চাঁদপুরের চরাঞ্চলে বিদ্যুৎ পাচ্ছে ১২ হাজার পরিবার

চাঁদপুরের চরাঞ্চলে বিদ্যুৎ পাচ্ছে ১২ হাজার পরিবার

মোঃ রাসেল দেওয়ান চাঁদপুর প্রতিনিধি 

 চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনা নদীর পশ্চিম পাড়ে চাঁদপুর সদর উপজেলার রাজরাজেশ্বর ও হাইমচর উপজেলার নীল কমল, সদর ও গাজীপুর ইউনিয়নে প্রায় ১২ হাজার পরিবার পল্লী বিদ্যুতের সংযোগ পেতে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে হাইমচরের নীল কমল ইউনিয়নের মধ্যচর এলাকায় পরীক্ষামূলক বিদ্যুৎ সঞ্চালন করা হয়েছে। দুর্গম এসব চরে নদীর তলদেশে সাবমেরিন ক্যাবলের মাধ্যমে নেয়া হয়েছে বিদ্যুৎ সংযোগ। এসব বিদ্যুৎ সংযোগ নির্মাণে ব্যয় হবে প্রায় ৭২ কোটি টাকা।

শরীয়তপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি সূত্রে জানাগেছে, ২০১৯ সাল থেকেই শুরু হয়েছে হাইমচর উপজেলার পল্লী বিদ্যুৎ সংযোগের কাজ। বর্তমানে উপজেলার নীল কমল ইউনিয়নের পুরো অংশ, হাইমচর সদর ও গাজীপুর ইউনিয়নের আংশিক এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগের কাজ সম্পন্ন হয়েছে।

অপরদিকে সদর উপজেলার রাজরাজেশ্বর ইউনিয়নের মেঘনার পশ্চিম পাড়ে রায়চর, গোয়াল নগর, বালিয়ারচর, মোগাদি, বাঁশগাড়ী ও চর সুরেশ এলাকায় বাড়ীতে বিদ্যুতের সংযোগের কাজ প্রায় সম্পন্ন। এখন শুধুমাত্র সাব মেরিন ক্যাবলের মাধ্যমে নদীর তলদেশ দিয়ে সংযোগের কাজ বাকী।

রাজরাজেশ^র ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হযরত আলী বেপারী বলেন, আমাদের চরাঞ্চলের সব এলাকায় পল্লী বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। ইউনিয়ন পরিষদ, উচ্চ বিদ্যালয়, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় গুরুত্বপূর্ণ এলাকা বিদ্যুৎ সংযোগের আওতায় আসছে। পর্যায়ক্রমে চরাঞ্চলের সব এলাকায় বিদ্যুৎ আসবে।

এই ইউনিয়নের ওমর আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সফিউল্লাহ সরকার বলেন, আমরা কখনো কল্পনাও করিনি চরাঞ্চলে বিদ্যুৎ আসবে। খবু শীঘ্রই আমরা বিদ্যুৎ সংযোগ পাব। এ ধরণের উদ্যোগের জন্য সরকারকে ধন্যবাদ জানাই।

হাইমচর উপজেলার নীল কমল ইউনিয়নের মধ্যচর এলাকার বিদ্যুৎ গ্রাহক পারভিন শিকদার বলেন, বিদ্যুতের আলো পাব, কখনো কল্পনাও করিনি। অপেক্ষায় আছি কখন বিদ্যুৎ সংযোগা দেয়া হবে। তবে এ ধরণের ব্যবস্থা করায় স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ শিক্ষামন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।

বুধবার সকালে কথা হয় নীলকমল ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সালাউদ্দিন সরদারের সাথে। তিনি বলেন, এই চরের ১০ হাজার মানুষ বিদ্যুৎ সংযোগ পাবে। এতে করে আমাদের ইউনিয়নের প্রায় ৫০ হাজার মানুষ বিদ্যুতের আলোয় আলোকিত হবে। মুজিববর্ষের মধ্যেই শিক্ষামন্ত্রী এই অঞ্চলের বিদ্যুৎ সংযোগ উদ্বোধন করার সম্ভাবনা রয়েছে।

পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি শরীয়তপুর জেলার জেনারেল ম্যানেজার (জিএম) মো. জুলফিকার রহমান মুঠোফোনে জানান, হাইমচর ও চাঁদপুর সদর উপজেলার চরাঞ্চলের বিদ্যুৎ সংযোগ মূলত শরীয়তপুরের অংশের সাথে নির্মাণ হচ্ছে। এর মধ্যে হাইমচর উপজেলার নীলকমল, সদর ও গাজীপুরের কিছু অংশে ৩২৫ কিলোমিটার বিদ্যুৎ লাইন নির্মাণ হয়েছে। যার জন্য ব্যয় হয়েছে ৬২ কোটি টাকা। এখানে বিদ্যুৎ সংযোগের কাজ হয়েছে ১০ হাজার মিটারের। আর সদর উপজেলার রাজরাজেশ্বর ইউনিয়ন ও শরীয়তপুর জেলার তারাবুনিয়া ইউনিয়নের আংশিক এলাকায় ২হাজার মিটার সংযোগের কাজ চলছে। এই দুই ইউনিয়নের কাজ শেষ করতে ব্যয় হবে প্রায় ১০ কোটি টাকা।

আপনি আরও পড়তে পারেন