রেকর্ডে উজ্জ্বল মেসি, উড়ন্ত আর্জেন্টিনা

রেকর্ডে উজ্জ্বল মেসি, উড়ন্ত আর্জেন্টিনা

আসরের সবচেয়ে দুর্বল প্রতিপক্ষের বিপক্ষে প্রত্যাশিতভাবেই দাপট দেখালো আর্জেন্টিনা। আর্জেন্টিনার হয়ে সর্বোচ্চ ১৪৮তম ম্যাচ খেলতে নেমে হাভিয়ের মাচেরানোকে ছাড়িয়ে যাওয়া দলের সেরা তারকা লিওনেল মেসি গোল করলেন, করালেনও। বড় জয় নিয়ে গ্রুপ সেরা হয়েই নকআউট পর্বে উঠল এবারের কোপা আমেরিকার অন্যতম শিরোপা প্রত্যাশিরা।

ব্রাজিলের কুয়াবার অ্যারেনা প্যান্টানলে মঙ্গলবার বাংলাদেশ সময় সকালে কোপা আমেরিকার ম্যাচটি হয়েছে একপেশে। তাতে বলিভিয়াকে ৪-১ গোল উড়িয়ে দিয়েছে আর্জেন্টিনা। দলের জয়ে মেসি ছাড়াও গোল পেয়েছেন আলহেন্দ্রো গোমেজ ও লাউতারো মার্টিনেজ।

এদিন খেলার শুরু থেকেই নিয়ন্ত্রণ নেওয়া পর ৬ষ্ঠ মিনিটেই গোল পেয়ে যায় আর্জেন্টিনা। বক্সে ঢুকে লিওনেল মেসির পাস পেয়ে দারুণ ভলিতে জালে জড়ান আলেহান্দ্রো গোমেজ।

গোল পাওয়ার পরও পরের কয়েক মিনিটে আর্জেন্টিনাকে আর আক্রমণ সাজাতে দেখা যায়নি। রক্ষণ নিয়ে ব্যস্ত বলিভিয়াও মাঝমাঠ পার হয়ে আর্জেন্টিনার প্রান্তে ঠিকভাবে এগুতে পারছিল না।

৩০ মিনিটে দলকে পেনাল্টি পাইয়ে দেন সেই গোমেজই। বা দিক থেকে বল পেয়ে বক্সে ঢুকছিলেন এই ফরোয়ার্ড। বলিভিয়ান ডিফেন্ডার তাকে ফেলে দিলে রেফারি বাঁজান বাঁশি। পেনাল্টি থেকে গোল করে দলের লিড ২-০ করে দিতে কোন সমস্যা হয়নি মেসির। দুই মিনিট পর কর্নার থেকে ব্যবধান কমানোর সুযোগ হাতছাড়া হয় বলিভিয়ার।

৪২ মিনিটে মাঝমাঠ থেকে মেসির উদ্দেশ্যে বল বাড়ান আগুয়েরো। বলিভিয়ার ডিফেন্ডারদের পেছনে ফেলে গোলকিপারের মাথার উপর দিয়ে টোকা মেরে ম্যাচে দ্বিতীয় গোল করেন মেসি। প্রথমার্ধের শেষ মিনিটে গোল পেতে পারতেন আগুয়েরো। তার শট যায় বার ঘেঁষে।

বিরতির পর ৫৩ মিনিটে আগুয়েরো সতীর্থের উদ্দেশে বক্সে বাড়ানো শট ফিরিয়ে দেন বলিভিয়ার ডিফেন্ডার। ৬১ মিনিটে বলিভিয়ার হয়ে ব্যবধান কমান এরভিন সাভেদ্রা। ডান প্রান্ত থেকে পাওয়া ক্রস ধরে দারুণ দক্ষতায় জালে জড়ান তিনি।

মিনিট দুয়েক পরই আবার ব্যবধান বেড়ে যায়। আগুয়েরার বদলি নেমেই গোল পেয়ে যান লাউতারো মার্টিনেজ। একটি সংঘবদ্ধ আক্রমণ থেকে গোলরক্ষকের পাঞ্চে ফিরে আসা বল ফাঁকায় পেয়ে জালে জড়ান তিনি। ৬৯ মিনিটে পেতে পারতেন আরেক গোল। এবার তার দুই শট ফিরিয়ে দেন বলিভিয়ার গোলকিপার কার্লোস ল্যাম্প।

ম্যাচের বাকি সময়ে কেউই ভালো সুযোগ তৈরি করতে পারছিল না। খেলার গতিও মন্থর হয়ে যায়। মেসির সামনে ছিল হ্যাটট্রিকের সুযোগ। নির্ধারিত ৯০ মিনিট পর এসেছিল সামান্য সুযোগ। যোগ করা সময়ে মেসির শট বলিভিয়ার গোলরক্ষক ল্যাম্প ফিরিয়ে দিলে আর কোন গোল হয়নি।

বড় এই জয়ে অনুমিতভাবেই এ- গ্রুপে চ্যাম্পিয়ন হয়ে কোয়ার্টার ফাইনাল খেলবে লিওনেল স্কালোনির শিষ্যরা। ৪ জুলাই কোয়ার্টার ফাইনালে তাদের প্রতিপক্ষ ইকুয়েডর।

গ্রুপ থেকে আগেই ছিটকে পড়েছে বলিভিয়া। ফলে কোয়ার্টার ফাইনালে জায়গা করে নেওয়ার জন্য আজকের ম্যাচগুলোর খুব একটা গুরুত্ব ছিল না। তবু প্যারাগুয়ের বিপক্ষে একই সময়ে হওয়া অপর ম্যাচে কিছুটা হলেও দুশ্চিন্তা নিয়ে নেমেছিল উরুগুয়ে, হারলেই যে বিপদ।

এদিন হারলেই ‘এ’ গ্রুপে চতুর্থ হতো উরুগুয়ে। আর তাহলেই কোয়ার্টার ফাইনালে ‘বি’ গ্রুপের শীর্ষ দল ব্রাজিলের মুখোমুখি হতে হতো তাদের।

গ্রুপে এই ম্যাচের আগে দুইয়ে থাকা প্যারাগুয়ের বিপক্ষে তাই কঠিন পরীক্ষা দিতেই নেমেছিল উরুগুয়ে। তা-ও আবার দলের সেরা তারকা, লুইস সুয়ারেজকে ছাড়াই! অস্কার তাবারেজের দল সে পরীক্ষায় পাশ করে ফিরেছে।

প্যারাগুয়েকে ১-০ গোলে হারিয়ে দ্বিতীয় হয়েই যাচ্ছে কোয়ার্টার ফাইনালে। সেখানে কলম্বিয়ার মুখোমুখি হবে দলটি। পেনাল্টি থেকে একমাত্র গোলটি করেন এডিনসন কাভানি।

এমন গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচেও লুইস সুয়ারেজকে ছাড়া নেমেছিল উরুগুয়ে। দলের সেরা খেলোয়াড়ের অনুপস্থিতিতে যাঁর দায়িত্ব বেড়ে গিয়েছিল, তিনি এডিনসন কাভানি। ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের স্ট্রাইকার সে দায়িত্ব প্রথমার্ধেই পালন করেছেন। শুরু থেকেই গোলের জন্য চেষ্টা করে যাওয়া উরুগুয়ে ১৯ মিনিটেই ভাগ্যকে পাশে পেয়েছে।

নাহিতান নান্দেজকে পেনাল্টি বক্সের মধ্যে ফাউল করে বসেন প্যারাগুয়ের আনহেল রোমেরো। পেনাল্টি নেওয়ার দায়িত্ব বুঝে নিয়েছিলেন কাভানি। কোনো ভুল করেননি গোল করতে।

এক নজরে ফল

আর্জেন্টিনা ৪-১ বলিভিয়া

উরুগুয়ে ১-০ প্যারাগুয়ে

 

আপনি আরও পড়তে পারেন