শেরপুর পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামীলীগের দলীয় মনোনয়ন নিয়ে প্রার্থী-ভোটাদের মাঝে উৎকন্ঠা

শেরপুর পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামীলীগের দলীয় মনোনয়ন নিয়ে প্রার্থী-ভোটাদের মাঝে উৎকন্ঠা


শেরপুর প্রতিনিধি :

তৃতীয় ধাপের তফসিলে শেরপুর পৌর সভার নাম না থাকলেও ইতিমধ্যে আওয়ামীলীগের দলীয় প্রার্থীর মনোনয়ন চুড়ান্ত নিয়ে প্রার্থীদের পাশাপাশি ভোটারদের মাঝেও বইছে উৎকন্ঠা। কে পাচ্ছে দলীয় মনোনয়ন তা নিয়ে এখন ফুটপাতের চায়ের স্টল থেকে বিভিন্ন মহল্লার হাট-বাজার, বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, অফিস-আদালত, রাজনৈতিক অঙ্গন ও সচেতন মহলে চলছে সরব আলোচনা।


ইতিমধ্যে গত ৩ ডিসেম্বর জেলা আওয়ামীলীগের আয়োজনে দলের ৫ প্রার্থীকে নিয়ে তৃণমুলের ভোটের আয়োজন করা হলে দুইজন প্রার্থী তৃণমূল ভোট থেকে সড়ে দাড়ালেও ৩ জন প্রার্থী তৃণমূলের ভোটে অংশ নেয়।

এরমধ্যে দলের বর্তমান মেয়র ও জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গোলাম কিবরিয়া লিটনকে টপকে সর্বচ্চ ৪৮ ভোট পায় দলের সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক তরুন শিল্পপতি মো. আনিসুর রহমান আনিস।

৩৩ ভোটে দ্বিতীয় অবস্থানে থাকেন দলীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আনোয়ারুল হাসান উৎপল। অপরদিকে বর্তমান মেয়র লিটন পায় মাত ২১ ভোট। তৃণমূলের ভোটে না আসা অন্যতম প্রার্থী দলের তথ্য ও গবেষনা সম্পাদক জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি রফিকুল ইসলাম আধার দলীয় একটি অংশকে সাথে নিয়ে মাঠ দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। আধারের অভিযোগ ভোটে টাকার খেলা হওয়ার জন্য ভোটে যায়নি।

অপরদিকে আরেক প্রার্থী দলের শ্রম বিষয়ক সম্পাদক আরিফ রেজা একই অভিযোগে তৃণমূলের ভোট থেকে সড়ে দাড়ায়। তবে তিনি আপাতত মাঠে নেই। অপরদিকে দ্বিতীয় স্থান অর্জনকারী উৎপল কেন্দ্রর সিদ্ধান্তের দিকে চেয়ে থাকলেও আপাতত তিনিও নিরব রয়েছে।


এদিকে তৃণমূলের ভোটে অংশ নেয়া ৩ প্রার্থীর নাম কেন্দ্রে পাঠানো হয় দলীয় মনোনয়ন বোর্ডে। সেখান থেকে হবে চুড়ান্ত মনোনয়ন। দেশের বিভিন্ন পৌর সভায় তৃণমূলের ভোটে প্রথম হয়েও মনোনয়ন না পাওয়ার ঘটনা শেরপুরে এর প্রভাব পড়েছে। বিভিন্ন মহলে গুঞ্জন চলছে, তৃণমূলের ভোটে প্রথম হওয়া আনিসের মাঠের অবস্থাও খুব ভালো থাকার পরও সবচেয়ে কম ভোট পাওয়অ বর্তমান মেয়র লিটনের কেন্দ্রীয় লবিং ভালো থাকায় তিনি তার মনোনয়ন চুড়ান্ত করতে আদাজল খেয়ে নেমেছে।

দ্বারে দ্বারে ঘুরছে দলীয় মনোনয়ন বোর্ড ও শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের বাড়ি বাড়ি। এদিকে বসে নেই সব্বর্চ ভোট পাওয়া আনিসও। তার সাথে দলের সভাপতি ও জাতীয় সংসদের হুইপ আতিউর রহমান আতিক এমপি’র আর্শিবাদ নিয়ে তিনিও ছুটছেন তার সর্বচ্চ ভোট ও স্থানীয় জনপ্রিয়তাকে পুঁজি করে।

এদিকে হঠাৎ করে পৌর শহরে ভাটা পড়েছে নির্বাচনী সরগরম। কাউন্সিলরটা কিছুটা মাঠে থাকলেও আওয়ামীলীগের ৩ মনানয়ন প্রত্যাশিরা ঢাকা মুখি রয়েছে। কেবলমাত্র মাঠে রয়েছে তৃণমূলের ভোটে না যাওয়া দলীয় মনোনয়ন প্রার্থী আধার। সেইসাথে কেন্দ্রে জেলার মূল ধারার আওয়ামীলীগের বাইরের একাংশকে নিয়ে নৌকার মাঝি হতে তৎপর রয়েছে।

অপর দিকে বিএনপি ৬ প্রার্থী থাকলেও তাদের প্রচারণা তেমন চোখেও যেমন পড়ে না তেমনি সাধারণ ভোটারদের মাঝেও আলোচনায় নেই কেউ। সবার দৃষ্টি এখন আওয়ামীলীগের দলীয় প্রার্থীর দিকে।

কে হবেন নৌকার মাঝি। তবে সব চেয়ে বেশি আলোচনার ঝড় উঠেছে তৃণমূলের ভোটে সব্বর্চ ভোট পাওয়া এবং মাঠ পর্যায়ে ব্যপক জনপ্রিয় থাকা আনিসের কেন্দ্রীয় মনোনয়ন বোর্ডের নৌকার টিকেট পাওয়া না পাওয়া নিয়ে টানপোড়নের বিষয়টি।


তবে দলের একটি সূত্রে জানা গেছে, চলতি মাসের শেষর দিকে চতুর্থ ধাপের তফসিল ঘোষনা হলেই শেরপুর পৌরসভার মনোনয়নের বিষয়টি চুড়ান্ত হবে। সেই সাথে প্রার্থী ও সাধারণ ভোটারদের উৎকন্ঠা ও সরব আলোচনা স্বাভাবিক হয়ে উঠবে।


শারমিন রাকা, শেরপুর প্রতিনিধি

আপনি আরও পড়তে পারেন