নওগাঁয় ৬ বছরেও মেরামত হয়নি ফুলবাড়ি বন্যা নিয়ন্ত্রণ বেড়িবাঁধ

নওগাঁয় ৬ বছরেও মেরামত হয়নি ফুলবাড়ি বন্যা নিয়ন্ত্রণ বেড়িবাঁধ

নওগাঁ প্রতিনিধি: ৬বছরেও মেরামত করা হয়নি ছোট যমুনা নদীর তীরবর্তী ফুলবাড়ী বন্যানিয়ন্ত্রণ বেড়িবাঁধ। যার কারণে বর্ষা মৌসুম ও নদীতে পানি এলেই নির্ঘুম রাত কাটে তীরবর্তি মানুষদের। গত ২০১৫সালে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও ভারী বর্ষনের ফলে বন্যায় বিধ্বস্ত হয় আত্রাই উপজেলার ফুলবাড়ী ও পূর্বমিরাপুরের এই বন্যানিয়ন্ত্রন বাঁধটি। ফলে অল্প বৃষ্টিতেই জলাবদ্ধতার স্বীকার হচ্ছে শত শত পরিবার।

যাতায়াতের জন্য নৌকায় হচ্ছে তাদের একমাত্র অবলম্বন। বাঁধ ভাঙনের ফলে প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে ফুলবাড়ি, মির্জাপুর, নান্দাইবাড়ি, কৃষ্ণপুরসহ কয়েকটি গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ বন্যায় কবলিত হয়ে চরম দুর্ভোগের শিকার হন। এ ছাড়াও রাণীনগরের নান্দাইবাড়ি থেকে কৃষ্ণপুর হয়ে আত্রাইয়ের উদনপৈ পর্যন্ত বেড়িবাঁধটি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। আসন্ন বর্ষা মৌসুমের আগেই বাঁধটি সংস্কারের উদ্যোগ গ্রহণ না করায় এলাকার কয়েক হাজার মানুষ আতঙ্কে বসবাস করছেন।জানা যায়, গত ২০১৫সালের ২৩আগস্ট ভোর রাতে স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় আত্রাইয়ের ফুলবাড়ি বন্যানিয়ন্ত্রণ বেড়িবাঁধ ভাঙ্গার পর মির্জাপুর নামক স্থানে আত্রাই-নওগাঁ আঞ্চলিক সড়ক ভেঙ্গে আশেপাশের এলাকার ফসল পানির নিচে তলিয়ে যায়।

সেই সাথে এলাকার শত শত পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়ে। এতে আত্রাই-রাণীনগর উপজেলার প্রায় ১২হাজার হেক্টর ফসলি জমি পানির নিচে তলিয়ে যায়। প্রায় ২মাস পরে বন্যার পানি নেমে যায়। এদিকে ভেঙ্গে যাওয়ার ৬বছর পার হলেও আজও ভাঙ্গন মেরামত করা হয়নি। এ ভাঙ্গন মেরামত না করায় যোগাযোগের ক্ষেত্রে এলাকাবাসীর চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। রাইপুর, ডাঙ্গাপাড়া, ফুলবাড়ি, উদনপৈ, মিরাপুরসহ বিভিন্ন এলাকার লোকজনকে সপ্তাহে দুইদিন শনিবার ও মঙ্গলবার ভবানীপুর-মির্জাপুর হাটে যাবার জন্য এ পথ ব্যবহার করতে হয়। কৃষকরা তাদের উৎপাদিত কৃষিপণ্য এ পথ দিয়েই হাটে বাজারজাত করে থাকেন। বন্যায় বাঁধ বিধ্বস্ত হওয়ার পর থেকে তারা তাদের উৎপাদিত কৃষিপণ্য বাজারজাত করতে পারছে না।

নান্দাইবাড়ি গ্রামের শহীদুল ইসলাম জানান, আমরা এ ভাঙ্গন মেরামতের জন্য স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মেম্বারসহ অনেকের কাছেই ধর্না দিয়েছি। সকলেই আশ্বস্ত করেন কিন্তু আজও তা মেরামত না হওয়ায় বর্ষা মৌসুমের আগেই সেখানে পানি বন্দি হয়ে পড়েছে অসংখ্য পরিবার। বর্তমানে বাঁধটি মেরামত না করায় আমরা আমাদের কষ্টের ফসল নিয়ে চরম আতঙ্কে রয়েছি। ফুলবাড়ি গ্রামের রবিন ইসলাম বলেন, আসন্ন বন্যা মৌসুমের আগে বাঁধটি মেরামত না করায় জলাবদ্ধতার কারণে আমাদের মাঠে কোন ফসল চাষ করতে পারছি না। কৃষিপণ্য থেকে শুরু করে চিকিৎসা সেবা ও জেলা শহরের সাথে যোগাযোগের ক্ষেত্রে দিন দিন চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে গ্রামবাসীকে। তিনি দ্রুত বাঁধটি নির্মাণের জন্য উর্ধ্বতন মহলের সুদৃষ্টি কামনা করেন।
নওগাঁ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী ইঞ্জিনিয়ার প্রবীর কুমার পাল বলেন, বাঁধটির বেঙ্গে যাওয়া অংশ পরিদর্শন করে অনেক আগেই উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাবর মেরামতের আবেদন পাঠিয়েছি। আশা করি কর্তৃপক্ষ দ্রুত বাঁধটি মেরামত করার বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহন করবেন। 

আপনি আরও পড়তে পারেন