বগুড়ায় ধসে পড়ল প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর

বগুড়ায় ধসে পড়ল প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর

নির্মাণের ৫ মাস পর বগুড়ার শেরপুর উপজেলায় মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে ভূমিহীন ও গৃহহীনদের জন্য প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর ভেঙে পড়ছে। গত তিন দিনে খানপুর ইউনিয়নের করতোয়া খালপাড়ে ২২টি ঘরের মধ্যে ৮টি ঘর ধসে গেছে। চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে ঘরগুলো হস্তান্তর করা হয়।

ক্ষতিগ্রস্ত ঘরমালিকরা অভিযোগ করে বলেন, এসব ঘর তৈরিতে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করা হয়েছে। অনেক ঘরের জানালার পাল্লা পর্যন্ত লাগানো হয়নি। দেয়াল ফেটে যাচ্ছে। মেঝের সিমেন্টের পলেস্তারা উঠে যাচ্ছে। হস্তান্তরের শুরু থেকে ছিল না পানি ও বৈদ্যুতিক সংযোগের ব্যবস্থা। বুধবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন জেলা প্রশাসক মো. জিয়াউল হক। এ সময় বগুড়ার পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী, উপজেলার বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও উপজেলার জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী উপস্থিত ছিলেন। 

জেলা প্রশাসক জিয়াউল বলেন, ভেঙে পড়া ঘরগুলো দ্রুত নতুন করে মেরামত করা হবে। করতোয়া খালের পাড় ভেঙে পড়া থেকে রক্ষার জন্য পাউবোকে জানানো হয়েছে। বিদ্যুৎ-সংযোগ যেন তাড়াতাড়ি পায়, সে জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকে জানানো হয়েছে। 

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অর্থায়ন থেকে চলতি অর্থবছরে এসব ঘর তৈরি করা হয়। প্রতিটি ঘর তৈরির বিপরীতে বরাদ্দ ছিল ১ লাখ ৭১ হাজার টাকা। চলতি বছরে প্রথম পর্যায়ে গত ২৩ জানুয়ারি আনুষ্ঠানিকভাবে এসব আধা পাকা ঘরগুলো হস্তান্তর করা হয়। ঘরের মধ্যে ছিল দুটি শোবারঘরসহ একটি করে রান্নাঘর ও টয়লেট।
এই প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি ছিলেন ইউএনও। কমিটির সদস্যসচিব ছিলেন উপজেলার প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা শামছুন্নাহার শিউলী।
হস্তান্তর করা ঘরগুলো ঘুরে দেখা যায়, বেশির ভাগ পরিবার এখনো ঘরে ওঠেনি। নির্মাণের পর হস্তান্তর করা ঘরের মধ্যে আজ পর্যন্ত আটটি ঘর ধসে পড়েছে।
স্থানীয় পাঁচজন কৃষক বলেন, খালের কিনার থেকে মাটি তুলে নতুন ঘর তৈরিতে নিচু অংশ উঁচু করা হয়েছে। এখন বৃষ্টির পানির চাপে সেই মাটি ধসে যেতে শুরু করেছে।
 

সরকারি এই প্রকল্পের আওতায় ঘর পাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে শাহাদত হোসেন, রহমত আলী, ফরিদা বেগম, হায়দার আলী বলেন, ঘরগুলো তাদের কাছে হস্তান্তর করা হলেও শুরু থেকে পানির ব্যবস্থা ও বিদ্যুৎ–সংযোগের ব্যবস্থা রাখা হয়নি। চার দিন আগে দুটি টিউবওয়েল বসানো হয়েছে। এখনো পায়নি বৈদ্যুতিক সংযোগ। এ কারণে বেশির ভাগ পরিবার তাদের বরাদ্দ ঘরে ওঠেনি। 

ইউএনও ময়নুল ইসলাম বলেন, করতোয়া খালের পাশে মাটি ধসে যাওয়ায় আটটি ঘরের ক্ষতি হয়েছে। ঘরগুলো উপজেলা পরিষদ থেকে মেরামতে জন্য টাকা ব্যয় করা হবে। এ ছাড়া খালের মাটি ধসে পড়া বন্ধে বগুড়ার পাউবো জিও ব্যাগ ফেলে তা ধসে পড়া রোধে ব্যবস্থা নেবে। পাশাপাশি বাঁশের পাইলিং বসিয়ে করতোয়া পাড় স্থায়ীভাবে রক্ষার কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে।

আপনি আরও পড়তে পারেন