ঈশ্বরগঞ্জে ফসলের মাঠে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য আঁকলেন কৃষক আবদুল কাদির

ঈশ্বরগঞ্জে ফসলের মাঠে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য আঁকলেন কৃষক আবদুল কাদির

হোছাইন মুহাম্মদ তারেক, ঈশ্বরগঞ্জ (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি


ফসলের মাঠে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতি ফুটিয়ে তুলে জাতির পিতার প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা প্রকাশ করেছেন কৃষক আবদুল কাদির। শিল্পী কৃষকের সৌন্দর্যময় ফসলের মাঠ দেখতে প্রতিদিন ভিড় করছেন শত শত মানুষ।

অপরূপ প্রকৃতির ফসলের মাঠে লালশাক আর সরিষা রোপণ করে স্মৃতিসৌধ, নৌকা, শাপলা ও মুজিব শতবর্ষও এঁকেছেন। বঙ্গবন্ধুর ছবির চারপাশে জাতীয় পতাকা, জাতীয় ফুল শাপলা আর নৌকার ছবি বাড়িয়েছে সৌন্দর্যের মাত্রা। 


লালশাক আর সরিষার চারাগুলো বড় হচ্ছে আর স্পষ্ট ও নান্দনিক হয়ে উঠছে বাংলাদেশের স্থপতি জাতির জনকের অবয়ব। বঙ্গবন্ধুর প্রতি অগাধ ভালোবাসা থেকেই ফসলের এমন শিল্পকর্ম বলে জানান কৃষক আব্দুল কাদির।


গত বছরও নিজের স্ত্রীর প্রতি ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ হিসেবে ‘ভালোবাসার জমিন’ বানিয়েছিলেন কৃষক আবদুল কাদির। ফসলের মাঠে নকশি কাঁথা এঁকে আলোচিত হয়েছিলেন তিনি। এবার তার ভালোবাসার জমিনে লালশাক আর সরিষা দিয়ে আঁকলেন বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য।

কৃষক আবদুল কাদিরের বাড়ি ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে উপজেলার আঠারবাড়ি ইউনিয়নের পাড়া খালবলা গ্রামে। কৃষক মো. তারা মিয়ার মেঝ ছেলে আবদুল কাদির। স্ত্রীর নাম মকসুদা আক্তার।

দুই ছেলে ও এক মেয়ের জনক ৪১ বছর বয়সী আবদুল কাদির পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ার সময় নিজেদের জমিতে কাজ শুরু করেন। ফসলের মাঠেই দিন-রাত পরিশ্রম করে ফলান সোনার ফসল। ১ ডিসেম্বর নিজের ৩৩ শতক জমিতে পাড়া খালবলা বন্ধু মহল ক্লাবের সদস্যদের নিয়ে এঁকেছেন অনন্য শিল্পকর্ম।

চারদিকে যখন ভাস্কর্য নিয়ে তোলপাড় চলছে সে সময় সরিষা ও লালশাক দিয়ে নিজের জমিতে পরম মায়ায় রূপ দিয়েছেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেষ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতি।


মুজিববর্ষ উপলক্ষে এবং চলমান ভাস্কর্য নিয়ে তোলপাড়ের মধ্যে বঙ্গবন্ধুর চেতনা জাগ্রত রাখতে কৃষক কাদির নিজের সামর্থ্যানুযায়ী ফসলের মাঠে হৃদয় নিংড়ানো ভালোবাসার প্রকাশ ঘটিয়েছেন।


কৃষক কাদির বলেন, অন্য সময় জমি চাষ করে আর্থিক ভাবে লাভবান হই। আমার কর্মক্ষেত্র আর ভালোবাসা প্রকাশের স্থান ফসলের ক্ষেতেই। তাই মুজিববর্ষ উপলক্ষে বন্ধু মহল ডিজিটাল ক্লাবের সদস্যদের নিয়ে এটি করা হয়েছে।

জাতির জনকের চেতনা সবার মাঝে ছড়িয়ে দিতে ভিন্ন কিছু করার চেষ্টা করছি।ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাধন কুমার গুহ মজুমদার জানান, কৃষক আব্দুল কাদির মানসিক সৌন্দর্যের বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছেন ফসলের মাঠে।

আর্থিক লাভবান না হলেও দূর-দূরান্ত থেকে লোকজন শৈল্পিক কাজ দেখতে আসার মধ্যেই তৃপ্তি পাচ্ছেন। তার এমন কাজে কৃষি বিভাগ গর্বিত। আগামী বছরের বঙ্গবন্ধু কৃষি পদকের জন্য তার নাম প্রস্তাব করা হবে বলেও জানান তিনি।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ জাকির হোসেন বলেন, বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যের প্রতি অবমাননার প্রতিবাদ কৃষক আব্দুল কাদিরের ফসলের মাঠে বঙ্গবন্ধুর এই প্রতিকৃতি। এতে আমরা গর্বিত। তাকে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহায়তা করা হবে।


এদিকে কৃষক আব্দুল কাদিরের ফসলের মাঠে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতির ছবি নিজের ফেসবুক পেজে পোস্ট করেছেন কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক।

আপনি আরও পড়তে পারেন