সুন্দরগঞ্জে শফিউল’র দিন যায় গৃহকর্মে: চাকরিচ্যুত ৭ মার্চের ভাষণে

সুন্দরগঞ্জে শফিউল’র দিন যায় গৃহকর্মে: চাকরিচ্যুত ৭ মার্চের ভাষণে

ইউনুস আলী সরকার, সুন্দরগঞ্জ (গাইবান্ধা) প্রতিনিধি:

গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার তারাপুর গ্রামের শফিউল আলম দীর্ঘ ১৮ বছর আগে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ বাজিয়ে চাকরিচ্যুত হন। তখন থেকে অভাব-অনাটনে পরিবার-পরিজন নিয়ে দৈন্যতায় দিন কাটছেন। এখানো কোন কাজে আসেনি চাকরি ফিরে পাবার আবেদন।
জানা যায়, ২০০৪ইং সালের নভেম্বর মাসে রাঙ্গামাটি জেলার শিলছড়ি কাপ্তাই সদর দপ্তরে ২৪ আনসার ব্যাটালিয়নে কর্মরত অবস্থায় ব্যারাকে এককীত্ব সময় কাটাতে টেপ-রেকর্ডারে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্ঠে ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ বাজাতে দেখে তৎকালীণ সংশ্লিষ্ট অধিনায়ক হীরা মিয়া ক্ষিপ্ত হয়ে শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগ এনে শফিউল আলমকে বরখাস্থ করেন। তখন থেকে চাকরিচ‚্যত হয়ে বিভিন্ন দপ্তরে আবেদন করেও কোন কাজে আসেনি। এরপর ২০০৪ সালের ৭ ডিসেম্বর আনসার ব্যাটালিয়নের মহা-পরিচালক বরাবরে চাকরি ফিরে পেতে আপীল করেন শফিউল আলম। এরপর বিভিন্ন দপ্তরে আবেদন করেন তিনি। দীর্ঘ ১৮ বছর অতিক্রান্ত হলেও চাকরি ফিরে না পেয়ে মা ছকিনা বেগম, স্ত্রী জাহানারা বেগম, ছেলে জয়নুল আবেদীন জনী, মেয়ে রিক্তা আক্তার শেলী ও ছেলের স্ত্রী জেমু আক্তার, নাতী জুবায়েদ আহম্মেদ জুহিসহ পরিবারের ৭ জন সদস্যকে নিয়ে অভাব-অনাটনের মধ্য দিয়ে অতি কষ্টে দিনাতিপাত করছেন শফিউল আলম। উপজেলার তারাপুর ইউনিয়নের তারাপুর গ্রামের মৃত আবুল কাশেম ও ছকিনা বেগম দম্পত্তির ছেলে শফিউল আলম বর্তমানে তারাপুর ইউনিয়ন জাতীয় শ্রমিকলীগের সভাপতি ও তাঁর ছেলে জনী সুন্দরগঞ্জ পৌর যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে সরকারপন্থী বিভিন্ন কর্মসূচীতে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। এরআগে শফিউল আলম উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ন-সাধারণ সম্পাদক, যুবলীগসহ আওয়ামীলীগের বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনে কৃতিত্বের সঙ্গে বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালনে সক্রিয় ছিলেন। তাঁর মামা মরহুম এ্যাডভোকেট মোসলেম আলী মিয়া ১৯৭৯-৯৭ পর্যন্ত উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ছিলেন। বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের মনোনীত প্রার্থী হিসেবে নৌকা প্রতীকে ৩ বার জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্ব›িদ্বতা করেন। তৎকালীণ বর্ষিয়ান এ রাজনীতিকের পরিবারের সদস্য হওয়ায় বাংলাদেশ আওয়ামীলী’গ-ই তাঁর স্বজনদের রাজনৈতিক ঠিকানা বলে মন্তব্য করেন চাকরিচ্যুত শফিউল আলম।
আমাদের এ প্রতিবেদককে শফিউল আলম আরও জানান, তিনি শারিরীক ও মানসিকভাবে কর্মপালনে সক্ষম রয়েছেন। পারিবারিকভাবে আওয়ামীপন্থী হওয়ায় তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্ঠে টেপ রেকর্ডারে ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ বাজাতে ভালবাসতেন। পক্ষান্তরে ২০০৪ সালে উক্ত ২৪ আনসার ব্যাটালিয়ন (ব্যারাক) অধিনায়ক হিরা মিয়া ছিলেন তৎকালীন ৪ দলীয় জোট সরকারপন্থী। তাই তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে শফিউল আলমকে চাকরিচ্যুত করেন। বুধবার সংশ্লিষ্ট দপ্তরের পরিচালক, উপ-পরিচালক (মনিটরিং)সহ বিভিন্ন উচ্চ পর্যায়ের কর্তার কাছ থেকে মোবাইল ফোনে জানতে চেয়ে কল করা হলে পাওয়া যায়নি। পরে কথা বলতে চেয়ে সংশ্লিষ্ট নম্বরগুলোতে ক্ষুদেবার্তা পাঠানো হলেও কোন সারা মেলেনি।

 

আপনি আরও পড়তে পারেন