দোহার নবাবগঞ্জ প্রতিনিধি:
ঢাকার নবাবগঞ্জে বিক্ষোভ মিছিল ও সংবাদ সম্মেলন করেছেন পদ বঞ্চিত বিএনপির নেতারাকর্মীরা। সোমবার সকালে উপজেলা কেন্দ্রীয় শহীদমিনার চত্বর থেকে এক বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। মিছিলটি উপজেলা ফটক হয়ে বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে শহীদমিনারে এসে শেষ হয়।
এসময় বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দরা অংশ নেয়।
পরে সংবাদ সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন বিএনপি নেতা- আবেদ হোসেন, ভিপি হারুণ অর রশীদ ওসমানী, আব্দুল রশিদ, তপন মোল্লা, রফিকুল ইসলাম রফিক সহ আরো অনেকেই।
এসময় নেতারা বলেন, উপজেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটিতে তাদের কাউকে রাখা হয়নি। এমনকি ইউনিয়ন কমিটিগুলোতে ত্যাগী নেতাদের বাদ দিয়ে সেখানেও স্বজনপ্রীতি ও পক্ষ অনুসারীদের স্থান দেওয়া হয়েছে। এছাড়া বিএনপির একটি অংশকে বাদ দিয়ে আজ কর্মী সম্মেলন করা হয়েছে জেলা বিএনপির নেতার বাড়িতে। বিএনপিকে টিকিয়ে রাখতে ত্যাগীদের মূল্যায়ন করার দাবি জানান তারা।
এছাড়াও সাবেক সভাপতি আবেদ হোসেন, ও সম্পাদক হারুন উর রশীদ ওসমানী স্বাক্ষরিত প্রতিবাদ ও অনাস্থা লিখিত চিঠি তুলে দেন উপস্থিত সাংবাদিকদের হাতে যার হুবহু দেওয়া হলো
আমি মোঃ আবেদ হোসেন, সাবেক সভাপতি নবাবগঞ্জ উপজেলা শাখা বিএনপি ও আগলা ইউনিয়ন পরিষদের চারবারের নির্বাচিত চেয়ারম্যান, আমি হারুন-অর রশিদ ওসমানী, সাবেক সাধারণ সম্পাদক নবাবগঞ্জ উপজেলা শাখা বিএনপি ও দোহার-নবাবগঞ্জ কলেজ ছাত্র সংসদের দুই বারের নির্বাচিত সাবেক ভিপি, এই মর্মে আপনাদের সদয় অবগতির জন্য জানাচ্ছি যে, ঢাকা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক খোন্দকার আবু আশফাক নবাবগঞ্জ উপজেলা শাখা বিএনপি ও উপজেলার অধীনস্ত বিভিন্ন ইউনিয়ন শাখা বিএনপির কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে স্বেচ্ছাচারী মনোভাব, স্বজনপ্রীতি ও অনিয়মের আশ্রয় দিচ্ছেন। বিএনপির ত্যাগী, পরীক্ষীত, বিভিন্ন সময়ে হামলা-মামলার শিকার এরকম নেতৃবৃন্দের বাদ দিয়ে তার অনুসারী অযোগ্য, অপেক্ষাকৃত নতুন ও আত্মীয়-স্বজনদের দিয়ে বিভিন্ন কমিটি গঠন করছেন। এতে একদিকে দল সাংগঠনিকভাবে দুর্বল হচ্ছে অন্যদিকে নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হচ্ছে। নবাবগঞ্জের বিভিন্ন ইউনিয়ন কমিটির কর্মী সম্মেলন তিনি নবাবগঞ্জে না করে ঢাকার মহাখালীস্থ রাওয়া ক্লাব ও তার ব্যক্তি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান বনানীস্থ প্রেসক্রিপশন পয়েন্টে করেছেন। আরো দু-একটি ইউনিয়ন কমিটির কর্মী সম্মেলন যাও নবাবগঞ্জে করেছেন তা আবার কারো নির্জন ইটভাটায় কিংবা কারো বাড়ির অন্দরমহলে। এ নিয়ে দৈনিক যুগান্তর পত্রিকায় সংবাদও প্রকাশিত হয়েছে । এ ধরণের কার্যক্রম আমাদের দলের জন্য লজ্জাজনক। ইতিপূর্বে নবাবগঞ্জ উপজেলা শাখা বিএনপির একটি আহবায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছে যেখানে আমাদের কাউকেই তিনি রাখেননি, এমনকি সে কমিটি তিনি অদ্যাবধি প্রকাশও করেননি। কমিটি নিয়ে এরকম লুকোচুরি খেলার যৌতিকতা কি তা আমাদের বোধগম্য নয়। উপরোক্ত নবাবগঞ্জ উপজেলা বিএনপির কর্মী সম্মেলন তিনি উপজেলা সদরে না করে তার গ্রামের বাড়ীতে একরকম চুপিসারে সেরে ফেলার চেষ্টা করেছেন। আপনারা জেনে অবাক হবেন যে,ঢাকা জেলা পিএনপির বর্তমান পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে তার আপন চার ভাই সহ বেশ কয়েকজন ঘনিষ্ট আত্মীয়দের পদ দিয়েছেন, এদের মধ্যে অনেকেই বিএনপির রাজনীতিতে কখনো সক্রিয় ভূমিকা পালন করেনি। এভাবে চলতে থাকলে দলের ত্যাগী নেতাকর্মীরা মানসিকভাবে দুর্বল হয়ে যাবে, আর দলের জন্য কাজ করার ক্ষেত্রেও উৎসাহ হারিয়ে ফেলবে। আমরা বর্তমানে একটি কঠিন সময় অতিক্রম করছি। চলমান আন্দোলন সংগ্রামকে বেগবান করার ক্ষেত্রে শক্তিশালী কমিটি গঠনের কোনো বিকল্প নেই। কিন্তু নবাবগঞ্জে এর উল্টোচিত্র।
আমরা আসাকরি আজকের এই সাংবাদিক সম্মেলনের মূল বিষয় বস্তু আপনারা স্ব-স্ব ইলেকট্রিক মিডিয়া ও প্রিন্ট মিডিয়ায় প্রকাশের মাধ্যমে বর্তমান জেলা বিএনপির স্বেচ্ছাচারিতা ও অনিয়ম নবাবগঞ্জ উপজেলা বিএনপির তৃণমূল নেতাকর্মী সহ কেন্দ্রীয় কমিটির দায়িত্বশীল নেতৃবৃন্দের অবহিত হওয়ার সুযোগ সৃষ্টি করে দিবেন। আমরা সর্বশেষ দৃপ্তকণ্ঠে বলতে চাই যে, যদি নবাবগঞ্জ উপজেলার বৃহৎ অংশ বাদ দিয়ে অনিয়মের মাধ্যমে কমিটি গঠন করা হয় তাহলে আমরাও আরেকটি পাল্টা কমিটি করতে বাধ্য থাকিবো বলে জানান।