শখের পাখি আয়ের উৎস

শখের পাখি আয়ের উৎস

নজরুল ইসলাম লিখন, রূপগঞ্জ ঃ  নিজের বাড়ির ছাদেই পাখির খামার গড়ে তুলেছেন দ্বীন ইসলাম অপু। শখের বশে পাখি পালন শুরু করেন তিনি। এ শখের পাখিই এখন আয়ের উৎস। এখন আয় করেন লাখ লাখ টাকা। রোজগারের যেমন ব্যবস্থা হয়েছে, তেমনি অন্যেও জন্য কর্মসংস্থানের ব্যবস্থাও করেছেন। তার পাখির খামারে কাজ করেন আরো তিন জন।
পড়ন্ত বিকেল। পশ্চিম আকাশে লাল আভা। চারদিক পাখির কিচিরমিচির ধ্বনিতে মুখরিত। পাখির কলতানে যে কারও মন ভরে যাবে। তবে এ পাখির কলতান কোনো বাঁশবাগানে নয়, নয় কোনো ঝাড়-জঙ্গলে। এ পাখির কিচিরমিচির স্বপ্নবাজ এক তরুণের বাড়ির ছাদে। নাম তাঁর দ্বিন ইসলাম অপু। এই অপুর বাড়ির ছাদেই নানা রঙের, নানা জাতের পাখিদের মেলা, দেখলে যে কেউ বিস্মিত হবে। প্রতিদিন অপুর এই পাখির খামার দেখতে আসেন অনেক উৎসুক জনতা। অনেকটা শখের বশেই পাখি পালন শুরু করেন অপু। পরে শুরু করেন ব্যবসা। গড়ে তোলেন পাখির খামার। পাখি পালন করেই অপু এখন লাখপতি। সব খরচ গিয়ে প্রতি মাসে তাঁর লাভ হয় ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা। বর্তমানে তাঁর কাছে রয়েছে বিদেশি ৩৫ জাতের পাখি। গতকাল সোমবার সরেজমিনে দেখা গেছে, রূপগঞ্জ সদর ইউনিয়নের অপুর ছোটকাল থেকেই পাখি পালনের শখ। এই শখ বাস্তবে রূপ নেয় ২০১২ সালে। একপর্যায়ে পাখির ব্যবসা শুরু করেন তিনি।
অপু জানান, তাঁর কাছে একসময় ম্যাকাও পাখিও ছিল। এটি তিনি বিক্রি করেন ৩ লাখ টাকায়। এ ছাড়া ৫০ হাজার টাকা থেকে শুরু করে সর্বনিম্ন ৮ হাজার টাকা দামের পাখিও রয়েছে তাঁর কাছে। বর্তমানে অপুর খামারে রয়েছে লাভ বার্ড, রোজেলা, ইস্টার্ন, বাজরিকা, রেম, ইস্টার্ন রোজেলা, লরিকিট, রোবিনো, টারকোজিন, টারকোজিন প্যারাকিট, রেড র‌্যাম্পড প্যারাকিট, ডায়মন্ড জাভ, জাভা স্প্যারো, বাজরিগার, ককাটেল, হলুদ টিয়া, জাবা, প্রিন্স, লাভবার্ড রোজি, লাভ বার্ড অফলাইনসহ নানা জাতের পাখি। রয়েছে কথা বলা দেশীয় ময়না পাখিও। এর মধ্যে টারকোজিনের দাম রয়েছে ৪৫ হাজার, ককাটেল ৩০ হাজার, রোবিনো ৪০ হাজার, ইস্টার্ন রোজেলা ৩৫ হাজার, রেম ১৫ হাজার, হলুদ টিয়া ৩০ হাজার, জাবা ৮ হাজার টাকা ও কথা বলা ময়না পাখি জোড়া ৫০ হাজার টাকা দামে বিক্রি করছেন তিনি। অপুর এই পাখির খামার আশপাশের বাসিন্দাদেরও আগ্রহের কেন্দ্র হয়ে উঠেছে। রূপগঞ্জ গ্রামের চা দোকানদার আব্দুল কাদের আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘পাখির কিচিরমিচির আওয়াজ হুনলে যে কেউর মন ভইরা যাইব। সারা দিনই পাখি কিচিরমিচির করে। অনেক মানুষ আহে দেখত।’
অপুর বাড়ির পাশেই থাকেন রায়হান মিয়া। তাঁর কাছে অবশ্য অর্থকরী দিকটিই বেশি গুরুত্বপূর্ণ। বললেন, ‘পাখির ব্যবসা কইরা লাখপতি অইছে। প্রতি মাসে ভালাই পাখি বেচবার পারে। মানুষ দেখতেও আহে; খারাপ কী।’ কথা হয় পাখি কিনতে আসা গন্ধর্বপুর এলাকার পাখি প্রেমিক লোকনাথ পালের সঙ্গে। তিনি বলেন, ভাই কাঁটাবন যাওয়া এক উটকো ঝামেলা। এলাকার পাশে, আবার দামেও সস্তা, তাই এখান থেকে পাখি নিই।’ লোকনাথ পাল অপুর খামার থেকে এখন ৭০ হাজার টাকার পাখি কিনেছেন বলে জানান।

আপনি আরও পড়তে পারেন