মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় ‘গণতান্ত্রিক মূল্যবোধে’ ভয়াবহ পরিণতি আসতে পারে, এমন সতর্কবার্তা রাশিয়ার। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ট্রাম্পেকে নিষেধাজ্ঞা দেওয়াকে সাইবার জগতে পারমাণবিক বিস্ফোরণের সঙ্গে তুলনা করেছেন রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী মারিয়া জাখারোভা।
মার্কিন প্রযুক্তি কোম্পানিগুলো সম্প্রতি ট্রাম্পের ফেসবুক, টুইটার, ইনস্টাগ্রামসহ ইউটিউবও বন্ধ করে দিয়েছে। এতে মতপ্রকাশে বাধা দেখছে রাশিয়া। এ নিয়ে এই প্রথম কোনো দেশ প্রকাশ্যে বিরোধিতা করল।
রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা তার ফেসবুক পেজে লেখেছেন, বেসরকারি মার্কিন সংস্থাগুলো কর্তৃক গৃহীত রাষ্ট্রের প্রধানকে নিষিদ্ধ করার পদক্ষেপে অনেকটা ‘সাইবার স্পেসে পারমাণবিক বিস্ফোরণের সঙ্গে তুলনা করা যেতে পারে। নিষেধাজ্ঞায় তাৎক্ষণিক কোনো প্রভাব না পড়লেও পরবর্তীতে দীর্ঘমেয়াদি সংকট দেখা দিতে পারে।
এমন পদক্ষেপকে পশ্চিমা দেশগুলোর গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ওপর আঘাত হিসেবেও দেখছে মস্কো।
মুখপাত্র জাখারোভা উল্লেখ করেন, নিষেধাজ্ঞার ফলে ইতিমধ্যে মিডিয়ার বাজারের পরিবর্তন আসছে। রাশিয়ার তৈরি মেসেঞ্জার সার্ভিস টেলিগ্রাম আমেরিকাতেও জনপ্রিয় অ্যাপ হয়ে উঠেছে, কারণ মানুষ ফেসবুক এবং টুইটারকে ত্যাগ করছে। বিশেষ করে ট্রাম্পকে সোশ্যাল মিডিয়ায় নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার কারণে আরো বেড়েছে।
জনগণের মতপ্রকাশে মার্কিন মিডিয়া ফিল্ড নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে ব্যাপক উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন তিনি। তার মতে, মার্কিন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এখন মতপ্রকাশে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
গত ৬ জানুয়ারি মার্কিন ক্যাপিটল হিলে ট্রাম্পের সমর্থকরা তাণ্ডব চালায়। নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে ওই সংঘর্ষে এক পুলিশসহ ৫ জন প্রাণ হারান। এ ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে ট্রাম্প সহিংসতায় উসকে দিয়েছেন বলে অভিযোগ আনেন টুইটার, ইনস্টাগ্রাম, ফেসবুক ও ইউটিউভ।
আগামী ২০ জানুয়ারি মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের শপথ নেওয়াকে কেন্দ্র বিশৃঙ্খলা ছড়িয়ে দিতে পারেন, এমন অভিযোগ তুলে সাময়িক সময়ের জন্য স্থগিত করে দেওয়া হয় ট্রাম্পের অ্যাকাউন্ট।
এর মধ্যে টুইটার প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের অ্যাকাউন্ট পুরোপুরি স্থগিত করে দিয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যগুলোর এমন পদক্ষেপে স্বাধীন মতপ্রকাশের ক্ষেত্রে বাধা বলছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। জার্মানির চ্যান্সেলর অ্যাঞ্জেলা মার্কেল এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন-ইইউ একে গণতন্ত্রের জন্য সমস্যা দেখছেন।