নজরুল ইসলাম লিখন, রূপগঞ্জ ঃ
এ বছর রূপগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় ২শ’ ৫০ হেক্টর জমিতে
সরিষার আবাদ করা হয়েছে। ফলনও বেশ ভাল হয়েছে। ভাল ফলন পেয়ে ক…ষকের মুখে হাসি ফুটে
উঠেছে। বিভিন্ন জাতে বারি ও বীনা সরিষার আবাদ হয়েছে রূপগঞ্জে। সাথী ফসল হিসেবে সরিষা
চাষ করে ভালো ফলন ও দাম পেয়ে রূপগঞ্জের ক…ষকদের মুখে হাসি ফুটেছে। উপজেলার হাটাব,
কেড়ার, মিঠাব, কান্দাপাড়া, মাসাব, তেতলাব, পশ্চিম গাও, মাঝিপাড়া, পাচাইখা, বলাইখাসহ
বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, হলুদে ফুলে ছেয়ে গেছে পুরো মাঠ। উপজেলা ক…ষি অফিসের স১ে⁄২
কথা বলে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে জেলায় ২ হাজার ১৬৫ একর জমিতে সরিষা আবাদ করা
হয়েছে। যেদিকে চোখ যায় শুধু হলুদ আর হলুদ। এ যেন কুয়াশায় ঢাকা শীতের চাদরে দিগন্ত জোড়া
সরিষার হলুদ মাঠ। মাঠজুড়ে হলুদ ফুলের সমারোহ। সরিষার ফুলে আক…ষ্ট মৌমাছিরাও, ব ̈ ̄Í মধু
আহরণে। সরিষা ফুলের হলুদ রাজে ̈ মৌমাছির ̧ঞ্জনে মুখরিত হয়ে উঠেছে গোটা মাঠ। হলুদের
সমারোহে স৩ি⁄৪ত সরিষার প্রতিটি ফুলে দুলছে ক…ষকের রঙিন ̄^প্ন।
উপজেলার সদর ইউনিয়নের নবগ্রাম এলাকার বাসিন্দা কাশেম মিয়া জানান, তিনি ৫৬ শতাংশ
জমিতে সরিষার আবাদ করেছেন। ফলনও হয়েছে প্রচুর। হাটাব এলাকার চাষি কামাল হোসেন
জানান, এ বছর ৯০ শতাংশ জমিতে তিনি সরিষা চাষ করেছেন। এবার ৩৬০ থেকে ৩৭০ কেজি
সরিষা পাবেন বলে তিনি আশাবাদী। উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় অন ̈ ফসলের সাথী ফসল হিসেবে
এখন বেড়েছে সরিষার চাষ। কার্তিকে চাষ করার পর অগ্রহায়ণ মাস শেষ হতে না হতেই সরিষা ফুল
ফোটার ধুম পড়েছে। মাঠের দিকে তাকালে মনে হয়, সবুজ-হলুদের সমন্বয়ে বাতাসে দোল খাওয়ার
মতো ক…ষকদের মনও দোলছে। হলুদ চাদরে সোনালী আভায় গোটা প্রান্তর হয়ে উঠেছে আলোকময়।
যেন এক হলুদের দিগন্ত।
উপজেলার পাছাইখা এলাকার সরিষা চাষি ছলিমুল্লাহ মিয়া জানান, ‘গত বছরের মতো এবারও
মৌসুমী ফসল সরিষার আবাদ করেছি। আশা করছি অন ̈ বছরের তুলনায় এবার আরো বেশি ফলন
ঘরে তুলতে পারবো।’ উপজেলা ক…ষি কর্মকর্তা মোয়া৩ে⁄৪ম হোসেন ভালো ফলনের জন ̈ করণীয়
বিষয়ে বলেন, সরিষার চাষে বোরন ব ̈বহার করলে দানা পুষ্ট হবে ও ফলন ব…দ্ধি পাবে। জাত ভেদে
সরিষা আবাদের মাত্র ৮০-১০০ দিনেই ফসল ঘরে তোলা যায়। প্রতি কেজি সরিষা থেকে ৩৫০ থেকে
৪০০ গ্রাম তেল পাওয়া যেতে পারে। সরিষা চাষের জমিতে বোরো ধানের আবাদ ভালো হয়।
উপজেলা ক…ষি কর্মকর্তা কায়ছুন নাহার হাওলাদার বলেন, এ উপজেলার মাটি সরিষা আবাদের জন ̈
অনেক উপযোগী। উপজেলায় গত বছরের তুলনায় সরিষা আবাদ ব…দ্ধি পেয়েছে। সরিষা চাষে
ক…ষকদের উৎসাহিত করার জন ̈ বারি সরিষা- ৯, ১১, ১৪, ১৫, ১৭ ও ১৮ জাতের ৩০টি প্রদর্শনী ও
৫০০ ক…ষককে প্রণোদনা হিসেবে বীজ ও সার দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও বীনা ৪ ও ৯ জাতের সরিষাও
আবাদ করা হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, উচ্চ ফলনশীল জাতের সরিষা চাষের জন ̈ ক…ষি বিভাগের পক্ষ থেকে ক…ষকদের
উদ্বুদ্ধ করি ও বিভিন্ন উপকরণ সহায়তা দেই। সর্বোপরি এ বছর করোনা ও বন ̈ায় ক…ষকরা ব ̈াপক
ক্ষতিগ্র ̄Í হয়েছে বিধায় সরকারের নির্দেশে ̄’ানীয় জনপ্রতিনিধি ও উপজেলা ক…ষি বিভাগের মাধ ̈মে
দুই হাজার ক…ষককে সরিষা চাষে ক…ষি প্রণোদনা বিতরণসহ সার্বিক সহযোগিতায় তাদের পাশে
আছেন উপজেলা ক…ষি বিভাগ। তিনি আরো জানান, এ দিকে এবার বিভিন্ন এলাকা থেকে মধু সংগ্রহ
করার জন ̈ এক হাজার ২০০ মৌবক্স নিয়ে প্র ̄Íুত আছে মৌচাষীরাও।
ক…ষক আব্দুল হালিম মিয়া জানান, বারি সরিষা-১৪ চাষ করতে প্রতি একরে চাষ, বীজ, সার-ওষুধ ও
সেচে ক…ষকের সর্বোচ্চ ব ̈য় হয় ১০ হাজার টাকা। আর উৎপাদন হয় ৬০০ কেজি, যার বাজারমূল ̈
৪৮-৫০ হাজার টাকা। কম খরচে বাড়তি আয়ের জন ̈ ক…ষকদের মধে ̈ সরিষা চাষে আগ্রহ বেড়েছে
এবং এ বছর তারা সরিষা চাষে বাম্পার ফলন পেয়েছে।
