ড্রেজার পাইপে অতিষ্ঠ দোহারের মাহমুদপুরবাসী

ড্রেজার পাইপে অতিষ্ঠ দোহারের মাহমুদপুরবাসী
সাইফুল ইসলাম
ঢাকার দোহারে মাহমুদপুর ইউনিয়ন যেনো দিন দিন  ড্রেজারের রাজ্যে পরিনত হচ্ছে। যেখানে সেখানে অনিয়ন্ত্রিত ভাবে ফসলি জমির ড্রেজার দিয়ে মাটি কেটে বিক্রি হচ্ছে বিভিন্ন জায়গায়।
আর এ সকল ড্রেজারের পাইপ নেয়া হচ্ছে বালু ব্যবসায়ীদের মনমতো যেখান খুশি সেখান দিয়ে। এতে কার কি ক্ষতি হচ্ছে তা দেখছে না বালু ব্যবসায়ীরা। বিশেষ করে রাস্তার ক্ষতি করে বেশি পাইপ নেয়া হয়ে থাকে। এতে করে যান চলাচলে সমস্যা সহ দূর্ঘটনাও ঘটে থাকে প্রায়। বছর কয়েক আগে ড্রেজারের পাইপের আঘাতে শিশু নিহতের ঘটনাও ঘটেছে এই ইউনিয়নে। তবুও বালু ব্যবসায়ীরা অনিয়ন্ত্রিত ও বেশামাল ভাবে বালু উত্তোলনে ব্যস্ত।
সরজমিনে ইউনিয়ন ঘুরে দেখা যায়,  ইউনিয়ের অনেকগুলো জায়গায় রাস্তার উপর দিয়ে ও রাস্তা কেটে নিচ দিয়ে নেয়া হয়েছে ড্রেজারের পাইপ। এতে চলাচলে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে পথচারীসহ গাড়িচালকদের। তাছাড়া রাস্তার নিচ দিয়ে নেয়া পাইপগুলো একসময় খুলে নিয়ে গেলে তখন রাস্তার সে অংশটি ভেঙ্গে নিচে দেবে যায়। তখন চলাচলে চরম দূর্ভোগে পরতে হয় এলাকাবাসীকে।
কোথাও দেখা গিয়েছে ছোট খালে নৌকা সহ নৌ যান চলাচল বন্ধ করে ড্রেজার পাইপ টানা হয়েছে। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে স্থানীয় এলাকাবাসী।
রিকশাচালক করিম জানান, ড্রেজারের পাইপে আমাদের রিকশা চালাতে সমস্যা সৃষ্টি হয়। মাঝে মাঝে ঝাঁকিতে চাকার স্পক কেটে যায়, তখন চাকা ঠিক না করে আর গাড়ি চালানো যায় না।
অটো চালক রুবেল বলেন, রাস্তার যেখান দিয়ে ড্রেজারের পাইপ নেয়া হয় সেখানে উঁচু ভিটের সৃষ্টি হয়। এতো উঁচু ভিটে আমাদের গাড়ি চালাতে অনেক সমস্যা হয়। বৃষ্টির দিনে সমস্যা বেড়ে দ্বি গুন হয়ে যায়। মাঝে মাঝে আমাদের বিভিন্ন ধরনের দূর্ঘটনার শিকার হতে হয়।
এ বিষয়ে কয়েকজন পথচারীর সাথে কথা বললে তারা বলেন, এসব পাইপে পথের মধ্যে নানা ধরনের সমস্যার তৈরি করে। তাছাড়া ফসলি জমির মাটি এভাবে সব কেটে ফেললে এক সময় দেশে ফসল ফলানো রুপকথার মতো মনে হবে। ড্রেজারে এভাবে মাটি কাটার কারনে আমাদের এলাকায় পদ্মার ভাঙ্গন বেড়েছে। সারা বছরই এভাবে মাটি কেটে তারা বিক্রি করছে, কিন্তু দেখার কেউ নেই।
তারা আরো বলেন, প্রশাসনের গাড়ি মাঝে মধ্যেই এই রাস্তা দিয়ে যেতে দেখি,  তখন তারা কি এই পাইপগুলো দেখে না? তাছাড়া আমাদের ইউনিয়নে রয়েছে একটি পুলিশ ফাঁড়ি,  তারাও কি দেখেনা এভাবে অবৈধ ভাবে ফসলি জমির মাটি কেটে বিক্রি  করছে। পুলিশ ফাঁড়ির নিকটেই চলছে এসব ড্রেজার।
দোহার নবাবগঞ্জের সাংসদ ও প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের নির্দেশ অমান্য করেই এসব মাটি কেটে বিক্রি করছে বালু উত্তোলনকারীরা।
অনিয়ন্ত্রিত এসব ড্রেজার এখনই নিয়ন্ত্রণ করা না গেলে ভবিষ্যতে নদী ভাঙ্গন সহ অনেক ধরনের  সমস্যা সৃষ্টি হবে। এবং তা সমাধানে  হিমশিমে পড়তে হবে সরকারকে।
এ বিষয়ে দোহার উপজেলা নির্বাহী অফিসার এ এফ এম ফিরোজ মাহমুদ বলেন, আমরা এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহন করবো।  আমরা এর আগেও অভিযান পরিচালনা করেছি। এবং অবৈধভাবে ফসলি জমির মাটি কাটার বিরুদ্ধে অভিযান চলমান থাকবে।

আপনি আরও পড়তে পারেন