পেলেকে ছুঁলেন মেসি

পেলেকে ছুঁলেন মেসি

ভালেন্সিয়ার বিপক্ষে গোল করে বসলেন ফুটবল কিংবদন্তি পেলের পাশে। এক ক্লাবের হয়ে সবচেয়ে বেশি গোলের রেকর্ড এখন যৌথভাবে তাদের।

স্বদেশের ক্লাব সান্তোসের হয়ে ১৯ মৌসুমে ৬৪৩ গোল করেছিলেন ব্রাজিলের হয়ে তিনটি বিশ্বকাপ জেতা পেলে। বার্সেলোনার হয়ে ১৭ মৌসুমেই তার রেকর্ড স্পর্শ করলেন আর্জেন্টাইন তারকা মেসি।

কিন্তু পেলেকে ছোঁয়ার দিনে জয়ে উদ্ভাসিত হতে পারলেন না। শনিবার ন্যু ক্যাম্পে মেসির দল বার্সেলোনা ভ্যালেন্সিয়ার সঙ্গে ড্র করলো ২-২ গোলে।

দিয়াকাবির গোলে ৩০ মিনিটে এগিয়ে যাওয়া ভ্যালেন্সিয়াকে প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে হেডে গোল করে সমতায় আনেন মেসি। তারই পেনাল্টি ভ্যালেন্সিয়া গোলকিপার রুখে দিলে রিবাউন্ড থেকে সুযোগ পেয়ে যান। ৫২ মিনিটে সেন্টার ব্যাক রোনাল্ড আরাওহোর অসাধারণ এক গোলে এগিয়ে যায় কাতালানরা। কিন্তু সেটি তারা ধরে রাখতে পারেনি রক্ষণ দুর্বলতায়। ৬৯ মিনিটে ২-২ করে ফেলেন ভ্যালেন্সিয়ার উরুগুইয়ান ফরোয়ার্ড ম্যাক্সি গোমেজ। বাকি ২১ মিনিটে জয়ের জন্য প্রয়োজনীয় একটি গোল আর করতে পারেনি অপ্রচলিত ৪-১-৪-১ ছকে খেলা রোনাল্ড কোম্যানের দল।

টানা তৃতীয় এবং ন্যু ক্যাম্পে টানা পঞ্চম জয় তুলে নিতে পারলে লিগ টেবিলের চারে উঠে যেত বার্সেলোনা। সেটি না হওয়ায় পাঁচেই পড়ে থাকতে হলো। ১৩ ম্যাচ খেলে পয়েন্ট ২১, তাদের ওপরে ভিয়ারিয়াল, রিয়াল মাদ্রিদ, রিয়াল সোসিয়েদাদ ও আতলেতিকো মাদ্রিদ।

একজন মাত্র হোল্ডিং মিডফিল্ডার (বুসকেটস) সংবলিত আক্রমণাত্মক একাদশই নামিয়েছিলেন কোম্যান। এতে রক্ষণের ওপর চাপ পড়ে বেশ। বারবারই পাল্টা আক্রমণে ভয় ধরাচ্ছিল আগের চার ম্যাচে জয়হীন ভ্যালেন্সিয়া। তবে এগিয়ে যায় তারা নিরীহ দর্শন এক কর্নার থেকে। কার্লোস সোলেরের নেওয়া কর্নার কিকে একেবারেই অরক্ষিত থাকা দীর্ঘদেহী দিয়াকাবি দেখেশুনে হেড করে জালে বল জড়িয়েছেন।

প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে মেসির বাড়ানো বল নিয়ে ভ্যালেন্সিয়ার বক্সে ঢুকে যান আন্তোয়ান গ্রিজমান। পেছন থেকে হোসে গায়ার সামান্য ধাক্কায় পড়ে যান ফ্রেঞ্চ ফরোয়ার্ড। রেফারি বার্সার অনুকূলে পেনাল্টি দিয়ে গায়াকে দেখান লাল কার্ড। গায়ার প্রতিবাদের মুখে ‘ভারের’ শরণাপন্ন হন পরে। ভার লাল কার্ডকে ‘হলুদে’ বদলে দিলেও পেনাল্টি বহাল থাকে। মেসির নেওয়া পেনাল্টি কিক ডানদিকে ঝাঁপিয়ে রুখে দেন ভ্যালেন্সিয়া গোলকিপার জাউমি ডোমেনেখ। সেই বল জর্ডি আলবার ক্রসে ভ্যালেন্সিয়ার এক খেলোয়াড়ের গায়ে লেগে একেবারেই গোললাইনের কাছে থাকা মেসির হেডে করেন লক্ষ্যভেদ।

বার্সার বিপক্ষে যেকোনও গোলকিপার এখন চীনের প্রাচীরের মতো দাঁড়িয়ে যান। এ ম্যাচে যেমন মেসির অন্তত দুটি শট রুখেছেন ডোমেনেখ। দ্রুতগতির পাল্টা আক্রমণে শট নেওয়া গ্রিজমানকেও তিনি গোল বঞ্চিত করেছেন।

ভ্যালেন্সিয়ার রুশ ফরোয়ার্ড ডেনিস চেরিশেভের অমার্জনীয় ব্যর্থতার তিন মিনিট পরই দুর্দান্ত এক হাফ ভলিতে গোল করেছেন আরাওহো। কিন্তু পাল্টা আক্রমণ থেকে গায়ার ক্রসে গোল করে বার্সেলোনাকে তিন পয়েন্ট পেতে দেননি গোমেজ। তিন পয়েন্ট আসতো, যদি গোলকিপারকে একা পেয়েও কুতিনিয়ো বল বাইরে না পাঠাতেন জোরালো গড়ানো শটে।

ফুটবলবোদ্ধারা বলবেন ড্র-ই ছিল এ ম্যাচের ন্যায্য ফল। কেননা বার্সেলোনা বল দখলে এগিয়ে থেকে (৭০-৩০) গোলমুখে অনেক শট নিলেও আক্রমণে বেশি ধারালো ছিল শারীরিকভাবে সুবিধা পাওয়া ভ্যালেন্সিয়াই।

আপনি আরও পড়তে পারেন