বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আওয়ামী লীগ সরকার যখনই ক্ষমতায় এসেছে তখনই তারা এদেশকে দুর্ভিক্ষের মধ্যে ফেলেছে। ১৯৭৪ সালে যখন আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় ছিল তখনও দেশে দুর্ভিক্ষ হয়েছিল। ওই সময় না খেয়ে লাখ লাখ মানুষ মারা গেছে। এক টুকরো রুটির জন্য মানুষ আর কুকুর টানাটানি করেছে। সেদিন বাসন্তী লজ্জা নিবারণের জন্য একখণ্ড কাপড় পায়নি, মাছ ধরার জাল দিয়ে লজ্জা নিবারণ করেছে। আজ একই অবস্থা শুরু হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৫ মার্চ) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এক বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি এবং ফ্যাসিবাদী আওয়ামী সরকারের সর্বগ্রাসী দুর্নীতির প্রতিবাদে জাতীয়তাবাদী তাঁতীদল সমাবেশটির আয়োজন করে।
মির্জা ফখরুল বলেন, সংলাপের নামে নির্বাচন কমিশন নতুন নাটক করেছে। সে নাটক হচ্ছে— তারা বিভিন্ন পেশার, বিভিন্ন স্তরের মানুষের সঙ্গে কথা বলছে। গত পরশু বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সঙ্গে আলোচনা করছে। ৩০ জনকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিল, এসেছেন মাত্র ১৩ জন। সেখানে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষক বলেছেন, এই তামাশাগুলো কেনো করছেন? নির্বাচনকালীন সময়ে নিরপেক্ষ সরকার যদি না থাকে তাহলে নির্বাচন কখনোই সুষ্ঠু হবে না। এটা আমার কথা নয়, এটা একজন শিক্ষাবিদের কথা।
তিনি বলেন, দেশের মানুষের মাথাপিছু আয় বেড়েছে বলে জানিয়েছে ক্ষমতাসীনরা। সাধারণ মানুষের আয় কিন্তু ১৫ হাজার টাকার বেশি নয়। মাসে এক হাজার কোটি টাকা যাদের আয়, তাদের সাথে সাধারণ মানুষের গড় আয় মিলিয়ে জনগণকে বোকা বানাচ্ছে সরকার। মাথা পিছু আয়ের মিথ্যা বক্তব্য আর উন্নয়নের বুলি শুভঙ্করের ফাঁকি ছাড়া কিছু নয়। দেশের মানুষকে এর মাধ্যমে বোকা বানাচ্ছে ক্ষমতাসীনরা।
আওয়ামী লীগের এমপি-মন্ত্রীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, দ্রব্যমূল্য ঊর্ধ্বগতির কারণে জনগণ কেমন আছে তা দেখতে রাস্তায় বেরিয়ে আসুন। এসি রুমে বসে মানুষের দুঃখ বুঝতে পারছে না ক্ষমতাসীনরা।
ফখরুল বলেন, উনারা (আওয়ামী লীগের নেতারা) বলে আমরা নাকি বেশি বুঝি, সব জায়গায় মাতব্বরি করি। এটি একটি অরাজনৈতিক ভাষা, অশালীন ভাষা।
তিনি বলেন, খেতে দিতে না পারার কারণে মা সন্তানের মুখে বিষ তুলে দিয়ে পরে নিজেও বিষ খেয়ে মরছে। ট্রেনের সামনে ঝাঁপ দিয়ে মরছে, গলায় ফাঁস দিয়ে মরছে। অহরহ ঘটছে এসব। এই অবস্থায় জনগণের সাথে রসিকতা করে, মশকরা করে বলা হয় জনগণের আয় বাড়ছে। জনগণ ভালো আছে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, সরকার দেশের সব অর্জনগুলো কেড়ে নিয়েছে, বেঁচে থাকার অধিকার কেড়ে নিয়েছে। ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছে, কথা বলার অধিকার কেড়ে নিয়েছে। পুরোপুরিভাবে ক্রীতদাস করার সব ব্যবস্থা তারা করেছেন।
নিরপেক্ষ নির্বাচন দরকার উল্লেখ করে তিনি বলেন, এখন দরকার জনগণের সরকার। নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে হলে নির্বাচনকালীন সময়ে একটা নিরপেক্ষ সরকার লাগবে। যা আওয়ামী লীগের অধীনে হবে না। আন্দোলনের কোনো বিকল্প নেই। সবাই ঐক্যবদ্ধ হোন।
আয়োজক সংগঠনের আহ্বায়ক আবুল কালাম আজাদের সভাপতিত্বে বিক্ষোভ সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা মীর সরাফত আলী সপু, আব্দুস সালাম আজাদ, সাবেক কৃষকদল নেতা সাধন মিয়া সম্রাটসহ সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা অংশ নেন।