দিনমজুর কৃষকের জমির গমক্ষেত ট্রাক্টরের হাল দিয়ে এক প্রভাবশালী দখলদার

দিনমজুর কৃষকের জমির গমক্ষেত ট্রাক্টরের হাল দিয়ে এক প্রভাবশালী দখলদার
জসীমউদ্দীন ইতি (ঠাকুরগাঁও) প্রতিনিধি : বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার উত্তর পাড়িয়ার সীমান্তবর্তী ৩৮৮/১এস  পিলার বরাবর খুটামনি বালুচর নামক স্থানের ৩০ শতক খাস জমির গমক্ষেত ট্রাক্টরের হালচাষ দিয়ে ভেঙ্গে নষ্ট করে দিয়েছে নাসিরল নামের এক প্রভাবশালী দখলদার। চলতি মৌসুমে ট্রাক্টরের হালদিয়ে গমক্ষেত ভেঙ্গে নষ্ট করে দেয়ার এমন অনাকাঙ্খিত ঘটনার জন্য এলাকায় নিন্দা ও প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে। এ ঘটনায় প্রতিকার ও সু-বিচার চেয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা সহকারী কমিশনার(ভূমি) এবং সংশ্লিষ্ট চেয়ারম্যান বরাবরে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী কৃষক  গোলাম রব্বানী।
জানা গেছে, উপজেলার উত্তর পাড়িয়া সরাগন্ধী গ্রামের গোলাম রব্বানী নামে এক দিনমজুর, প্রন্তিক কৃষক উত্তর পাড়িয়া মৌজার জেল নং-১,দাগ নং-২ খাস খতিয়ানের ৩০ শতক জমির ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের নাগর নদীর  পার্শ্ববর্তী ভূমিতে বালুচর সরিয়ে দীর্ঘদিন যাবৎ চাষাবাদ সহ ভোগ দখল করে আসছিল। গত ১২ ডিসেম্বর সোমবার বিকালে ওই এলাকার উত্তর পাড়িয়ার বঙ্গভিটা গ্রামের মৃত আব্দুল রহমান ভলার ছেলে নাসিরুল ইসলাম নামে এক প্রভাবশালী ভূমি দখলদার তার রেকর্ড ভক্ত জমি দাবি করে ট্রাক্টরের হাল দিয়ে ওই জমির চলতি মৌসুমের গমক্ষেত ভেঙে নষ্ট করে ওই জমি দখলে নেওয়ার অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে।
ভুক্তভোগী কৃষক গোলাম রব্বানী জানান, আমার দিনমজুরীর অতি কষ্টের ক্রয় করা টাকায়  গত ১২ ডিসেম্বর সোমবার বিকালে ওইদিন  ট্রাক্টরের হালদিয়ে  চলতি মৌসুমে বপন করা সার, কীটনাশক, উচ্চ ফলনশীল বীজের গমক্ষেত ভেঙে নষ্ট করার ঘটনায় বাধা দিতে গেলে নাসিরুল তার ছেলে হারুন ও পরিবারের অন্যান্য লোকজন সহ আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে এবং এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার হুমকি দেন। আমি একজন গরিব দিনমজুর, প্রন্তিক কৃষক, আমার অসুস্থ্য বৃদ্ধা  মাতা, স্ত্রী ও দুই কন্যা সন্তানকে  নিয়ে  অতি কষ্টে এবং দারিদ্রতাই দিনযাপন করছি। ওই ৩০ শতক নাগর নদীর খাস জমির বালুচর সরিয়ে গত ৪,৫ বছর যাবত বিভিন্ন ফসল ফলিয়ে চাষাবাদ করে দিনযাপন করে আসছিলাম। কিন্তু হঠাৎ সেদিন এলাকার প্রভাবশালী মোড়ল নাসিরুল ইসলাম তার লোকজন  আমার উক্ত জমির গমক্ষেত  ট্রাক্টরের হালচাষ দিয়ে ভেঙ্গে আমার দারুনভাবে আর্থিক ক্ষতি করে আমাকে পথে বসিয়ে দিয়েছে। মর্মে বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সহকারী কমিশনার(ভূমি) এবং পাড়িয়া ইউপি’র চেয়ারম্যান বরাবর সু-বিচারের অভিযোগ দায়ের করি।
অভিযোগ পেয়ে বিভিন্ন জাতীয় ও স্থানিয় দৈনিকের প্রতিনিধিগণ গত ১৪ ডিসেম্বর বুধবার দুপুরে খুটামনি বালুচর নামক স্থানের ৩০ শতক খাস জমির গমক্ষেত ট্রাক্টরের হালচাষ দিয়ে ভেঙ্গে নষ্ট করার ঘটনা জরেজমিন পরিদর্শন শেষে অভিযুক্ত নাসিরুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ ও কথা বলার জন্য তার বাড়ীর উদ্দেশ্যে যাওয়ার সময়  গ্রামের ইউপি রাস্থায় স্থানিয় গণমাধ্য কর্মীদের সাখে থাকা ওই এলাকার তহিরুল ইসলাম ও ভুক্তভোগী কৃষক গোলাম রব্বানীসহ সকলকে পথ রোধ করে নাসিরুল ও তার ছেলে হারুনসহ তার পরিবারের লোকজন বেধড়ক মারপিটে আহত ও রক্তাক্ত করে। মারপিটের ঘটনা শেষে নাসিরুল জানান, ওই জমি আমার রেকর্ডভুক্ত মালিকানায় দাবি করে ট্রাক্টরের হালচাষ দিয়ে গমক্ষে ভেঙ্গে দিয়েছি এবং সে আমার নিকট বার্ষিক ভাবে বর্গাচাষ করে খেত।
এব্যপারে বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা সহকারী কমিশনার(ভূমি) বিপুল কুমার লেখিত অভিযোগ পেয়ে, পাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ফজলে রাব্বী রুবেলকে পাড়িয়া ইউনিয়ন ভূমি সহকারী তহসিলদার ও সরকারী সার্ভেয়ারকে সাথে নিয়ে ওই উত্তর পাড়িয়া মৌজার জেল নং-১, দাগ নং-২ খাস খতিয়ানের ৩০ শতক জমি যদি খাস হয়ে থাকে, তাহলে ভুক্তভোগী কৃষক গোলাম রব্বানীকে ওই জমি চাষাবাদ করে ভোগদখলের অনুমতিসহ বপনকৃত সার, কীটনাশক, বীজের ক্ষতিপূরণ। আর রেকর্ডভুক্ত প্রকৃত মালিকানা হলে ভূমির মালিককে বুঝিয়ে দেওয়ার বিশেষভাবে নির্দেশনা দেন।

আপনি আরও পড়তে পারেন