বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আজ আওয়ামী লীগের সঙ্গে জনগণের কোনো সম্পর্ক নেই। তার একটাই কারণ, আওয়ামী লীগ সম্পূর্ণ মিথ্যাবাদী ও প্রতারক দল।
তিনি বলেন, আমি বলছি ৭২ থেকে ৭৫ সালের কথা। যখন তারা ক্ষমতায় ছিল তখনও তারা জনগণকে মিথ্যা বলেছে। তখন বলেছে, বাংলাদেশকে তারা সোনায় মুড়িয়ে দেবে এবং বাংলাদেশের মানুষের স্বাধীনতা দেবে, মানুষের ভোটের অধিকারকে নিশ্চিত করবে। তখনও তারা এসব করেনি। তখন তারা একদলীয় শাসনব্যবস্থা বাকশাল প্রতিষ্ঠা করেছে।
আজ শুক্রবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আয়োজিত এক বিক্ষোভ সমাবেশে এসব কথা বলেন তিনি। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সদস্যসচিব রফিকুল আলম মজনুকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে ও তার মুক্তির দাবিতে এ বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
মির্জা ফখরুল বলেন, আজ সেই একইভাবে আওয়ামী লীগ জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করে ক্ষমতায় এসেছে। আপনাদের নিশ্চয়ই মনে আছে, হিজাব পড়ে ও হাতে তজবি নিয়ে জনগণের সামনে গিয়ে বলেছিলেন— অতীতে যদি কোনো ভুল-ত্রুটি করে থাকি তাহলে মাফ করে দিয়েন। আমাদের একবার ভোট দেন। তখন মানুষ ভোট দিয়েছিল। তখন আরও বলেছিল ১০ টাকা কেজি চাল খাওয়াবে, বিনা পয়সায় সার দেবে ও ঘরে ঘরে চাকরি দেবে। তার একটাও তারা পালন করেছে, করেনি। উপরন্তু এখন ৭০ টাকা চালের দাম, সারের দাম ১০০ গুণ বেশি, চাকরি পেতে হলে আওয়ামী লীগের শিষ্য ছাড়া তো চাকরি পাওয়া যায় না, উপরন্তু ২০ লাখ টাকা ঘুষ দিতে হয় কমপক্ষে।
বিএনপির এই মহাসচিব বলেন, রফিকুল আলম মজনুকে কেন গ্রেফতার করেছে? কারণ, তিনি জনপ্রিয় নেতা। সে বাইরে থাকলে আরও বেশি সংগঠন করবে। আন্দোলনকে বেগবান করবে। দেশনেত্রী খালেদা জিয়া একটা হেমিলনের বংশীবাদক। তিনি তার সারাটা জীবন গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করেছেন। তিনি দুইবার জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তাই তাকে সরকার মারাত্মকভাবে ভয় পায়। তিনি যদি বাইরে আসেন এবং গাড়ির ভেতর বসে অন্তত হাত দেখান, তাহলে এদেশের মানুষকে কেউ আটকে রাখতে পারবে না। সাহস থাকলে তাকে ছেড়ে দেন, বাইরে আসতে দেন।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারকে পরাজিত করতে হবে এবং জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। সরকারকে একটা নিরপেক্ষ-নির্দলীয় নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে। সেটা একমাত্র তাদের রক্ষার উপায়। এছাড়া তাদের কোনো রক্ষা পায় নাই।
মানুষের ক্রয় ক্ষমতা বেড়েছে ৩ গুণ, আয় ৪ গুণ- তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের এমন বক্তব্যের সমালোচনা করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, ক্রয় ক্ষমতা আর দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি এক জিনিস নয়। আপনার প্রথমে শিখতে হবে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি আর ক্রয়ক্ষমতা এক কথা নয়। যদি ক্রয় ক্ষমতা বেড়ে থাকে, সেটা বেড়েছে আওয়ামী চামচাদের, আওয়ামী নেতাদের।
সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুস সালাম, ঢাকা দক্ষিণ যুবদলের আহ্বায়ক গোলাম মাওলা শাহিন, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির, ঢাকা উত্তর বিএনপির সদস্যসচিব আমিনুল হক, বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা ইশরাক হোসেন প্রমুখ।