রংপুরের গঙ্গাচড়ায় জেঁকে বসেছে শীত, জনজীবন বিপর্যস্ত

রংপুরের গঙ্গাচড়ায় জেঁকে বসেছে শীত, জনজীবন বিপর্যস্ত

মারুফা জামান, গঙ্গাচড়া (রংপুর) প্রতিনিধি:

রংপুরের গঙ্গাচড়ায় জেঁকে বসেছে শীত। এতে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। ঘন কুয়াশা আর শৈত্যপ্রবাহে নিম্ন আয়ের মানুষেরা কাজে যেতে না পারায় চরম দুর্ভোগে পড়েছে।গত শুক্রবার থেকে মাঘ মাস শুরু হওয়ায় শোনা যাচ্ছে মাঘ মাসের হাঁড়কাপানি শীতের পদধ্বনি। মনে হচ্ছে যেন ‘মাঘের জারে (ঠান্ডায়) বাঘ কান্দে’ প্রচলিত আঞ্চলিক প্রবাদটির প্রতিফলন ঘটতে চলেছে এ উপজেলায়।

এরই মধ্যে তীব্র শীত আর ঘন কুয়াশার চাদরে মাঝে মাঝে ঢাকা পড়ছে গোটা উপজেলা। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত বৃষ্টির মতো ঝরছে শিশির। শীত আর ঘন কুয়াশার সঙ্গে বইছে ঠান্ডা বাতাস। আর ক্রমেই শীতের তীব্রতা বৃদ্ধি পাচ্ছে, ফলে কমছে তাপমাত্রা। গত কয়েকদিন ধরে শীতের তীব্রতা বৃদ্ধির কারণে শিশু, বয়স্ক, কর্মজীবী, শ্রমজীবী, দরিদ্র ও নিম্ন আয়ের মানুষগুলোর দুর্ভোগ বেড়েই চলেছে। দিনের বেলাতেও উপজেলার রাস্তাঘাট ঘন কুয়াশার চাদরে ঢেকে থাকে। এ কারণে ৪০-৫০ মিটার দূরত্বের জিনিসও ভালো করে দেখা যাচ্ছে না।

মাঝে মধ্যে দুপুর বেলায় সূর্যের দেখা কিছুটা মেললেও এর আলো উত্তাপহীন। ঘন কুয়াশার কারণে দিনেও যানবাহনগুলো হেডলাইট জ্বালিয়ে ধীরগতিতে চলাচল করতে দেখা গেছে। জরুরি প্রয়োজনীয় কাজ ছাড়া ঘর থেকে কেউ বাইরে বের হচ্ছে না।কোলকোন্দ ইউনিয়নের মাস্টারপাড়ার অটোভ্যান চালক রুহুল ইসলাম জানান, গত কয়েকদিন থেকে তীব্র শীতের কারণে নিয়মিত অটোভ্যান নিয়ে বের হতে পারছে না। টানাটানির সংসারের কারণে বাধ্য হয়ে দুপুরে অটোভ্যান নিয়ে কাজের জন্য বের হয়েছেন।

কিন্তু লোকজন খুব কম থাকায় তারা বিপাকে পড়েছেন। বাঁধের পাড়ের  জাহেদুল ইসলাম জানান, বোরো চাষাবাদের জন্য বীজতলা তৈরি করেছেন তারা। কিন্তু কনকনে শীত কারণে তাদের সেই বীজতলা প্রায় নষ্ট হতে বসেছে। বীজতলার উপরে পলিথিন দিয়ে শীতের হাত থেকে বীজতলা রক্ষা করা হচ্ছে।

দিনমজুর নুরুজ্জামান বলেন, প্রচণ্ড ঠান্ডার কারণে কাজে যেতে পারছিনা, ফলে অতীব কষ্টে দিনাতিপাত করছি।বড়বিল ইউনিয়নের লাঙ্গলের হাটের ব্যবসায়ী আব্দুর রাজ্জাক জানান, হিমেল ঠান্ডা ও ঘন কুয়াশায় প্রতিদিন শহর থেকে দোকানের মালামাল ক্রয় করে আনতে পারছি না। এতে ব্যবসায় ক্ষতি হচ্ছে।গঙ্গাচড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. মোহাইমিনুল ইসলাম জানান, তীব্র শীত আর শৈত্যপ্রবাহের কারণে নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়াসহ ঠান্ডাজনিত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে।

এসব রোগে শিশু ও বয়স্করা বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। জানা যায়, সরকারি ও বেসরকারিভাবে চরাঞ্চলসহ উপজেলার শীতার্ত লোকজনের মাঝে কম্বল বিতরণ করা হচ্ছে। তবে তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। তাই সমাজের বিত্তবানদের শীতের কাপড় নিয়ে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান এলাকার সচেতন মহল।

আপনি আরও পড়তে পারেন