ইউক্রেন সংকট : পুতিনের প্রশংসায় পঞ্চমুখ ট্রাম্প

দীর্ঘদিন ধরে সীমান্তে বিশাল সংখ্যক সেনা মোতায়েন করে রাখার পর ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলের বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত দু’টি রুশপন্থি অঞ্চলকে ‘স্বাধীন’ রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দিয়েছে মস্কো। এমনকি স্বীকৃতি দেওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই সেখানে সেনা পাঠানোর নির্দেশও দিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।

এরপরই পূর্ব ইউরোপের এই দেশটি নিয়ে রাশিয়ার সঙ্গে পশ্চিমা বিশ্বের উত্তেজনা পৌঁছেছে চরমে। তবে ইউক্রেনে রুশ সেনা পাঠানোর বিষয়ে পুতিনের নির্দেশকে ‘জিনিয়াস’ বলে উল্লেখ করেছেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বুধবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের একটি ডানপন্থি রেডিওর অনুষ্ঠানে হাজির হন সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সেখানেই ইউক্রেনে সামরিক বাহিনী পাঠানোর বিষয়ে প্রেসিডেন্ট পুতিনের সিদ্ধান্তের বিষয়ে তার কাছে জানতে চাওয়া হয়। জবাবে সাবেক এই রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘গতকাল টেলিভিশন স্ক্রিনে (ইউক্রেনে রুশ সেনা পাঠানোর) খবরটি দেখলাম এবং আমি বললাম, এটি জিনিয়াস।’

তিনি আরও বলেন, ‘ইউক্রেনের বড় একটি অংশকে স্বাধীন হিসেবে ঘোষণা করেছেন প্রেসিডেন্ট পুতিন। ওহ, এটি দারুণ। ইউক্রেনের বড় একটি অংশকে পুতিন এখন স্বাধীন বলছেন।’

ট্রাম্প বলেন, ‘এটি কতটা স্মার্ট সিদ্ধান্ত? তিনি (পুতিন) ইউক্রেনের ভেতরে ঢুকবেন এবং সেখানে শান্তিরক্ষী হবেন। এটি সবচেয়ে শক্তিশালী শান্তি বাহিনী … আমরা আমাদের দক্ষিণ সীমান্তে এই কৌশল ব্যবহার করতে পারতাম।’

যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক এই প্রেসিডেন্ট এরপর পুতিনের আরও প্রশংসা করেন। অন্যদিকে তার উত্তরসুরী ও বর্তমান প্রেসিডেন্টের সমালোচনাও করেন তিনি। ট্রাম্পের ভাষায়, ‘আপনাকে বলতে হবে যে, (ইউক্রেনে সেনা পাঠানোর) এই সিদ্ধান্ত বেশ বুদ্ধিদীপ্ত। আর বাইডেনের পক্ষ থেকে প্রতিক্রিয়া কী ছিল? তার পক্ষ থেকে কোনো প্রতিক্রিয়াই দেখানো হয়নি।’

পূর্ব ইউরোপে রাশিয়ার সাথে পশ্চিমা দেশগুলোর চলমান উত্তেজনার মধ্যেই ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলের বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত দু’টি রুশপন্থি অঞ্চলকে সোমবার ‘স্বাধীন’ রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দেয় মস্কো। এমনকি স্বীকৃতি দেওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই সেখানে সেনা পাঠানোর নির্দেশও দেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।

অবশ্য এর আগে থেকেই ইউক্রেন সীমান্তে সাম্প্রতিক মাসগুলোতে প্রায় দেড় লাখ সেনাসদস্য মোতায়েন রেখেছে প্রতিবেশী রাশিয়া। এর মধ্যে ট্যাংক ও কামানসহ যুদ্ধবিমানের বহরও ইউক্রেন সীমান্তে পাঠিয়েছে দেশটি। যেকোনো মুহূর্তে রুশ সেনারা দেশটিতে আক্রমণ করতে পারে বলেও আশঙ্কা রয়েছে। যদিও ইউক্রেনে হামলার কোনো পরিকল্পনা নেই বলে বরাবরই দাবি করে আসছে মস্কো।

এই পরিস্থিতিতে রাশিয়ার বিরুদ্ধে একগুচ্ছ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে পশ্চিমা দেশগুলো। নিষেধাজ্ঞা আরোপকারী এসব দেশের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, যুক্তরাজ্য ও জাপানসহ ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) মতো সংস্থাও রয়েছে।

আপনি আরও পড়তে পারেন