আর অবৈধ সম্পদের তদন্ত শুরু করেছে দুদক। বাড্ডা থানায় যে তিনটি মামলা করা হয়েছে তার দায়িত্ব দেয়া হয়েছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা বিভাগকে। তার প্লট ও বাড়ির তথ্য রাজউককে দেয়া হয়েছে। এখন এটা দেখা তাদের কাজ। তিনি জানান, গোল্ডেন মনির আসলে তার এই অবৈধ কজের জন্য সব সময়ই যাদের প্রয়োজন তাদের সাথে সম্পর্ক গড়ে তুলেছে। আর এই সম্পর্ক হয়েছে লেনদেন ও উপঢৌকনের বিনিময়ে। জানা গেছে, তার যেসব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান আছে সেগুলো সাইনবোর্ড মাত্র। এগুলোর আড়ালে তার মূল কাজ অবৈধ ব্যবসা। এই কাজে যখন যে দল ক্ষমতায় সেই দলের যেসব মন্ত্রী-এপিকে প্রয়োজন তাদের কাজে লাগিয়েছে অর্থের বিনিময়ে। রাজউক এর গণপূর্ত তার এই সময়ের বিচরণ ক্ষেত্র। এখানে কর্মকর্তা কর্মচারীদের মধ্যে তার নিজস্ব সিন্ডিকেট আছে। সোনা চোরাচালানের অবৈধ অর্থ সে রাজউকের কাজে লাগিয়ে অবৈধ সম্পদ বাড়িয়েছে। সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, গোল্ডেন মনিরের সঙ্গে যারা জড়িত তাদের তদন্তের আওতায় আনা হবে। প্রতিমন্ত্রী-এমপি যাদের নাম আসছে তাদের ব্যাপারেও তদন্ত হবে। কিন্তু তার এই কথার এখন পর্যন্ত বাস্তবায়ন দেখা যায়নি বলে মনে করেন বিশ্লেষকেরা। সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, “আশঙ্কা করছি এরকম আরো অনেক গোল্ডেন মনির আছে। তারা কমবে না যতদিন পর্যন্ত তাদের পৃষ্ঠপোষকদের আইনের আওতায় আনা না যাবে। গোল্ডেন মনিরের সঙ্গে একজন প্রতিমন্ত্রীর নাম আসছে। তার বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে?’’ সূত্র: ডয়েচে ভেলে।

হাজার কোটি টাকা আর রাজউকের দুই শতাধিক প্লট বাগিয়ে নেয়া গোল্ডেন মনিরের গডফাদার কারা? সোনা চোরচালান, গাড়ির ব্যবসার আড়ালে অবৈধ ব্যবসা আর জালিয়াতি করে রাজউকের প্লট বাগানো কি তার একার ক্ষমতায় হয়েছে?

এরইমধ্যে বর্তমান সরকারে একজন প্রতিমন্ত্রী এবং কয়েকজন সংসদ সদস্যের নাম এসেছে। তবে তার উত্থান পর্বে বিএনপি-জামায়াত জোট শাসনামলের মন্ত্রী এমপিদের নামও আসছে। সব আমলেই গোল্ডেন মনির ছিলো তাদের গোল্ডেন বয়। কিন্তু এই গোল্ডেন বয় কিভাবে সেলসম্যান থেকে হাজার কোটি টাকার সম্পদের মালিক হলো?

গত শুক্রবার গোল্ডেন মনিরের বাড্ডার বাড়িতে রাতভর অভিযানের পর সকালে সংবাদ সম্মেলন করে তাকে গ্রেপ্তারের খবর জানায় র‌্যাব। র‌্যাবের অভিযানে ওই বাড়ি থেকে নগদ এক কোটি ৯ লাখ টাকা, ৯ লাখ টাকার বিদেশি মুদ্রা, আট কেজি স্বর্ণ, একটি বিদেশি পিস্তল, কয়েক রাউন্ড গুলি ও বিদেশি মদ উদ্ধার করা হয়।

তবে এই অভিযানের অনেক আগেই ২০১২ সালে দুদক মনিরের বিরুদ্ধে এক কোটি ৬১ লাখ টাকা অবৈধ সম্পদের অভিযোগে মামলা করেছিল। দুদক বলছে, সেই মামলার তদন্ত এখনো চলছে। তাদের অনুসন্ধানে মনির ও তার স্ত্রীর তিন কোটি ৮৪ লাখ টাকার সম্পদের তথ্য পাওয়া গেছে। আর এপর্যন্ত র‌্যাবের অভিযানের নগদ টাকা, সম্পদ ও যে পাঁচটি গাড়ি জব্ধ হয়েছে তার মূল্য ৪৫ কোটি ১৭ লাখ টাকা।

র‌্যাব-এর মুখপাত্র কর্নেল আশিক বিল্লাহ জানান, তারা প্রাথমিক অনুসন্ধানে গোল্ডেন মনিরের এক হাজার ৫০ কোটি টাকার সম্পদ এবং ২০২টি প্লট ও বাড়ির তথ্য পেয়েছেন। তিনি জানান, আমরা অবৈধ মাদকের তথ্যের ভিত্তিতে তার বাড়িতে অভিযান চালাই। এর পর কেঁচো খুড়তে সাপ বেরিয়ে আসে। তার ২৫টি ব্যাংক একাউন্টে আছে ৯৫০ কোটি টাকা।

র‌্যাব জানিয়েছে সোনার দোকানের সেলস্যম্যান থেকে স্বর্ণ চোরাচালানে জড়িয়ে পড়ে মনির। ২০০১ সাল পর্যন্ত সোনা চোরাচালানই ছিল তার মূল কাজ। তখনই তার নাম হয় গোল্ডেন মনির। এরপর সে রাজউকের প্লট বাগানোর কাজ শুরু করে। সে রজউকের একটি সিন্ডিকেটের সদস্য হয়ে যায়। তারপর তার উত্থান শুরু হয়।

রাজউকের প্লট বাগানো শুরু হয় ২০০৪ সাল থেকে। রাজউকের বাড্ডা প্রকল্প থেকেই সে দেড়শ’র মত প্লট বাগিয়ে নেয়। যারা ওই প্রকল্পে জমির ক্ষতিগ্রস্ত মালিক হিসেবে যাদের প্লট পাওয়ার কথা সেই প্লটগুলো নানা কৌশলে সে বাগিয়ে নেয়। আর এই কাজে রাজউকের একটি চক্রের পাশাপাশি তাকে সহযোগিতা করে সেসময়ের একজন মন্ত্রী, তার ভাই এবং একজন প্রভাবশালী ওয়ার্ড কাউন্সিলর। পরে তিনি রাজউকের আরো কয়েকটি প্রকল্পে বরাদ্দপ্রাপ্তদের ফাইল গায়েব করে আরো ৫০টির মত প্লট নেন। এই অবৈধ কাজ টিকিয়ে রাখতে একজন প্রতিমন্ত্রীর সাথেও সখ্য গড়ে তোলে। তাকে একটি দামী গাড়িও উপহার দেয় বলে অভিযোগ রয়েছে।

আশঙ্কা করছি এরকম আরো অনেক গোল্ডেন মনির আছে: বদিউল আলম মজুমদার সে সংসদ সদস্যদের বিনা শুল্কের গাড়ি নির্ধারিত মেয়াদের আগে কিনত। আর সেই কারণে বেশ কয়েজন জন সংসদ সদস্যের সাথেও তার সখ্যের অভিযোগ আছে। তার বাসা ও শো রুম থেকে যে বিলাবহুল পাঁচটি গাড়ি উদ্ধার করা হয় তার মধ্যে শেরপুর এলাকার একজন সংসদ সদস্যের গাড়ি আছে।

আশিক বিল্লাহ জানান, বিআরটিএ গাড়িগুলোর মালিকানা যাচাই করছে। আর অবৈধ সম্পদের তদন্ত শুরু করেছে দুদক। বাড্ডা থানায় যে তিনটি মামলা করা হয়েছে তার দায়িত্ব দেয়া হয়েছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা বিভাগকে। তার প্লট ও বাড়ির তথ্য রাজউককে দেয়া হয়েছে। এখন এটা দেখা তাদের কাজ।

তিনি জানান, গোল্ডেন মনির আসলে তার এই অবৈধ কজের জন্য সব সময়ই যাদের প্রয়োজন তাদের সাথে সম্পর্ক গড়ে তুলেছে। আর এই সম্পর্ক হয়েছে লেনদেন ও উপঢৌকনের বিনিময়ে।

জানা গেছে, তার যেসব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান আছে সেগুলো সাইনবোর্ড মাত্র। এগুলোর আড়ালে তার মূল কাজ অবৈধ ব্যবসা। এই কাজে যখন যে দল ক্ষমতায় সেই দলের যেসব মন্ত্রী-এপিকে প্রয়োজন তাদের কাজে লাগিয়েছে অর্থের বিনিময়ে। রাজউক এর গণপূর্ত তার এই সময়ের বিচরণ ক্ষেত্র। এখানে কর্মকর্তা কর্মচারীদের মধ্যে তার নিজস্ব সিন্ডিকেট আছে। সোনা চোরাচালানের অবৈধ অর্থ সে রাজউকের কাজে লাগিয়ে অবৈধ সম্পদ বাড়িয়েছে। সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, গোল্ডেন মনিরের সঙ্গে যারা জড়িত তাদের তদন্তের আওতায় আনা হবে। প্রতিমন্ত্রী-এমপি যাদের নাম আসছে তাদের ব্যাপারেও তদন্ত হবে।

কিন্তু তার এই কথার এখন পর্যন্ত বাস্তবায়ন দেখা যায়নি বলে মনে করেন বিশ্লেষকেরা। সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, “আশঙ্কা করছি এরকম আরো অনেক গোল্ডেন মনির আছে। তারা কমবে না যতদিন পর্যন্ত তাদের পৃষ্ঠপোষকদের আইনের আওতায় আনা না যাবে। গোল্ডেন মনিরের সঙ্গে একজন প্রতিমন্ত্রীর নাম আসছে। তার বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে?’’ সূত্র: ডয়েচে ভেলে।

আপনি আরও পড়তে পারেন